নগরীর খালিশপুরে আলোচিত মেধাবী ছাত্র পুচন হত্যায় ৫ জনের মৃত্যুদন্ড

স্টাফ রিপোর্টারঃ খুলনা নগরীর খালিশপুর এলাকার আলোচিত মেধাবী ছাত্র জাহিদ হোসেন পুচন হত্যা মামলায় ৫ জনকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদ- প্রদান করা হয়েছে। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন খালিশপুর বঙ্গবাসী মোড়ের কাইয়ুম আনসারীর ছেলে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মোঃ আব্বাস আনসারী(৪০), ৫নং মাছঘাটের বাসিন্দা মৃতঃ আঃ লতিফ ফারাজির ছেলে মোঃ নশু ফরাজী(৩৬), ফরিদপুর জেলার শালতা থানার যদুনন্দি গ্রামের বাসিন্দা আঃ রাজ্জাকের ছেলে মোঃ রিয়াজ(২৫), বঙ্গবাসী কামালের বস্তির বাসিন্দা মনোয়ার হোসেনেরে ছেলে মোঃ নাদিম(৩০) ও বঙ্গবাসী মোড়ের সোলেমানের ছেলে সুলতান ওরফে জব্বার ওরফে গব্বার (২৪)। এছাড়া একই আসামিদের বিরুদ্ধে মামলার আরেক ভিকটিম নিহত জাহিদের বড় ভাই জাবেদকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যা চেষ্টা ও আহত করার অভিযোগে দন্ডবিধি ৩২৪ ও ৩০৭ ধারায় ৩ বছর ও ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও প্রত্যেককে আলাদাভাবে ৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়। সোমবার খুলনার জননিরাপত্তা বিঘœকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ জুয়েল রানা এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের উচ্চমান বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক শাহিন। এছাড়া এ মামলায় সাত আসামিকে খালাস প্রদান করেছেন আদালত। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন, মো. ইব্রা আর আলাম আসিফ, মো. রানা হোসেন, সুলতান ওরফে গব্বার, পাতলা সাগর, মো. ওমর ফারুক ওরফে আরিফ, মো. মেহেদী হাসান ওরফে প্যাকেট মেহেদী ও মো. জাহিদুল ইসলাম জাহিদ। মামলা চলাকালীন সময়ে ২৬ জনের মধ্যে ১৩ জন আদালতে স্বাক্ষ্য প্রদান করেন। এজাহার সূত্রে জানা গেছে, খুলনা নগরীর খালিশপুর বঙ্গবাসী এলাকার বাসিন্দা সাব্বির হোসেনের বড় ছেলে জাবেদের এলাকার কতিপয় দুস্কৃতির সাথে পুকুরে মাছ ব্যবসা নিয়ে বিরোধ ছিল। ২০১৬ সালের ১৩ ডিসেম্বর তিনি বঙ্গবাসী মোড় এলাকার বাসা থেকে খালিশপুর চিত্রালী বাজারের উদ্দেশ্যে বের হন। পথিমধ্যে বঙ্গবাসী মোড় জনৈক জাহাঙ্গীরের চালের দোকানের সামনে পৌঁছালে পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে তার ওপর আক্রমণ করে। এ ঘটনায় তিনি গুরুতর আহত হন। আক্রমণের ঘটনা জানতে পেরে জাবেদের দু’ভাই মোঃ সুমন ও জাহিদ ওরফে পুচন ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এ সময় এ মামলার আমাসি আব্বাস আনছারি ও জব্বার জাবেদের ছোটভাই মোঃ সুমনকে জাপটে রাখে এবং সন্ত্রাসীরা তার মেজভাই পুচনকে এলোপাতাড়ি ভাবে কোপাতে থাকে। পরবর্তীতে জাহিদ চিৎকার করতে থাকলে ঘটনাস্থলে এলাকাবাসী চলে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে সেখানকার চিকিৎসক জাহিদকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পরের দিন নিহতের ছোটভাই মোঃ সুমন ১২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনের নাম উল্লেখ করে খালিশপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। ২০১৮ সালের ২৬ আগস্ট পিবিআই পুলিশ পরিদর্শক মোঃ বাবলুর রহমান খান ১২ জন আসামির নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ ঘটনার প্রায় ৭ বছর ১০ মাস পর রায় ঘোষণা করা হয়েছে।