সম্পাদকীয়

নগরবাসীর মুক্তি মিলবে কবে?

রাজধানীতে অসহনীয় যানজট

যানজটের কারণে রাজধানীবাসীর জীবন অতিষ্ট। বিভিন্ন গবেষণায় জানা যায়, ঢাকার রাস্তায় গাড়ি চলাচলের গড় গতি নেমে এসেছে ঘণ্টায় ৪.৮ কিলোমিটারে, যা একজন সক্ষম মানুষের হাঁটার গতির চেয়েও কম। এর ফলে মানুষের দুর্ভোগ যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে অর্থনৈতিক ক্ষতি। এই অবস্থায় সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর লক্ষ্যে বিশেষ উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। মাসখানেক ধরে চলছে জোরদার অভিযান। এ কাজে ট্রাফিক পুলিশকে সহযোগিতা করছে যৌথ বাহিনী। গাড়ির ফিটনেস, চালকের লাইসেন্সসহ কাগজপত্রের অনিয়ম, সড়কের শৃঙ্খলাভঙ্গসহ বিভিন্ন অপরাধে যানবাহন জব্দ, জরিমানা ও মামলা করা হচ্ছে। রাজধানীতে প্রতিদিন অর্ধকোটি টাকার বেশি জরিমানাই করা হচ্ছে। অক্টোবর মাসে ট্রাফিক বিভাগ ১৪ কোটি ২৮ লাখ ৬৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে। গত ১ নভেম্বর রাতে খিলক্ষেত থানাধীন ৩০০ ফুট মহাসড়কে উত্তরা আর্মি ক্যাম্প, ট্রাফিক পুলিশ ও খিলক্ষেত থানার পুলিশ মিলে অভিযান শুরু করে। এতে চারটি গাড়ি জব্দ করা হয়। মামলা করা হয় ১১৯টি। আর জরিমানা আদায় করা হয় দুই লাখ ৭০ হাজার ৮০০ টাকা। আইএসপিআর থেকে জানানো হয়, সেনাবাহিনীর এ ধরনের কঠোর অবস্থান অব্যাহত থাকবে। ঢাকায় অসহনীয় যানজটের জন্য বিশেষজ্ঞরা মূলত দায়ী করছেন রাস্তায় ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যানবাহন, ছোট বা ব্যক্তিগত গাড়ির আধিক্য, মাত্রাতিরিক্ত মোটরসাইকেল, রাস্তায় নিয়ম-কানুন না মানা, সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি এবং উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের জন্য সড়ক বা সড়কের একাংশ বন্ধ থাকা, বাসগুলো যত্রতত্র দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানামা করানো, রাস্তায় অবৈধ পার্কিং, অযান্ত্রিক যানবাহনের এলোমেলো চলাচল ইত্যাদিকে। বর্তমানে তার সঙ্গে যোগ হয়েছে ব্যাটারিচালিত রিকশার দৌরাত্ম্য। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ফুটপাত দখল, যত্রতত্র পার্কিং, রাস্তা আটকে বাসে যাত্রী তোলাসহ এ ধরনের অনিয়মগুলো দূর করা গেলে যানজট অনেকাংশেই কমে আসবে। সেই সঙ্গে ফিটনেসহীন ও অবৈধ যানবাহন, লাইসেন্সহীন চালকের ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। এগুলো শুধু যানজট নয়, দুর্ঘটনারও কারণ। আমরা আশা করি, বর্তমান উদ্যোগ যানজট অনেকাংশেই কমাতে সক্ষম হবে। তবে যানজট নিরসনে দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ গ্রহণ করে নগরবাসীকে এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে হবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button