সম্পাদকীয়

বাজার নিয়ন্ত্রণ জোরালো করুন

বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম

নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ে সৃষ্ট অস্থিরতা কোনোভাবেই কাটছে না। সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে নি¤œবিত্ত ও স্থির আয়ের মধ্যবিত্তের জীবন রীতিমতো দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। পরিবারের সদস্যদের সাধারণ পুষ্টির সঙ্গেও তাদের আপস করতে হচ্ছে। সরকার বাজার স্থিতিশীল রাখতে অনেক চেষ্টাই করছে, কিন্তু সরকারের সেসব চেষ্টা খুব একটা কাজে আসছে না। ভোজ্য তেলের দাম স্থিতিশীল রাখতে গত ১৭ অক্টোবর সয়াবিন ও পাম তেলের মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট ১৫ শতাংশ কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। এ ছাড়া উৎপাদন ও ব্যবসা পর্যায়ে সয়াবিন ও পাম তেলের ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অথচ এক মাসের ব্যবধানে লিটারপ্রতি খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। এখন খোলা সয়াবিন তেল প্রতি কেজি ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকায় এবং প্রতি লিটার ১৭৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এক মাস আগে খোলা সয়াবিন তেলের লিটারপ্রতি দাম ছিল ১৫০ টাকা। কয়েক বছর ধরেই বাজারে একটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, আর তা হলো পবিত্র রমজান মাস শুরুর দু-তিন মাস আগে থেকেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়া। দফায় দফায় দাম বাড়তে থাকে। আগামী মার্চ মাসের প্রথমার্ধেই শুরু হবে রমজান মাস। বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধারণা, সয়াবিন তেলের দাম হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া সেই প্রক্রিয়ারই অংশ। মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিতে সরকার পেঁয়াজ, আলু, ভোজ্য তেল, চিনি, ডিম ও চাল—এই ছয়টি খাদ্যপণ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে শুল্ক কমিয়েছে। এতে রাষ্ট্রের রাজস্ব আয় কমেছে, কিন্তু ভোক্তারা তাতে কি লাভবান হয়েছে? কোনোটিরই দাম কমেনি, বরং কোনো কোনোটির দাম আরো বেড়েছে। অন্তর্র্বতী সরকারের খাদ্য উপদেষ্টা বলেছেন, তিনি নিজেই বাজার করেন। মূল্যবৃদ্ধির কারণে তিনি নিজেও চাপে আছেন। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাজারে এত বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে যে শুল্ক হ্রাস করাসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়ার পরও নিত্যপণ্যের দাম কমছে না। শুধু ভোজ্য তেল নয়, বাজারে প্রায় প্রতিটি খাদ্যপণ্যের দামই অত্যধিক। মানুষ কতটা অসহায়, তা টিসিবির ট্রাকের সামনে ক্রমবর্ধমান ভিড় থেকেও কিছুটা অনুমান করা যায়। বাজারে হস্তক্ষেপ না বাড়ালে উত্তরোত্তর পরিস্থিতি খারাপের দিকেই যাবে। ভোক্তার স্বার্থ দেখার জন্য সরকারের বিভিন্ন সংস্থা রয়েছে। তাদের আরো গতিশীল হতে হবে, কর্মকা- আরো বাড়াতে হবে। শুল্কছাড়ের সুবিধা কোথায় যাচ্ছে, তা খুঁজে বের করতে হবে। নানা ধরনের সিন্ডিকেটবাজি ও অদৃশ্য কারসাজি বন্ধ করতে হবে।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button