স্থানীয় সংবাদ

সরকারের প্রধান দায়িত্ব রাষ্ট্রসংস্কার করা যাতে বাংলাদেশে আর কখনোই কোন স্বৈরাচার জন্ম নিতে না পারে

# ইসলামী আন্দোলনের বিশাল গণ সমাবেশে আমীর মুফতী রেজাউল করিম #

স্টাফ রিপোর্টার ঃ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করিম পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান দায়িত্ব হলো রাষ্ট্রসংস্কার করা; যাতে করে আর কখনোই কোন স্বৈরাচার জন্ম নিতে না পারে। আমরা লক্ষ্য করেছি যে ইতিমধ্যে সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছে, এখন এই কমিশনগুলোকে গতিশীল ও জনসম্পৃক্ত করতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলোকে সম্পৃক্ত করুন। কারণ, তারাই দীর্ঘমেয়াদে জনমত ধারণ করেছে এবং আগামীতেও করবে। তাই সক্রিয়ভাবে রাজনৈতিক দল, উলামা শ্রেণী এবং বিভিন্ন পেশা ও স্তরের জনমানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। সংস্কার নিয়ে ইতোমধ্যেই মানুষের মধ্যে কানাঘুষা তৈরি হয়েছে। এই কানাঘুষা সংস্কারকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তাই এখনই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, বিগত একশ দিনের বিভিন্ন নিয়োগ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তাদের কারো কারো বিরুদ্ধে বিগত স্বৈরাচারের সুবিধাভোগী হওয়া ও জনমানুষের বোধ বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। আবার কারো ব্যাপারে বিপ্লবের তেমন কোন অবদান না থাকা সত্বেও বড় পদে পদায়িত করার অভিযোগ আছে। এগুলো মানুষকে ক্ষুদ্ধ করে, আপনাদের বিবেচনাবোধ ও বিপ্লবের প্রতি আপনাদের দায়বোধ নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করে। তাই যে কোন নিয়োগে দক্ষতা ও যোগ্যতার সাথে সাথে বিপ্লবে তার ভূমিকা প্রধান বিবেচ্য হিসেবে ধার্য করতে হবে এবং প্রতিটি নিয়োগের যুক্তি জনতার সামনে উপস্থাপন করতে হবে।
বিশেষ করে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত চরম বিতর্কিত উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে জনগণ মেনে নেয়নি। এতএব, পতিত স্বৈরাচারের বেনিফিশিয়ারী বিকৃত মানসিকতার সমাজ বিধ্বংসী নাটক-সিনেমা নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে দ্রুত উপদেষ্টা পরিষদ থেকে প্রত্যাহার করতে হবে, এটাই দেশবাসী প্রত্যাশা করে। গতকাল সোমবার (১৮ নভেম্বর) দুপুর ২ টায় নগরীর ডাকবাংলা সোনালী ব্যাংক চত্তরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর ও জেলা আয়োজিত দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার ও অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত গণহত্যার বিচার, বন্ধকৃত সকল মিল কলকারখানা চালু, সংখ্যানুপাতিক (পি আর) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ইসলামী সমাজ ভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে – আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। পীর সাহেব চরমোনাই আরো বলেন, সাধারণ মানুষ জটিল রাজনীতি বোঝে না। তারা তাদের খাদ্যের নিশ্চয়তা চায়, জীবনের নিরাপত্তা চায়। কিন্তু এই দুই ক্ষেত্রেই জনতার অভিজ্ঞতা ভালো না। দ্রব্যমূল্য বহু আগেই নাগালের বাইরে চলে গেছে। সংসার চালাতে সংগ্রাম করতে হচ্ছে আরো আগে থেকেই। স্বৈরাচারের পতনের পরে মানুষ ভালো কিছু আশা করেছিলো। কিন্তু বাস্তবতা হলো, কোন কোন ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে গেছে। এটা মানুষকে হতাশ করেছে। সেজন্য বলবো, যে কোন মূল্যে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং অবিলম্বে খুলনার বন্ধকৃত সকল মিল কলকারখানা চালু করে শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও খুলনা মহানগর সভাপতি হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়াল এর সভাপতিত্বে ও নগর সহ সভাপতি শেখ মোঃ নাসির উদ্দিন, নগর সেক্রেটারি মুফতী ইমরান হুসাইন, জেলা সেক্রেটারি হাফেজ আসাদুল্লাহ আল গালীব এর যৌথ সঞ্চলনায় আয়োজিত গণসমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা শোয়াইব হুসাইন, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ আমিনুল ইসলাম, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল মুফতী মানসুর আহমেদ সাকী, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সভাপতি নুরুল বশর আজিজী। গণসমাবেশে বিশেষ অতিথির আলোচনায় ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওঃ ইউনুস আহমাদ বলেন, পতিত হাসিনা সরকার জাতির সাথে যা করেছে তার বিচার না হলে মানবতার সাথে অপরাধ করা হবে। কিন্তু এই বিষয়ে তেমন কার্যকর কোন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। আপনাদের সরকার গঠন হওয়ার পরেও ফ্যাসিস্ট রিজিমের মন্ত্রী, এমপি, দালাল পাবলিক সার্ভেন্ট, এলাকার নেতা, পাতি নেতা, মাস্তানদের অনেকেই দেশ ছেড়ে পালানোর, সুযোগ পেয়েছে। অনেকে দেশেই আত্মগোপনে থেকে জনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। কেন তাদের পালানোর সুযোগ দেয়া হলো, কেন দেশে থাকা অপরাধীদের আটক করা হচ্ছে না, এই প্রশ্ন কোটি জনতার। আমরাও এই প্রশ্ন জোড়ালোভাবে উপস্থাপন করছি। বিনয় ও হুশিয়ারির সুরে বলছি যে, কোন ধরণের দয়া/আপোষ করা ছাড়াই স্বৈরাচারের বিচার করুন। যারা বিগত ১৫টি বছর ধরে জনগণের অর্থ লুটে খেয়েছে, যারা নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছে তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনুন। এ ক্ষেত্রে কোন অবহেলা বা আপোষ দেশবাসী কোন দিন ক্ষমা করবে না। যারা জনতার রক্তকে অবহেলা করবে তারাও খুনি ও ফ্যাসিস্টের পুনর্বাসনের জন্য দায়ী হিসেবে বিবেচিত হবেন। যুগ্ন মহাসচিব মাওঃ গাজী আতাউর রহমান অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে করে বলেন, স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫৩ বছরে জনতার প্রত্যাশা পূরণ হয়নি আপনাদের ওপর জনতার আকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে। কোনে বিশেষ মহল কিংবা কোনো বিশেষ দলকে সুবিধা জাতির সাথে প্রতারণা করবেন না। দেশের সিংহভাগ রাজনৈতিক দলের মতামতের মর্যাদা দিয়ে আগামি সংসদ নির্বাচনে (পি আর) পদ্ধতি চালু করুন। সময়কে ধারণ করে (পি আর) পদ্ধতি চালুর মাধ্যমে নির্বাচনে কালো টাকার ছড়াছড়ি বন্ধ, নমিনেশন বাণিজ্য বন্ধসহ রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় রোধে এগিয়ে আসুন। আপনারা রাষ্ট্রে একটি আমূল পরিবর্তন আনুন। প্রয়োজনীয় সংস্কার করুন বিনা ভয়ে। কোনো ব্যক্তি, দল বা গোষ্ঠী যেন আপনাদের দ্বারা বিশেষ কোনো সুবিধা না পায় সেদিকে সতর্ক ও সজাগ থাকুন। ফ্যাসিবাদের ও মাফিয়াদের বিরুদ্ধে আমাদের শহীদের রক্ত যেন বৃথা না যায়, শহীদের রক্তের সাথে যেন গাদ্দারি করা হয় সেদিকে নজর রাখুন। গণসমাবেশে বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা জেলা সভাপতি অধ্যাপক মাওঃ আব্দুল্লাহ ইমরান, দারুল উলুম মাদ্রাসার মুহতামিম মাওঃ মুসতাক আহমেদ, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ খুলনা মহানগর সভাপতি মুফতী গোলামুর রহমান, জেলা সভাপতি মাওঃ শেখ আব্দুল্লাহ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা নগর সহ-সভাপতি মুফতী আমানুল্লাহ, আলহাজ্ব আবু তাহের, জেলা সহ-সভাপতি আলহাজ জাহিদুল ইসলাম, মাওঃ আসাদুল্লাহ হামিদী, প্রভাষক আবু গালিব, এস এম রেজাউল করিম, মাওঃ দ্বীন ইসলাম, আলহাজ্ব শফিকুল ইসলাম, মাওঃ সাইফুল ইসলাম, মাওঃ আব্দুস সাত্তার, মোঃ মঈন উদ্দিন, মাওঃ আশরাফুল ইসলাম, এইচ এম আরিফুর রহমান, মোঃ হুমায়ুন কবীর, মোহা. নাজমুল হুদা, মাওঃ হাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ, মাওঃ মাহবুবুল আলম, মোঃ আবুল কাশেম, মাওঃ হারুন অর-রশিদ, মাষ্টার মঈন উদ্দিন ভূইয়া, মাস্টার জাফর সাদেক, এ্যাডভোকেট মোঃ কামাল হোসেন, মোঃ আক্তার হোসেন, মোহা. আলী, আব্দুর রহমান, আলহাজ্ব আমজাদ হোসেন, মুফতি ইলিয়াস হোসেন মাঞ্জুরী, মাওঃ মাসুদুর রহমান, মাওঃ ফজলুল হক ফাহাদ, মাওঃ নাসিম উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা জি, এম কিবরিয়া, মোহাম্মদ রোশন আলী, সরোয়ার হোসেন বন্দ, আবু দাউদ, আব্দুস সালাম, শফিকুল ইসলাম, হাফেজ আঃ লতিফ, মাওঃ ওমর আলী, মোহা. নাজমুস সাকিব, মোল্লা রবিউল ইসলাম তুষাার, মোঃ কবির হোসেন হাওলাদার, আবু রায়হান, মোঃ এনামুল হাসান সাঈদ, মোঃ গাজী মিজানুর রহমান, গাজী ফেরদাউস সুমন, মাওঃ ইলিয়াস হোসেন, মাওঃ আবু সাঈদ, শেখ মারুফ রহমান, মোঃ কামরুল ইসলাম, মোঃ জাহিদুল ইসলাম টুটুল মোড়ল, মোঃ সাইফুর রহমান, মোঃ বাদশাহ খান, মোঃ ইউসুফ আলী, জামিল আহমেদ, মোঃ আশরাফ আলী, কারী আব্দুস সামাদ, হাফেজ কারীমুল ইসলাম, হাফেজ জাহিদুল ইসলাম, মাওঃ আব্দুল মালেক, মাওঃ আব্দুল্লাহ আল মাসুম, মোঃ তরিকুল ইসলাম কাবির, আলফাত হোসেন লিটন, কাজী তোফায়েল, আব্দুস সালাম, মমিনুল ইসলাম নাসিব, মোঃ শহিদুল ইসলাম সজিব, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের নগর সভাপতি এস এম আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা ইলিয়াছুর রহমান, ইব্রাহিম খান, মোহাম্মদ রেজাউল করিম, ইসলামী যুব আন্দোলনের নগর সভাপতি মুহা. ইমরান হোসেন মিয়া, জেলা সভাপতি মুফতি ফজলুল হক, সাইফুল্লা খালিদ নাজমুল, মুহা. আব্দুস সবুর, মোঃ মামুনুর রশিদ, মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের নগর সভাপতি মুহা. আব্দুল্লাহ আল মামুন, জেলা সভাপতি মোঃ ফরহাদ মোল্লা, মাহদী হাসান মুন্না, মোহাম্মদ নাঈমুল ইসলাম, মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, নগর সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আল গালীব, জেলা সাধারণ সম্পাদক মোঃ শরিফুল ইসলাম, মোঃ বনি আমিন, মোঃ হাবিবুল্লাহ মেসবাহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। সমাবেশে দাকোপ ও ডুমুরিয়া থেকে ৫০ জন হিন্দু পীর সাহেব চরমোনাইযরে হাতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে যোগদান করেন।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button