সম্পাদকীয়

মানবদেহে ছড়িয়ে পড়ছে অ্যানথ্রাক্স, সতর্ক হতে হবে

অ্যানথ্রাক্স গবাদি পশুর মারাত্মক সংক্রামক এক রোগ। যা ছড়ায় মানবদেহেও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত পশুর মাংস, রক্ত ও মৃত পশু যেখানে- সেখানে ফেলে রাখার মাধ্যমে এর জীবাণু মাটিতে ছড়িয়ে পড়েছে। আর এ জীবাণু মাটিতে থাকে ৫০ থেকে ৬০ বছর। ফলে সেই মাটিতে গজানো ঘাস খেয়েও গবাদিপশু অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হচ্ছে। লোকসানের আশঙ্কায় অনেক সময় অসুস্থ পশু জবাই করছেন অনেকেই । আর সেই পশুর রক্ত ও মাংস নাড়াচাড়া করে অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন অ্যানথ্রাক্সে। মূলত অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত পশুর মাংস কাটার সময় মানুষের মধ্যে অ্যানথ্রাক্স ছড়ানোর সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। হাতে, পায়ে অথবা মুখে ছোট ছোট ফোড়া তৈরি হয়ে ক্ষতের সৃষ্টি হচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, অসুস্থ পশুর রক্ত মাংসের স্পর্শে অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হলেও এ রোগে মৃত্যুর আশঙ্কা নেই। তবে তৈরি হয় শারীরিক নানা জটিলতা। মানুষের অ্যানথ্রাক্স মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে – একধরণের অ্যানথ্রাক্স হয় পরিপাকতন্ত্রে, আরেক ধরনের অ্যানথ্রাক্স শরীরের বাইরের অংশে সংক্রমণ ঘটায়। পরিপাকতন্ত্রে অ্যানথ্রাক্স জীবাণুর সংক্রমণ হলে সাধারণত হালকা জ্বর, মাংসপেশীতে ব্যাথা, গলা ব্যথার মত উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তবে বাংলাদেশে যে অ্যানথ্রাক্স দেখা যায় তা শরীরের বাইরের অংশে প্রভাব ফেলে। এধরণের অ্যানথ্রাক্সে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফোঁড়া বা গোটা হয়ে থাকে। ফোঁড়া ঠিক হয়ে গেলে হাতে, মুখে বা কাঁধের চামড়ায় দাগ দেখা যেতে পারে। যে-সব এলাকায় গবাদি পশু পালন করা হয় সেসব এলাকাতেই সাধারণত অ্যানথ্রাক্সের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। অ্যানথ্রাক্স গরু, ছাগল, মহিষ – এই ধরনের প্রাণীর মধ্যে প্রথম দেখা যায়। এসব প্রাণীর মাধ্যমেই অ্যানথ্রাক্স মানুষের মধ্যে ছড়ায়। অ্যানথ্রাক্স মূলত তিন ধরনের হয়ে থাকে। এর মধ্যে দুই ধরনের অ্যানথ্রাক্স নিঃশ্বাসের মাধ্যমে ছড়ায় যা পেটের ভেতর গিয়ে প্রাণহানির কারণ হতে পারে। অ্যানথ্রাক্স থেকে মুক্ত থাকতে হলে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। যাদের গরু, মহিষ, ছাগলের মত গবাদি পশু রয়েছে, তারা যেন তাদের পশুকে নিয়মিত অ্যানথ্রাক্সের টীকা দেন তা নিশ্চিত করতে হবে। আর পশুর যদি অ্যানথ্রাক্স হয়েই যায়, সেক্ষেত্রে পশুকে দ্রুত মাটির নিচে পুঁতে ফেলা প্রয়োজন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button