খুলনায় আলোচিত যুবলীগ নেতা সাগরকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়!
দু’ বছর পর স্ত্রী’র অভিযোগ
হত্যার নেপথ্যে শেখ বাড়ি!
লাশ তুলে পোষ্ট মর্টেম করার দাবি
স্টাফ রিপোর্টার : সড়ক দুর্ঘটনা নয়, স্বামীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ করেছেন খুলনা মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক মনিরুজ্জামান সাগরের স্ত্রী। হত্যার দু’ বছর পর তিনি অভিযোগ করেন শেখ বাড়ির বিরুদ্ধে কথা বলায় সাগরকে হত্যার পর সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দিয়েছেন শেখ সোহেল ও তার লোকজন। এতদিন ভয়ে কিছু বলার সাহস করেননি। লাশের ময়নাতদন্তের দাবি সকলের। পুলিশ বলছে- আবেদন পেলে তারা আইনি দিক খতিয়ে দেখবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারী সকালে বাসা থেকে বের হন মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক মনিরুজ্জামান সাগর। কিছুক্ষণ পর পরিবারের কাছে খবর আসে- সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন সাগর। পরে পরিবারকে না জানিয়ে শেখ সোহেল ও তার লোকজন তড়িঘড়ি করে নিয়ে যায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পরে ঢাকা নেওয়ার পর মৃত্যু হয় সাগরের। ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করা হয়। কিভাবে- কখন- কোথায়- সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে জানতে পারেননি স্ত্রী। তিনি দাবি করেন- তার স্বামীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত মনিরুজ্জামান সাগরের স্ত্রী আফরোজা সুলতানা রুনু বলেন, আমার দেখার মতো কেউ নেই। আমার বাবা নেই, ভাই নেই, শশুর নেই। আমার স্বামী বেঁচে থাকতে আমি একেবারে ঘরোয়া ছিলাম।
মারামারির কিছু শুনিনি আমাকে বললো এক্সিডেন্ট। আমি প্রথম ওইটুকু শুনেছি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনার সমন্বয়ক সাজেদুল ইসলাম বাপ্পি শেখ পরিবারের সকলকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে বলেন, আপনারা আইনের আশ্রয় নিন, থানায় জান- মামলা করেন।
তিনি বলেন, সাগরের লাশ উঠিয়ে পোষ্ট মর্টেম করা হোক ও খতিয়ে দেখা হোক- এটা স্বাভাবিক মৃত্যু না, মেরে ফেলা হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার দাবি করছি।
খুলনার বিএনপি নেতা এসএম আরিফুর রহমান মিঠু বলেন, যখন ওই দুর্ঘটনা ঘটেছিলো তখন আমরা প্রথমে জেনেছিলাম উনাকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু মুহুর্তের মধ্যে সেই সত্যি ঘটনাকে আড়াল করা হলো। বলা হলো- সে এক্সিডেন্ট করেছে। আমরা কিন্তু দাবি তুলেছিলাম উনার পোষ্ট মর্টেম করা হোক। অপশক্তির কারনে তার পোষ্ট মর্টেম করা হলো না।
এ বিষয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) শেখ মনিরুজ্জামান মিঠু বলেন, জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি সাপেক্ষে তার লাশ বিনা ময়নাতদন্তে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে এটা বেশ আগের ঘটনা। আমি তখন এখানে দায়িত্বে ছিলাম না। এটা ওই সময় যারা কর্মরত ছিলেন শুধু তারা বলতে পারবেন।
আবার রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা বলছেন- অসংখ্য কু-কৃতির স্বাক্ষী খুলনার ‘শেখ বাড়ি’। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পলায়নের পর বাড়িটি ধবংসস্তুপে পরিণত হয়।