সম্পাদকীয়

এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে

রেমিট্যান্স বাড়ছে

রেমিট্যান্স বা প্রবাস আয়ের প্রবাহ বাড়ছে। জানা যায়, আগস্ট থেকে শুরু করে প্রতি মাসেই দুই বিলিয়নের বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। গত ছয় মাসে মোট এক হাজার ৪০০ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। জানুয়ারি মাসে ২১৯ কোটি (২.১৯ বিলিয়ন ডলার) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে) প্রায় ২৬ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা। সে হিসাবে প্রতিদিন আসছে প্রায় ৮৬১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, গত ডিসেম্বর মাসে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২.৬৪ বিলিয়ন ডলার বা ২৬৩ কোটি ৯০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। বিদেশ থেকে দেশে অর্থ প্রেরণের দুটি পথ খোলা আছে, যার মধ্যে একটি বৈধ অর্থাৎ ব্যাংকিং চ্যানেলে এবং আরেকটি হচ্ছে অবৈধ অর্থাৎ হুন্ডির মাধ্যমে। নগদ বৈদেশিক মুদ্রা যখন ব্যাংকের কাছে বিক্রি করা হয় বা ব্যাংকের হিসাবে জমা রাখা হয়, তখন তা ব্যাংকিং চ্যানেলে চলে যায়। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ায় তারা পুনরায় নতুন উদ্যমে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে শুরু করেছে। হয়তো তারই প্রভাব রয়েছে ক্রমবর্ধমান রেমিট্যান্সপ্রবাহে। তার পরও রেমিট্যান্সপ্রবাহ আরো বাড়াতে সরকারকে নানামুখী উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, ব্যাংক ও খোলাবাজারে ডলারের দামের পার্থক্য বেশি থাকলে বিদেশ থেকে অর্থ প্রেরণকারীদের এখন হুন্ডিতে টাকা পাঠানো অনেক বেশি লাভজনক হতে পারে। ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ প্রেরণ আরো সহজ, দ্রুত ও আকর্ষণীয় করতে হবে। আমাদের অর্থনীতিতে রেমিট্যান্স প্রেরকদের অবদান বিবেচনায় নিয়ে তাঁদের নানাভাবে সম্মানিত করা যায়। নানা রকম রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা দেওয়া যায়। এ রকম আরো কিছু পদক্ষেপ নিলে প্রবাসী কর্মীরা হুন্ডির বদলে ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠাতে আরো বেশি উৎসাহিত হবেন। বাংলাদেশের অর্থনীতি গত প্রায় সাড়ে পাঁচ দশকে যখনই উঠে দাঁড়াতে চেয়েছে তখনই নানাভাবে ধাক্কা খেয়েছে। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম প্রধান খাত প্রবাস আয় বা রেমিট্যান্স। আগস্ট মাস থেকে বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে শুরু করায় প্রবাস আয় বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বৃদ্ধি করতে হুন্ডি প্রতিরোধ করতে হবে। এ জন্য বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স আনার খরচ কমাতে হবে। রেমিট্যান্সের প্রণোদনার ব্যবস্থাটি চলমান রাখতে হবে।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button