স্থানীয় সংবাদ

মোংলায় মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বিদেশী বন্ধু ফাদার রিগনের জন্মশতবার্ষিকী পালিত

আবু-হানিফ, মোংলা থেকে ফিরে ঃ
মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বিদেশী বন্ধু ফাদার মারিনো রিগনের জন্মশতবার্ষিকী বাগেরহাটের মোংলায় পালিত হয়েছে। বুধবার (০৫ ফেব্রুয়ারী) সকালে মোংলার শেলাবুনিয়াতে ফাদার রিগন শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশন, সেন্ট পলস উচ্চ বিদ্যালয়, সেন্ট পল্স ধর্মপল্লী, ফাদার রিগন ক্রীড়া সংস্থা, মোংলা সরকারি কলেজ, উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, মোংলা নাগরিক
সমাজ ফাদার রিগনের জন্মশতবার্ষিকীতে স্মরণানুষ্ঠান ছাড়াও শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন, কেক কাটা, প্রীতি ফুটবল ম্যাচ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফিয়া শারমিনের সভাপতিত্বে স্মরণানুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃব্য রাখেন, মোংলা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কে এম রব্বানী, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. নূর আলম শেখ, ফাদার রিগন শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের সভাপতি সুভাষ বিশ্বাস, সেন্ট পলস ধর্মপল্লীর পুরোহিত ফাদার ফিলিপ মন্ডল, সেন্ট পল্স উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ব্রাদার এন্ড্র জয়ন্ত কস্তা, উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মোল্লা আল মামুন, সেবা সংস্থার নির্বাহি পরিচালক মিনা হালদার, উপাধ্যক্ষ বিভাষ চন্দ্র বিশ্বাস, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক মনীন্দ্রনাথ হালদার, ফাদার রিগন ক্রীড়া সংস্থার সাধারন সম্পাদক সঞ্জয় হালদার প্রমূখ। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ফাদার রিগন ১৯২৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ইতালির ভিল্লাভেরলা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৫৩ সালে ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে ফাদার রিগন তৎকালিন পূর্ব পাকিস্তানে আসেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি আহত বীর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসাসহ মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখেন। স্বাধীনতার পর তিনি মোংলাতে তিনি স্থায়ী আবাস গড়েন। ফাদার রিগন মোংলা অঞ্চলে সেন্ট পল্স স্কুলসহ ১৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ফাদার রিগন ইতালি ভাষায় অনুবাদ করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতাঞ্জলিসহ ৪০টি বই, লালন সাঁইয়ের ৩৫০টি গান, জসিম উদ্দিনের
নক্সীকাঁথার মাঠ, সুজনবাদিয়ার ঘাট ছাড়াও বাংলাদেশের খ্যাতিমান কবিদের অসংখ্য কবিতা। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখায় বিদেশী এই অকৃত্রিম বন্ধু ফাদার রিগনকে সরকার এদেশের নাগরিকত্বসহ রাষ্ট্রিয় সম্মাননা প্রদান করে। যাজকীয় দায়িত্ব পালন থেকে অবসর নিয়ে ফাদার রিগন বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও সাহিত্যকে ভালোবেসে ইতালিতে ফিরে না গিয়ে তিনি এদেশেই রয়ে
যান। ২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর ইতালিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফাদার রিগন শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ফাদার রিগনের অন্তিম ইচ্ছানুযায়ি মোংলার শেলাবুনিয়াতে তাঁকে সমাধি করা হয়।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button