খেলাধুলা

এখনও সিনিয়র হতে পারিনি : সৌম্য

স্পোর্টস ডেস্ক : বাংলাদেশের ক্রিকেটে সিনিয়র ক্রিকেটার বললে কাদের নাম আসে আপনার মাথায়? মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ কিংবা সাকিব আল হাসান তারাই তো? কিন্তু এদিকে সৌম্য সরকার, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, লিটন দাসরাও যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ বছর কাটিয়ে দিয়েছেন, তারা কি সিনিয়র হননি? আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ বছর অনেক সময়। এই সময়ে অনেকে দেশের অধিনায়কও হয়ে যান। অনেকের অবসর নেওয়ার সময়ও চলে আসে। তবে বাংলাদেশের ক্রিকেটের লিটন-সৌম্যদের প্রজন্মটা এখনও সেভাবে সিনিয়র তকমাটা পায়নি। মাঠের ক্রিকেটে পারফরম্যান্সের অধারাবাহিকতা যেখানে বড় কারণ। সম্প্রতি দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সিনিয়র হতে না পারার ব্যাপারে আফসোস ঝরেছে সৌম্য সরকারের কণ্ঠে। সৌম্য বলেছেন, ‘আমরা আসলে তাদের (সাকিব-মুশফিকদের) সঙ্গেই খেলে গেছি। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের ধারায় কী ঘটে? এক প্রজন্ম খেলে চলে গেছে, এরপর পরের প্রজন্ম এসে সেটা এগিয়ে নিয়েছে। আমাদের ক্ষেত্রে কিন্তু তা হয়নি। তাদের সঙ্গেই আমরা ১০-১২ বছর খেলে গেছি। আমাদের মধ্যে বিশেষ কিছু তৈরি হয়নি। তারাই সব ছিলেন। ওনারা সিনিয়র, আমরা কখনো সিনিয়র হতে পারিনি। ওনারাই সিনিয়র থেকে গেছেন। যাদের নাম বললেন (তাসকিন, সৌম্য, মোস্তাফিজ…), দেখবেন কদিন পর এদেরই অবসর নেওয়ার সময় হয়ে গেছে। এদের কোনো প্রজন্মই তৈরি হবে না। ওনাদের (পাঁচ সিনিয়র) সঙ্গে আমরা যারা এত দিন খেলেছি, আমাদেরই (খেলা) ছাড়ার সময় হয়ে গেছে। এরা (সৌম্য-তাসকিন-মোস্তাফিজ…) অনেক আগে সিনিয়র হলেও সিনিয়র-তকমা কখনও পায়নি।’ সাকিব-তামিমরা মাঠের পারফরম্যান্সে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে পরবর্তী পর্যায়ে নিতে পেরেছিলেন, যার ফলে জুটেছিল সিনিয়র তকমাটা। সৌম্য-লিটনরা কতটুকু তা পেরেছেন সেই প্রশ্নও তোলা যায় চাইলে। সিনিয়র তকমা না লাগার বড় একটি কারণও নিশ্চিতভাবেই মাঠের ক্রিকেটের পারফরম্যান্স। বিষয়টি মেনে নিয়েছেন সৌম্যও। সৌম্য বলেছেন, ‘যখন তারা শুরু করেছিলেন (সাকিব-তামিমরা), তাদের সময়ে যারা সিনিয়র ছিলেন, বেশি দিন জাতীয় দলে ছিলেন না। যেমন Ñহাবিবুল বাশার সুমন, (মোহাম্মদ) রফিক ভাইদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট যখন প্রায় শেষ, তখন এরা (সাকিব-তামিমরা) দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে নিয়েছেন, অনেকটা সিনিয়র হয়ে গেছেন। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকেই অধিনায়কত্ব পেয়েছেন। যেমন সাকিব ভাই তিন বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার পরই অধিনায়কত্ব পেয়েছেন। মুশফিক ভাই পাঁচ বছরের মধ্যে অধিনায়কত্ব পেয়েছেন। তখন কী হয়েছে? তারা সিনিয়রদের সামলেছেন, জুনিয়রদেরও সামলেছেন। আমাদের ক্ষেত্রে এ রকম সুযোগ খুব একটা আসেনি। আমরাও যদি তাদের মতো ক্যারিয়ারের প্রথম কয়েক বছরের মধ্যে অধিনায়কত্ব পেতাম, তাদের (সিনিয়রদের) পরিচালনা করার সুযোগ মিলত, তখন পরিণতবোধ বাড়ত। সবাইকে নিয়ে একটা দল কীভাবে চালাতে হয়, সেটা ভালোভাবে শেখা যেত।’ ২০১৫, ২০১৯ ওয়ানডে বিশ^কাপের পর ২০২১, ২০২২ এবং ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপে খেলেছেন সৌম্য সরকার। খেলেছেন ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও। বয়সও পার করে ফেলেছেন ৩০ এর কোটা। তবে এত দিন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কাটিয়ে দিলেও এত এত সুযোগ পেয়েও এখনও সেভাবে ধারাবাহিক হতে পারেননি সৌম্য। ব্যাটে রান আসে, তবে কালেভদ্রে। মাঠের ক্রিকেটে দলীয় পারফরম্যান্সেও সেই প্রভাব পড়ে। ফলে দলে আসা-যাওয়ার মধ্যেই থাকেন সৌম্যরা। সিনিয়র হয়ে ওঠাও আর হয় না। এত কিছুর সমাধান আপাতদৃষ্টিতে একটিই – বড় মঞ্চে স্মরণীয় কোনো পারফরম্যান্স। লিটন-সৌম্যরা মাঠে যত দ্রুত ধারাবাহিক হতে পারবেন, তত তাদের উপর আস্থা পাবেন ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা, সিনিয়র তকমাও মিলবে সেভাবেই।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button