মহেশ্বরপাশার চা বিক্রেতা উত্তম নন্দী ভূমিদস্যু থেকে কোটিপতি

# জাল দলিল ও জাল রায় ডিগ্রী তৈরি করে অবৈধভাবে ভূমি দখল #
# আঃ রাজ্জাক আকন্দ’র জমি জাল দলিল করে বিক্রি #
এম রুহুল আমিন : খুলনার দৌলতপুর মহেশ^রপাশার চা বিক্রেতা থেকে কোটিপতি। জাল দলিল ও জাল রায় ডিগ্রী তৈরি করে নামজারি করণের মাধ্যমে জমির মালিক সেজে অবৈধভাবে ভূমি দখল করছে।এ চক্রের সাথে ভূমি অফিসের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও মহুরিসহ আরো অনেকে জড়িত আছেন। দৌলতপুর থানাধীন মহেশ্বরপাশা এলাকা সূত্রে জানা যায়, ৯০ দশক হতে ২০০৫ সাল পর্যন্ত রেলিগেট জয়েন্ট ট্রান্সপোটের সামনে, মহেশ্বরপাশা মানিকতলা ও কুয়েট গেটে চা বিক্রি করতো উত্তম কুমার নন্দী। তিনি চা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। পরবর্তীতে হঠাৎ করে মহেশ্বরপাশা এলাকার মজুমদার বাড়ির জমির ওয়ারিশ সেজে ও কখনো ভূয়া রায় ডিক্রি বা জাল দলিল তৈরী করে নিজ পৈতিৃক ভূমি বানিয়ে কোটিপতি বুনে গেছেন। এলাকাবাসি ও ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, মহেশ্বরপাশা সাহেব পাড়া এলাকার মজুমদার পরিবারের নিজস্ব মন্দিরের সেবাহিত সেজে দেবত্ত্বর সম্পত্তি বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট বিক্রি করে কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। উক্ত টাকা বিভিন্ন অসাধু ভূমি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রলোভন দেখিয়ে জাল দলিল ও জাল রায় ডিগ্রী তৈরি করে নামজারি করণের জন্য ও্তপেতে থাকে। বারাকপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সাবেক নায়েব (তহসিলদার) জগন্নাথ বাবু উক্ত বিষয়ে কিছুটা সহযোগিতা করলেও পরবর্তী তৌশিলদারদের সহযোগিতা না পেয়ে বর্তমান যোগদান কৃত (তৌশিলদার) নায়েব’র শরণাপন্ন হচ্ছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়। ইতিপূর্বে চা বিক্রেতা বর্তমান ভূমিদস্যু উত্তম কুমার নন্দী ও তার সহযোগী সাইফুল ইসলাম মহুরি এর পরিকল্পনায় ১৬ এপ্রিল- ২০২৩ তারিখে ৪১৭২০২১ আবেদনে ৭৮৫৮/২২- ২৩ নং কেস দায়ের করে ৮৫৭/৯৬ নং জাল কবলা দলিল দিয়ে নামপত্তন করতে দেন। যাহা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দিঘলিয়া খারিজ করে দেন। পরবর্তীতে আবার সুযোগ নিয়ে ৮৪৬৭/২২-২৩ নং কেস দায়ের করে ব্যর্থ হয়। পুনরায় তহসিল অফিস কর্তৃক সরজমিনে তদন্ত করে জানতে পারেন উক্ত দলিলের সম্পত্তি বর্তমানে খুলনার বিশিষ্ট পাট ব্যবসায়ী মরহুম আঃ রাজ্জাক সাহেব ও পোড়া বস্তিবাসীদের দখলে আছে এবং তাহাদের সঠিক দালিলিক কাগজপত্র আছে মর্মে জানা যায়। আব্দুর রাজ্জাক আকন্দ ৪০ বছর পূর্বে মহেশ্বরপাশা ১নং ওয়ার্ডে বসবাস শুরু করে। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন মানুষের নিকট থেকে জমি ক্রয় করে। আঃ রাজ্জাক আকন্দ’র জমি জাল দলিল করে বিক্রি করেছে। কিন্তু ৮৫৭ /৯৬ নং দলিল গ্রহীতা ও দাতা উত্তম কুমার নন্দী ও সন্তোষ কুমার নন্দী দেখা গেলেও মহেশ্বরপাশা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে নায়েবের বিষয়টি সন্দেহে আসে। তৎপর খুলনা সদর সাব রেজিস্টার অফিস থেকে ৮৫৭/৯৬ নং দলিলের সার্টিফাইড কপি উত্তোলন করে দেখা যায় উক্ত দলিলের গ্রহীতা ও দাতা ভিন্ন ব্যক্তি এবং দলিলটি কবলা দলিল। কিন্তু উত্তম কুমার নন্দী ও সন্তোষ কুমার নন্দী ৮৫৭/৯৬ নং যে দলিলটি কপি দিয়েছেন সেটি দানপত্র দলিল। এ দলিল বাংলাদেশের কোথাও সম্পাদন করা হয়নি। যা জাল দলিল বলে প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়াও তথ্য অনুসন্ধানে দেখা যায়,উত্তম কুমার নন্দী দক্ষিণ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী শশীভূষণ আর্ট স্কুলের জমি ও বর্তমান দৌলতপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের দখলীয় জমি জাল রায় ডিগ্রি করে নামúত্তন করার পাঁয়তারা করছে। এছাড়াও শিরোমণি হাফিজিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম হাফেজ মাও: ইব্রাহীম’র নিজস্ব সম্পত্তি জাল রায় ডিগ্রি করে নামúত্তন করতে দেন। উত্তম কুমার নন্দী সংখ্যালঘু ভিত্তি দেখিয়ে এ সকল অপকর্ম করে যাচ্ছেন। অপর ভুক্তভোগী খানজাহান আলী থানার যোগীপোল ইউনিয়নে বসবাসরত সাব ইন্সপেক্টর মিল্লাত জানান, আমি জমি ক্রয় করি ২০১১ সালে। আমি যার নিকট থেকে জমি কিনেছি তিনি ক্রয় করেন ৯৭ সালে। কিন্তু এখন এই চক্রটি এসে বলছে তারা নাকি ২০ বছর ধরে মামলা চালিয়ে এ জমি পেয়েছে। তবে তার কোন প্রমান আমাদের তারা দিতে পারেনি। ভুক্তভোগীদের সাথে কথা হলে মরহুম আব্দুর রাজ্জাক আকন্দের ছেলে ও বাংলাদেশ জুট এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ফরহাদ আহম্মেদ আকন্দ পম্পি জানান, এ সকল ভূমি দস্যু বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। জাল দলিল ও কাগজপত্র তৈরী করে সাধারন মানুষের জমি বসতবাড়ী হাতিয়ে নিচ্ছে। এ সকল ভূমি দস্যুদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানাই। এ বিষয়ে দিঘলিয়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) জানান,এ সকল জাল দলিল চক্র আর বেশি দিন সক্রিয় থাকতে পারবে না।সকল ভুমির কাগজপত্র অনলাইনে চলে গেলে আমরা সহজে এ সকল জাল দলিল সনাক্ত করতে পারবো।তবে আমরা চেষ্টা করি জাল কাগজপত্র ব্যবহার করে সাধারন মানুষের যেন ক্ষতি করতে না পারে।