স্থানীয় সংবাদ

বাগেরহাট পৌরসভার রেকর্ডিয় ৫টি খালের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা নির্মান হলেও দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেয়নি কেউ

# পানি সংকটে পৌরবাসী #

আজাদুল হক, বাগেরহাট প্রতিনিধি ঃ বিগত সরকার সময়ে রাজনৈতিক নোংরামীতে আলোচিত কতিথ প্রথম শ্রেনীর বাগেরহাট পৌরসভার কোন উন্নয়ন হয়নি। বরাদ্দ এনে হয়েছে লুটপাট। পৌরসভাধিন ৫ টি রেকর্ডিয় খালের জায়গা জোরপুর্বক ও অসৎ উপায়ে দখলে নিয়ে নির্মান হয়েছে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা। অসৎ রাজনৈতিক শাসন ব্যবস্থায় বগেরহাট পৌরবাসি জিম্মি হয়ে পড়ায় কেহ প্রতিবাদ করতে পারে নাই বলে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। বাগেরহাট পৌরসভা কেন্দ্রিক শতশত অভিযোগে মধ্যে অন্যতম অভিযোগ হলো পৌরসভাধিন রেকর্ডীয় ৫টি খাল দখল করে অবৈধ পাকা স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। সংস্কার না করায় যত্রতত্র ময়লা ফেলায় নাব্যতা হারানো প্রবাহমান এ খালগুলোতে জোয়ারভাটা বাধাগ্রস্ত হয়ে সমুলে ভরাট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। আর এ সুযোগে অসাধু মানুষরা খালের জায়গা দখল করে ইচ্ছা খুশিমত পাকা স্থাপনা নির্মান করে চলেছে। তাই পৌরবাসীর দাবী সময় এসেছে খালগুলি দখলমুক্ত ও পুনর্খনন করে ভোগান্তি দুর করার। এদিকে এসব দায় স্বীকার করে বাগেরহাট পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, ৫টি খালের বিভিন্ন স্থান দখল করে ৫ শতাধিক স্থাপনা গড়ে তুলেছে অসাধু মানুষেরা। যা বর্তমানে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে দখল মুক্ত করে খালগুলি পুনঃখনন করা হবে বলে প্রস্তুতি রয়েছে। বাগেরহাট পৌরসভার অফিসিয়াল তথ্য মতে ১৯৫৮ সালের ১ এপ্রিল ১৫.৮৮ বর্গকিলোমিটার আয়তন নিয়ে বাগেরহাট পৌরসভা প্রতিষ্ঠা হয়। বর্তমানে প্রায় দেড় লাখ মানুষের বসবাস এই পৌরসভায়। প্রবল প্রমত্তা ভৈরব নদের তীর ঘেঁষা বাগেরহাট পৌরসভা। এ পৌরসভায় ৯টি ওয়ার্ডে ৫টি রেকর্ডীয় খাল রয়েছে। এ সব খাল দিয়ে এক সময় বড় বড় নৌকা চলাচল করত। এখন তা ভরাট হয়ে ময়লা আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। যা দৃশ্যমান। আর সুযোগ সন্ধানীরা বে-আইনীভাবে প্রভাবখাটিয়ে অনেক এলাকায় অবৈধ দখলদার রা খাল দখল করে ইমারতসহ নানা স্থাপনা তৈরি করেছে। এখন এগুলোকে খাল হিসেবে চেনার উপায় নেই বলেও জানান সংশ্লিষ্ট পৌরবাসী। স্থায়ীভাবে বসবাসকারী একাধিক ব্যাক্তি বলেন, আমরা ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি পৌরসভার মধ্যে হাড়ীখালি খাল, হরিণ খানা খাল, বালিয়ার খাল, নাগের বাজার খাল, ওয়াবদা খাল ও বাদিয়ার খাল। এসব এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা খাল দখল করে বড় বড় পাকা ভবন তৈরি করেছে। যার ফলে বর্ষার মৌসুম জুড়েই পৌরশহরে জলাবদ্ধতা থাকে। ওইসব এলাকার স্থায়ী বাসিন্দারা বাসা ভাড়া দিতে পারে না। একবার বৃষ্টি হলে ১৫ দিন হাঁটু পানি থাকে। পানি নিষ্কাশন হওয়ার কোনো অবস্থাও নেই। শহরের বাসাবাটি এলাকার বিধান হালদার বলেন, ‘পৌরসভার ভেতর দিয়ে প্রবাহমান খালগুলোতে এক সময় নৌকা চলাচল করত। খালে গোসল ও সাঁতার কাটা যেত। এখন এলাকার সে খাল মরে গেছে। খাল চেনার উপায় নেই। বর্ষা মৌসুম আসলে পানি নামতে না পারায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে আমরা চরম দুর্ভোগ পড়ি। অনেক এলাকায় অবৈধ দখলদাররা খাল দখল করে স্থাপনা তৈরি করেছে। দীর্ঘদিন ধরে এসব খালের সংস্কার হয় না।’ এসব খাল দখলমুক্ত করে খনন ও সংষ্কারের দাবি জানান তিনি। বাগেরহাট পৌরসভার সহকারি প্রকৌশলী রিজভী বলেন, ‘বাগেরহাট পৌরসভায় সোয়া লাখ মানুষের বসবাস। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ৫টি খাল রয়েছে। এরমধ্যে অনেকটাই অবৈধ দখলে। ৫ শতাধিক স্থাপনা গড়ে তুলেছে। ময়লা আবর্জনার স্তূপ জমে খালগুলোর অবস্থা এতোটাই খারাপ যে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। এ পাঁচটি খালের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৩ কিলোমিটার। সিটিসিএফটি প্রকল্পের মাধ্যমে কোস্টাল টাউনের ভেতরে এই ৫টি খাল খননের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। খুব শিগগির দরপত্র আহ্বান করে পৌরসভার ৫টি খাল সংস্কার করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে জলাবদ্ধতা নিরসনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এ প্রকল্পের সাড়ে ৭ কোটি টাকারও বেশী ব্যয় হবে।’ এটি বাস্তবায়ন হলে পৌরবাসীর দুর্ভোগ লাঘব হবে বলে আশা করছি।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button