জাতীয় সংবাদ

সাবেক সিআইডি প্রধানের বিরুদ্ধে ৪ কোটি টাকা আদায়ের অভিযোগ

প্রবাহ রিপোর্ট : সাবেক সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে চার কোটি টাকা আদায়ের অভিযোগ করেছেন মেডিকো কোচিং সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা জোবাইদুর রহমান জনি। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। জোবাইদুর রহমান জনি বলেন, আমার নামে মেডিকেল কলেজে ভর্তি জালিয়াতির ব্যাপারে থানায় কোনও জিডি এবং মামলা নেই। এমনকি আমাকে যে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, সেটার এজাহারেও আমার নাম ছিল না। তাহলে কোন আইনে তারা আমাকে গ্রেপ্তার করেছে। আমাকে তুলে নেওয়ার সময় কোনও ওয়ারেন্টও তার দেখাতে পারেনি। তিনি বলেন, কোনও তদন্ত ছাড়া ২০২৩ সালের ২ আগস্ট আমার নিজ বাসা থেকে সকাল সাড়ে ৬টায় সাদা পোশাকের পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। তারপর আমাকে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখানে দীর্ঘ সময় শারীরিক নির্যাতন করা হয়। এরপর জোরপূর্বক বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও শিক্ষার্থীদের নাম লেখানো হয়। পরবর্তী নামগুলো ভিডিওতে আমাকে দিয়ে বলিয়ে নেওয়া হয়। টাকা নেওয়ার প্রসঙ্গে জনি বলেন, আমার স্ত্রীকে ২০২৩ সালের ৪ আগস্ট মালিবাগের স্কাই সিটি হোটেলে ডাকা হয়। তারপর আরও মামলা, নির্যাতনের ভয় দেখিয়ে মোট ৫ কোটি টাকা দাবি করা হয়। পরে আমি আটক থাকা অবস্থায় ও জামিনের সময় মোট ৬ কিস্তিতে ৪ কোটি টাকা আদায় করা হয়। এটির পর আমাদের পক্ষে আর টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি। আমরা তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করি। টাকা নেওয়া হয় আগারগাঁও আইসিটি ভবনের পাশের রাস্তায়। মেডিকোর প্রধান বলেন, আমাকে তুলে নেওয়ার ঘটনা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং চাঁদার জন্য। এটি না হলে আমাকে কেন ২০০৫ সালের মেডিকেল ভর্তির ব্যাপারে জোরপূর্বক স্টেটমেন্ট নেওয়া হবে। কারণ তখন বিএনপির ক্ষমতায় ছিল। আর আমি মেডিকেল কলেজে পড়ার সময় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের ছাত্রদলের সভাপতি ছিলাম। এছাড়া সর্বশেষ যুবদলের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ছিলাম। তিনি আরও বলেন, আমি ২০০৫ সালে মেডিকেল কলেজের ছাত্র ছিলাম। তখন কয়েকজনের বাড়ি গিয়ে টিউশনি করাতাম। কিন্তু আমার ব্যাপারে অভিযোগ করা হয়— ২০০৫ সালের মেডিকেল কলেজে জালিয়াতি ও প্রশ্নফাঁসের মাধ্যমে ভর্তি করানোর মূল হোতা আমি। এদিকে আমার কোচিং সেন্টার চালু হয় ২০০৫ সালের অনেক পরে। তাদের আরও অভিযোগ— আমার কোচিং থেকে কীভাবে এত শিক্ষার্থী চান্স পায়। মেডিকোর চেয়ে অনেক বেশি শিক্ষার্থী অনন্যা কোচিং থেকে চান্স পায়। আমাকে হেনস্তা ও কোচিং সেন্টার বন্ধের জন্য তারা ষড়যন্ত্র করে। টাকা আদায়ের জন্য নতুন মামলায় পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞেসা করতে চিঠি প্রদান করা হয়। এছাড়া হোয়াটসঅ্যাপে নিয়মিত হুমকি। এক পর্যায়ে ব্যক্তিগত ও প্রতিষ্ঠানের সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়া হয় বলেও জানান জনি। টাকা লেনদেনের ব্যাপারে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, স্কাই সিটি হোটেল ও আগারগাঁওয়ের রাস্তার সিসি টিভি ফুটেজ দেখলেই আপনারা বুঝবেন। এছাড়া এসআই মেহেদি হাসান আমার আত্মীয়দের গাড়িতে তুলে মাথায় বন্দুক ধরে টাকা আদায়ের ব্যাপারে হুমকি দেন। এঘটনায় সিআইডি প্রধানসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের কথাও জানান ভুক্তভোগী জনি। অভিযুক্ত আরও তিনজন হলেন— এএসপি জুয়েল চাকমা, এসআই মেহেদি হাসান ও আতিকুর রহমান।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button