স্থানীয় সংবাদ

কেসিসির মেয়র হতে যাচ্ছেন নজরুল ইসলাম মঞ্জু

# নির্বাচনী মামলার শুনানীতে অংশ নিলেন হাজারো সমর্থক নিয়ে
# আগামী ৪ মে মামলার পরবর্তী শুনানী

স্টাফ রিপোর্টার ঃ নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে দায়েরকৃত মামলার রায় পক্ষে গেলে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পেতে পারেন মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও খুলনা ২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু। বৃহস্পতিবার মামলার শুনানীতে তিনি খুলনার আদালত চত্বরে হাজির হয়েছিলেন হাজারো সমর্থক নিয়ে। দলীয় কোন পদ-পদবী না থাকলেও শুধুমাত্র খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচনী মামলার শুনানীর দিনে মঞ্জু অনুসারীদের এমন দৃশ্য দেখা গেল খুলনার আদালত চত্বরে। এর আগেও গত ২২ মার্চ খুলনা ক্লাবে সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জু ও সাবেক মেয়র মনিরুজ্জামান মনির নেতৃত্বাধীন ব্যক্তিগত ইফতার মাহফিলেও যোগ দিয়েছিল সহ¯্রাধিক মানুষ। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ফলাফল বাতিল চেয়ে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর দায়ের করা মামলার শুনানীর দিন গতকাল বৃহস্পতিবার(২৪ এপ্রিল) খুলনার আদালতে হাজির হয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে মঞ্জু সমর্থকরা। কিন্তু মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয় ৪ মে। ওই দিন বিবাদী পক্ষকে আদালতে হাজির হওয়ার দিন ধার্য করেছেন খুলনা যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো: খুরশীদ আলম। এদিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার মামলার ধার্য তারিখে ছয়জন বিবাদীর কেউই আদালতে হাজির হননি বলে জানান মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা। তিনি বলেন, ওই সময় রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগ এবং তাদের মনোনীত প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেকের কর্মী বাহিনী ১৫ মে ভোট শুরুর সাথে সাথে সকল কেন্দ্র দখল করে নিয়ে নৌকা মার্কায় জাল ভোট প্রদান করে। ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু ওই দিন দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দেন। পাশাপাশি তিনি আইনের দ্বারস্থ হন। দীর্ঘ সময় মামলা চললেও বিবাদীর কেউ আদালতে হাজিরা দেননি। অপরদিকে, নজরুল ইসলাম মঞ্জুর দায়ের করা এ মামলার ধার্য তারিখে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আদালত চত্বরে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানা থেকে মিছিলসহকালে হাজার হাজার মঞ্জু সমর্থক হাজির হন। সবচেয়ে বড় মিছিলটি আসে নগরীর ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মাহবুব কায়সারের নেতৃত্বে। মিছিলে নজরুল ইসলাম মঞ্জুর ছবি সম্বলিত বিভিন্ন প্লাকার্ড শোভা পাচ্ছিল। বিশেষ করে নগরীর ২২নং ওয়ার্ডের সাবেক বিএনপি নেতা ও সাবেক কাউন্সিলর মাহাবুব কায়সারের নেতৃত্বে শত শত নারী পুরুষ নজরুল ইসলাম মঞ্জুর সমর্থনে আদালত চত্বরে উপস্থিত হন। তাদের হাতে থাকা নজরুল ইসলাম মঞ্জুর ছবি সম্বলিত বিভিন্ন প্লাকার্ড সবার নজর কাড়ে।
উল্লেখ্য, নজরুল ইসলাম মঞ্জু প্রায় ৪৫ বছরের অধিক সময় ধরে খুলনা বিএনপির কর্ণধার ছিলেন। ১৯৭৯ সালে ছাত্রদল কর্মী, ১৯৮৭ সাল থেকে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক, ১৯৯২ সাল থেকে ১৭ বছর সাধারণ সম্পাদক এবং ২০০৯ সালে আহ্বায়ক ও ওই বছরই সভাপতি হন তিনি। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থী হিসেবে খুলনা-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মঞ্জু। প্রায় ২৯ বছর পর নগর কমিটির নেতৃত্ব থেকে ছিটকে পড়েন নজরুল ইসলাম মঞ্জু। অর্থাৎ দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় ২০২১ সালে। এরপর ওই বছর (২০২১) ডিসেম্বরে অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনাকে আহ্বায়ক করে গঠিত হয় নগর কমিটি। যা গত ২৪ ফেব্রুয়ারির সম্মেলনের মধ্যদিয়ে পূর্নাঙ্গ কমিটিতে রূপ নেয়। কিন্তু নজরুল ইসলাম মঞ্জু অনুসারীরা স্থান পাননি ওই কমিটিতে। তার পরেও যে কোন কর্মকান্ডে পিছিয়ে নেই মঞ্জু-মনির অনুসারীরা। সর্বশেষ পরিবর্তিত সময়ে মেয়র নির্বাচনী মামলার মধ্যদিয়ে আবারো আলোচনায় আসেন মঞ্জু। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, মামলার রায় না হওয়া পর্যন্ত কোন মন্তব্য করা যাবে না। দলের হাইকমান্ড এবং আইনজীবীর পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কড়া নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button