স্থানীয় সংবাদ

আশাশুনিতে চোরাই ১২ টি রেল লাইনের পাতের খুঁটির ৬টি ফেরৎ দিলেও বাকীগুলো উদ্ধারের চেষ্টা নেই প্রশাসন চুরি ও উদ্ধার ঘটনাই জানেন না

খুঁটি উঠানো ও চোরাই পথে বিক্রয়ের নায়ক মইজুদ্দীন ধরা ছোঁয়ার বাইরে

আশাশুনি প্রতিনিধি : আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নে কাঠের ব্রীজে ব্যবহৃত রেল লাইনের পাতের ১২ টি খুঁটি মইজদ্দিনের নেতৃত্বে চোরাই পথে বিক্রী করে। খবর পেয়ে সাংবাদিকরা মাঠে নামলে রাতের আঁধারে ৬টি খুঁটি গোপনে কাজের ধারে ফেলে রাখা হয়। বাকী খুটিগুলো এক সপ্তাহেও উদ্ধারে কোন তৎপরতা দেখা যায়নি।
খাজরা ইউনিয়নের পারিশামারী হাই স্কুলের সামনে ব্রীজ নির্মান কাজ শুরু হয়েছে। যেখানে পূর্বে রেলের পাটির খুঁটি ব্যাবহার করে কাঠের সাঁকো নির্মান করা হয়েছিল। সাঁকোটি ব্যবহার অনুপযোগি হয়ে পড়লে সরকারি ব্যয় বরাদ্দে ব্রীজ নির্মান কাজ শুরু হয়েছে। রেলের পাটির ১৮টি খুঁটি সেখান থেকে উঠিয়ে তার থেকে ১২টি খুঁটি গোপনে বিক্রী করে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গেলে দেখতে পান ব্রীজের পাশে ৩টি খুঁটি রয়েছে। খালের অপর পাড়ে শাহিনের বাড়ীতে ৩টি খুঁটি পাওয়া যায়।
এলাকাবাসী জানান, সেখান থেকে মোট ১৮ টি খুঁটি উঠানো হয়। বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাতে সেখান থেকে বড় চাকার ইঞ্জিন চালিত গাড়িতে করে ১২ টি খুঁটি নিয়ে গরালি বাজারে বিক্রী করা হয়।
ব্রীজের কাজে ব্যবহৃত ভ্যেকু মেশিনের কন্ট্রাক্টর চেউটিয়া গ্রামের মৃত জিয়াদ বিশ্বাসের ছেলে মইজ উদ্দীন জানান, শুনেছি মেশিন চালানোর পূর্বে কয়েকটি খুঁটি উঠানো হয়েছিল। আমরা বুধবার সন্ধ্যা রাতে ৭টি খুঁটি উঠিয়ে পাশে রাখি। সকালে এসে দেখি ৪টি নেই। তবে তিনি চুরির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে। তবে আশ্চার্যজনক হলেও সত্য এদিন রাতেই চুরি যাওয়া ১২টি খুঁটির মধ্যে ৬টি খুঁটি গোপনে গোপনে ব্রীজের পাশে কে বা কারা রেখে গেছে বলে বৃহস্পতিবার তিনি জানান।
ব্রীজের কাছে স্কুল মাঠে রাস্তার পাথর বহন কাজে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক জানান, বুধবার সন্ধ্যার পর মইজদ্দিনের নেতৃত্বে স্থানীয় প্রভাবশালী দুই নেতা ও এক নেতার ভাইপোর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় খুঁটিগুলো ভ্যেকু মেশিনের সাহায্যে উঠানো হয় এবং পরে আলম সাধুতে উঠিয়ে পাচার করা হয়। খুঁটিগুলো গরালী বাজারে নিয়ে বিক্রী করা হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, মইজউদ্দীনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সবকিছু উদঘাটন হবে।
এরাকাবাসী জানান, খুঁটিগুলো চুরির সাথে ভ্যেকু মেশিন ঠিকাদার মইজদ্দীন সরাসরি জড়িত। বিষয়টি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হওয়া, ৬টি খুঁটি উদ্ধার হওয়া, সরকারি ভাবে কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করা, বাকী খুঁটি চুরির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হতাশা জনক। তারা চোর শনাক্ত, চোরাই মাল উদ্ধার ও অপরাদের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবী জানান।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম জানান, কাজ শুরুর সময় ঠিকাদারকে বলেছিলাম, সেখানে কোন পুরনো মালামাল থাকলে ইউনিয়ন পরিষদের জিম্মায় রাখতে। কিন্তু খুঁটি পাওয়ার ঘটনা, চুরি হওয়া, কয়েকটি উদ্ধার হওয়ার ঘটনা আমাকে জানানো হয়নি। আমি এলাকায় গিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব বলে তিনি জানান।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button