হালদা নদীতে ডিম ছেড়েছে মা মাছ

প্রবাহ রিপোর্ট : প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র হালদা নদীতে ডিম ছেড়েছে মা মাছ। গত বৃহস্পতিবার রাত ২টার পর থেকে নদীতে ডিম মিলতে শুরু করে। এর আগে থেকে নৌকা নিয়ে হালদায় অবস্থান করছিলেন ডিম সংগ্রহকারীরা। ডিম সংগ্রহে হালদা নদীতে উৎসবের আমেজ বইছে। এ প্রসঙ্গে রাউজান উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, রাত ২টা থেকে হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছেড়েছে। রাতভর ডিম সংগ্রহ চলে। সকালেও নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ডিম সংগ্রহ করা হয়। জানা গেছে, প্রায় ৩০০ নৌকা নিয়ে গত বুধবার থেকে হালদা নদীতে অপেক্ষায় ছিল ৭০০ ডিম সংগ্রহকারী। গত তিন দিন ধরে ডিম সংগ্রহকারীরা নদীতে নির্ঘুম রাত কাটায়। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার রাত ২টা থেকে ডিম ছেড়েছে মা মাছ। এর আগে বুধবার ও গত বৃহস্পতিবার দুই দফায় স্বল্প পরিমাণে ডিম ছাড়ে মা মাছ। স্বল্প পরিমাণ হওয়ায় একে নমুনা ডিম বলছে সংগ্রহকারীরা। রাউজান উপজেলার প্রবীণ ডিম সংগ্রহকারী কামাল উদ্দিন সওদাগর বলেন, রাত ২টা থেকে নদীতে ডিম ছাড়ে মা মাছ। তবে বৃষ্টি এবং আবহাওয়া উত্তপ্ত এবং নদীতে পানি বেশি থাকায় অনেক ডিম স্রোতে চলে গেছে। এরপরও প্রতিটি নৌকা ডিম সংগ্রহ করতে পেরেছে। আমরা ডিম সংগ্রহের জন্য গত বুধবার সকাল থেকে নৌকা নিয়ে হালদায় অপেক্ষায় আছি, কখন ডিম ছাড়বে। সংশ্লিষ্টরা জানান, এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার উপযুক্ত সময়। মৌসুমের অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হলে নদীতে পানি বাড়ে। আর এতে মা মাছ ডিম ছাড়ে। এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট হালদা নদী গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, হালদা নদীতে গত রাতে মা মাছ ডিম ছেড়েছে। প্রায় ৩০০ নৌকা নিয়ে অন্তত ৭০০ ডিম সংগ্রহ করে। কী পরিমাণ ডিম পাওয়া গেছে তার হিসেব এখনও পাওয়া যায়নি। তবে আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবার ডিম ভালো পাওয়া যাবে। হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার সময় এখনও আছে। তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে গত বুধবার এবং গত বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বল্প পরিমাণে ডিম ছেড়েছে মা মাছ। রুই জাতীয় মাছের মৎস্য প্রজননকেন্দ্র হিসেবে খ্যাত হালদা নদীকে বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করে গেলো আওয়ামী লীগ সরকার। ২০২০ সালের ২২ ডিসেম্বর এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।



