সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করতে নদী তীরবর্তি এলাকায় মানুষের পদচারণায় মুখরিত

রিয়াছাদ আলী, কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি ঃ এবার পবিত্র ঈদুল আযহার ছুটিতে সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারছেনা কোন লোকজন। ১ জুন থেকে ৩১ শে আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস সব ধরনের প্রবেশ অধিকার নিষিদ্ধ জারি করেছে বন বিভাগ। সুন্দরবনে প্রবেশ করতে না পারলেও কয়রার সুন্দরবন সংলগ্ন ৪নং কয়রা, প্রস্তাবিত কেওড়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র ও কাটকাটার শাকবাড়িয়া নদীর পাড়ে ভ্রমন পিপাষু মানুষের উপস্থিত ছিল চোখে পড়ার মতো। মানুষের পদচারনায় মুখরিত ছিল পুরো এলাকা। উপচে পড়া ভিড়ে স্থানীয়া ছিল খুশিতে। এখানে ঈদের ছুটি উপভোগ করতে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে এসেছেন প্রকৃতি প্রেমীরা। নদী, খাল, বনে ঘেরা এই অনন্য এলাকাটি এখন রীতিমতো লোকজনের হটস্পট। ছুটির শুরু থেকেই প্রতিদিন শত শত লোকজন পরিবার-পরিজন নিয়ে নদীর পাড়ে সমাগম হয়েছে। অনেকেই বাচ্চাদের নিয়ে নৌকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন, কেউবা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ক্যামেরাবন্দি করছেন। কাটকাটার স্থানীয়রা জানান, এই এলাকাটি তুলনামূলকভাবে শান্তিপূণ ও প্রাকৃতিকভাবে আকর্ষণীয়, যা ঈদের ছুটিতে মানসিক প্রশান্তি দেয়। এই এলাকার মানুষের নিরাপত্তা ও সেবায় স্থানীয় প্রশাসন ও কয়রা থানা পুলিশ সাময়িক নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করেছে। সব মিলিয়ে ৪নং কয়রা ও কাটকাটা এলাকায় ঈদ আনন্দে মেতে উঠেছেন অসংখ্য লোকজন। আগামী কয়েক দিন এ ভিড় আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা বিধৌত সুন্দরবন যেন চির সুন্দর। তার অনন্ত চিরযৌবনা সৌন্দর্য হাতছানি দিয়ে ডাকে ভ্রমণ পিপাসু মানুষ কে। ভ্রমণ পিপাসু মানুষ ও তার এ সৌন্দর্যে বিমোহিত। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে কার না মন চায়। সৌন্দর্যের এই লীলাভূমির ডাকে সাড়া দিয়ে দিনে দিনে বাড়ছে ভ্রমণ পিপাসু মানুষের সংখ্যা। অনিন্দ সুন্দর প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্যের আধার আমাদের গর্বের প্রতিক প্রিয় সুন্দরবন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ, লোনাপানির বন সুন্দর বন। এ বনের বিশেষ পরিচিতি ও চেনাতে এবং জানাতে দেশী বিদেশীদের কে, সময়ের আবর্তে এই অঞ্চলে আগমনকে ধরে রাখতে এখানে ইকট্যুরিজম কেন্দ্র গড়ে তোলা দরকার। সরেজমিনে গত রবিবার সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রার কাটকাটা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নদীর তীরে গড়ে ওঠা ম্যানগ্রোভ ক্যাফে এন্ড রেস্টুরেন্টে ঈদকে সামনে রেখে সাজসজ্জায় রেখেছে ভরপুর। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক জাহিদ হাসান বলেন, ঈদ উপলক্ষে আমরা রেস্টুরেন্ট পরিষ্কার পরিছন্ন রাখতে পেরেছি। যাতে লোকজন এসে স্বাচ্ছন্দ্যভাবে আসতে পারে। এ বছর প্রচুর বেচাকেনা হয়েছে। কয়রা কপোতাক্ষ কলেজের সাবেক অধ্যাপক আ ব ম আব্দুল মালেক বলেন, দেশের সর্ব দক্ষিণে খুলনার কয়রায় পর্যটন শিল্পের অপর সম্ভাবনা থাকলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা ও প্রচার প্রচারণায় পিছিয়ে থাকার কারণে পর্যটকরা জানে না যে এই অঞ্চল দিয়ে খুব সহজে সুন্দরবন ভ্রমণ করা যায়। কিন্তু পর্যায়ক্রমে সেটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। খুলনা জেলা শহর থেকে পর্যটকরা মাত্র চার ঘণ্টায় কয়রার পর্যটন স্পটগুলোতে পৌঁছাতে পারবে। তবে যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নতি ও ভালো মানের হোটেল এবং আবাসিক হোটেল স্থাপন করা গেলে পর্যটকের সাড়া পড়তো পর্যাপ্ত। পাশাপাশি খুলনা হতে সরাসরি বাস (গেটলক) সার্ভিস কাটকাটা থেকে চালু করা যায় তাহলে আরও কম সময়ে পর্যটকরা ভ্রমণ করতে পারবেন। কাটকাটা রিভার ভিউ ক্যাফে এন্ড রেস্টুরেন্টের সত্ত্বাধিকারী আলমগীর হোসেন জানান, আমাদের রেস্টুরেন্টে প্রতিদিন ভালোই বেচাকেনা হচ্ছে। তবে এবার ঈদের লম্বা ছুটিতে সুন্দরবনের সৌন্দর্য দেখতে ব্যাপক লোকজনের সমাগম ঘটেছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন এসে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। তবে প্রবেশ করতে না পেরে কিছুটা হতাশ হয়ে পড়ছে। ন্থানীয় ব্যবসায়ী শেখ রিপন বলেন, অন্যান্য বারের তুলনায় এবার সুন্দরবনের কাটকাটা এলাকায় অনেক বেশি লোকজনের উপস্থিত ছিল।