খুলনায় ঈদ পরবর্তী বাজারে সবজির দাম চড়া!

# ক্রেতাদের অভিযোগ : নানা অজুহাতে দেখিয়ে নেওয়া হচ্ছে বাড়তি দাম #
# ভীড় নেই গরুর মাংসের দোকানে, সামনে সবজির আরো দাম বাড়ার শঙ্কা #
মো. আশিকুর রহমান ঃ খুলনায় যথাযোগ্য মর্যাদা, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শনিবার (৭ জুন) উৎসব মুখর পরিবেশে সারাদেশের মতো খুলনায়ও পালিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল আযহা। আত্বত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে পশু কোরবীন মধ্যে দিয়ে খুলনাবাসী উদ্যাপন করেছে পবিত্র ঈদুল আযহা। মুসলিম উম্মাহর ঈদ উৎসবকে ঘিরে প্রতিটি বাসা-বাড়ীতে চলে পোলাও, বিরানী, মাংশ, কোরমা, ফিরনী, পায়েসসহ নানা খাবারের আয়োজন। যে কারণে ঈদের পরবর্তী বাজারে ক্রেতারা ঝুঁকছেন সবজি ও মাছের দিকে। আর এ সুযোগে নানা অজুহাত দেখিয়ে সবজি বিক্রেতারা বাড়তি দামে সবজি বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন বাজারে আসা একাধিক ক্রেতারা। সবজি কিনতে আসা ক্রেতারা বলছেন, ঈদের সপ্তাহখানেক আগে সবজির দাম সহনীয় পর্যায়ে ছিল, কিন্তু ঈদের পরবর্তী বাজারে সেই সবজি কেজি প্রতি ২০ টাকা বাড়তি। সবজি ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে ইচ্ছা-স্বাধীন দাম নিচ্ছে। বিপরীতে বিক্রেতারা বলছেন, কৃষক থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা ঈদের কারণে ঘরমুখি হয়ে পড়েছেন। যে কারণে ক্ষেতে ফসল থাকলে বর্তমানে সরবরাহ কমেছে। তাছাড়া বৃষ্টি বাদলের কারণে ক্ষেতের ফসল তোলেনি কৃষকেরা। আমরা কোনো প্রকার সবজির দাম বাড়তি নিচ্ছি না, যা দামে কেনেছি, তা হতে সামান্য লাভে বিক্রি করছি। তাছাড়া ঈদের কারণে রাজধানী ঢাকা হতে সারাদেশে মানুষ ঘরমুখি হয়েছে, ঈদ শেষে তারা পুনরায় রাজধানী মুখি হলে তখন সবজির চাহিদা বেড়ে যাবে, ওই সময় চাহিদার তুলনায় সবজির সরবরাহ কম হবে এবং সবজির দাম আরো বাড়বে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে নগরীর গরুর মাংসের দোকানগুলোতে মাংস বিক্রেতারা মাংস নিয়ে বসে থাকলেও দেখা নেই ক্রেতার। ঈদের সময় ডাকহাকে প্রতিকেজি ৭৫০ টাকার মাংস বিক্রি হলেও এখন ৭০০ টাকা করে বিক্রি করলেও মিলছেনা কাংক্ষিত ক্রেতা বলে জানিয়েছেন মাংস বিক্রিতারা।
মঙ্গলবার ( ৭ জুন) নগরীর সবজি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে বেগুন প্রতি কেজি ৭০-৮০ টাকা, বরবটি ৬০-৭০ টাকা, উচ্ছে ৭০-৮০ টাকা, ঢেড়শ ৪০-৫০ টাকা, পাতাকপি ৫০-৬০ টাকা, কাকরোল ৬০-৭০ টাকা, কুশি ৫০-৬০ টাকা, কচুরলতি ৫০-৬০ টাকা, ধুন্দল ৩০-৪০ টাকা, টমেটো ৬০-৭০ টাকা, পেঁপে ৫০-৫৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০-৪০ টাকা, কচুরমুখি ৬০-৭০ টাকা, লালশাক ৪০-৪৫ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৪৫-৫০ টাকা, কাঁচকলা হালি ৪০ টাকা, আলু প্রতি কেজি ২০-২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজি কিনতে আসা ক্রেতা রেদওয়ান জানান, ঈদের কয়েক দিন টানা পোলাও, মাংস, বিরানীসহ হরেক মুখরোচক খাবার খেয়ে খুবই গ্যাসের সমস্যা হচ্ছে। ঈদ পরিবর্তী এই সময়ে স্বাভাবিক হালকা সবজি শরীরের জন্য খুবই উপকারী। বর্তমানে ঈদ পরিবর্তী এই সময়ে স্বাভাবিক সবজির উপর সকলেই ঝুঁকে পড়েছে। এই সুযোগে ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাত দাড় করিয়ে সবজির দাম বাড়তি নিচ্ছে। অপর ক্রেতা সোহেল রানা জানান, ঈদ পরবর্তী বাজারে এসেছি বাজারে সবজি কেনার জন্য। কারণ এক সপ্তাহ হয়নি কোরবানী ঈদ গেল। ঈদের দিন হতে টানা মাংস খাওয়া চলছে। একটানা কত মাংস খাওয়া যায়। এখন ভারি খাবার ছেড়ে স্বাভাবিক খাবার শাক-সবজি খাওয়া জরুরী। তবে বিক্রেতারা সবজির দাম বেশি নিচ্ছে।
খুচরা সবজি বিক্রেতা জাহিদুল জানান, কৃষক থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা ঈদের কারণে ঘরমুখি হয়ে পড়েছেন। যে কারণে ক্ষেতে ফসল থাকলেও বর্তমানে সবজি বাজারে সবজির সরবরাহ কমেছে। তাছাড়া বৃষ্টি বাদলের কারণে ক্ষেতের ফসল তুলতে নানামুখি বাধার সম্মুখিন কৃষকেরা। আমরা কোনো প্রকার সবজির দাম বাড়তি নিচ্ছি না, যা দামে কেনেছি, তা হতে সামান্য লাভে বিক্রি করছি।
অপর সবজি বিক্রেতা মোহাম্মাদ জানান, ঈদের কারণে রাজধানী ঢাকা হতে সারাদেশে মানুষ ঘরমুখি হয়েছে, ঈদ শেষে তারা পুনরায় রাজধানী মুখি হলে তখন সবজির চাহিদা বেড়ে যাবে, ওই সময় চাহিদার তুলনায় সবজির সরবরাহ কম হবে এবং সবজির দাম আরো বাড়বে। বর্তমানে আমরা খুচরা ব্যবসায়ীরা পাইকারী বাজার হতে যা দামে কেনেছি, তা হতে সামান্য লাভে বিক্রি করছি।
দৌলতপুর বাজার বণিক সমিতির সহ-সাঃ সম্পাদক ও দৌলতপুর বাজার খুচরা কাচাঁমাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শেখ পলাশ হোসেন বলেন, ঈদ পরবর্তী বাজারে সাধারণত একটু সবজির দাম বেশি হয়ে থাকে, এটা স্বাভাবিক। কৃষক থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা ঈদের কারণে ঘরমুখি হয়ে পড়েছেন। যে কারণে ক্ষেতে ফসল থাকলেও বর্তমানে সবজি বাজারে সবজির সরবরাহ কমেছে। তাছাড়া বৃষ্টি বাদলের কারণে ক্ষেতের ফসল তুলতে নানামুখি বাধার সম্মুখিন কৃষকেরা যে কারনে চাহিদার তুলনায় বর্তমানে সবজির কিছুটা সরবরাহ কমেছে, তাই দাম একটু বাড়তি মনে হচ্ছে। সামনে সরবরাহ বাড়লে দাম কমে যাবে।