মহেশ^রপাশায় আধুনিক গম সংরক্ষণাগারটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন

# হস্তান্তরের অপেক্ষায় #
# স্টিল সাইলোটি নির্মিত হলে ৭৬ হাজার ২০০ মেট্রিক টন গম সংরক্ষণ করা যাবে
# প্রায় ৩’শ ৫৬ কোটি টাকা ব্যায়ে বাংলাদেশি কোম্পানি ম্যাক্স গ্রুপ এবং তুর্কি কোম্পানি আল তুনতাস যৌথভাবে প্রকল্পের কাজ করছে #
এম রুহুল আমিন ঃ আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার প্রকল্পের আওতায় দৌলতপুর মহেশ^রপাশায় প্রবাহমান ভৈরব নদীর পাশে সুন্দর পরিবেশে আন্তর্জাতিক মানের উপযোগি করে নির্মাণ করা হচ্ছে আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগারটি (স্টীল সাইলো) । আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগারটি অবস্থান ও পরিবেশগত দিক থেকে বাংলাদেশের প্রথম স্থানে রয়েছে। হাতের স্পর্শ ছাড়াই আধুনিক প্রযুক্তি মেশিনদ্বারা সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায় গম সংরক্ষণ, লোডিং এবং আনলোডিং করা সুবিধা থাকবে। যাতায়াত ব্যবস্থার দিক দিয়ে সড়ক,রেল এবং পানি পথে মালামাল আনা নেয়ার সুব্যবস্থা এখানে রয়েছে। এটি নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হলে দেশের দক্ষিন পশ্চিম অঞ্চলের মানুষ বেশি সুবিদা ভোগ করবে। আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার প্রকল্পের আওতায় খুলনায় আধুনিক গমের স্টিল সাইলো নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২২ সালের ১২ জানুয়ারি। ইতিমধ্যে প্রকল্পের ৯৭ শতাংশ শেষ হয়েছে। প্রায় ৩’শ ৫৬ কোটি টাকা ব্যায়ে বাংলাদেশি কোম্পানি ম্যাক্স গ্রুপ এবং তুর্কি কোম্পানি আল তুনতাস যৌথভাবে প্রকল্পের কাজ করছে। বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্ব ব্যাংক যৌথভাবে এ প্রকল্পের অর্থায়ন করছে। স্টিল সাইলোটি নির্মিত হলে ৭৬ হাজার ২০০ মেট্রিক টন গম সংরক্ষণ করা যাবে। ৩ বছর পর্যন্ত গরমের গুণগতমান বজায় থাকবে। কোন হাতের স্পর্শ ছাড়াই সম্পূর্ণ অটেমেটিক প্রযুক্তি নির্ভর মেশিন দ্বারা স্টিল সাইলোর ৬ টি ঢোল, চুল্লি বা বিনে গম সংরক্ষণ করা যাবে। প্রতিটি ঢোল,চুল্লি বা বিনের ধারণ ক্ষমতা ১২ হাজার ৭০০ টন। প্রকল্পটির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে স্টিল সাইলোর বিনে গম উঠানোর জন্য ভৈরব নদীর তীরে বিশ্বমানের একটা অত্যাধুনিক জেঁটি তৈরি করা হয়েছে। প্রকল্প ম্যানেজার (পিএম) প্রকৌশলী ওমর ফারুক বলেন, এই প্রকল্পেটিকে দুইটা ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এর একটি হচ্ছে অপারেশনাল এরিয়া এবং অন্যটা হচ্ছে রেসিডেন্সিয়াল অফিস কাম এরিয়া। অপারেশনাল এরিয়া কাজটা প্রায় শেষের পথে।শুধু বিদ্যুৎ সংযোগ বাকি আছে। নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে শতভাগ কাজ শেষ হয়ে যাবে। প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। তুর্কি কোম্পানি আল তুনতাস স্টিল সাইলোর যে ম্যাটেরিয়ালস আছে সেগুলো সাপ্লাই দিচ্ছে এবং এর সঙ্গে তারা কাজগুলো করছে। আর প্রকল্পের বাকি ৭৫ শতাংশ কাজ ম্যাক্স গ্রুপ তার নিজস্ব জনবল, ইঞ্জিনিয়ার এবং ইকুপমেন্ট দিয়ে কাজটা করছে। সাইলোর বিনে গম উঠানোর জন্য নদীর পাড়ে বিশ্বমানের যে জেঁটি তৈরি করা হয়েছে। জেটির কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এই প্রজেক্টের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল জেঁটির কাজটা করার। জেঁটির কাজ করার জন্য বড় হ্যামার দিয়ে স্টিলের পাইপ ক্যাচিং দিয়ে সেগুলো বসানো হয়েছে। এক একটা ক্যাচিং ৪২ ফুট লম্বা। রেইন পোস্ট ব্যান্ড এবং কংক্রিট দিয়ে কাজটা কমপ্লিট করে তারপর স্নাপ দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানের এ যেটির ৯০ শতাংশ মেটারিয়াল জার্মান, ইউএসএ, তুরস্ক, থাইল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আনা হয়েছে। এছাড়া প্রকল্পে ব্যবহার করা প্রতিটি মেটারিয়ালসের মান যাচাই-বাছাইয়ের কাজ করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েট এবং খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় কুয়েট। উল্লেখ্য,ইতিমধ্যে প্রকল্পের ৯৭ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আধুনিক স্টীল সাইলোর নির্মাণ কাজ জুন-২০২৫ এ শেষ হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।