খুলনায় নিষিদ্ধ সংগঠন আ’লীগ নেতার নেতৃত্বে বয়োবৃদ্ধার বসতবাড়ী জবরদখলের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার ঃ খুলনা নগরীর মুসলমানপাড়া এলাকায় নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগ নেতার নেতৃত্বে সন্ত্রাসীদের ইন্দোনে দুশ্চরিত্রা দু’ নারীর কর্তৃক বয়োবৃদ্ধার বসতবাড়ী জবরদখলের অভিযোগ। রবিবার বেলা ১২টায় খুলনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ফজিলতুন্নেসা উল্লেখ করেন, “কিশোর বয়সে নগরীর ৪৫নং মুসলমানপাড়াস্থ স্বামীর পৈত্রিক বাড়ীতে তারই হাত ধরে নববধূ রূপে প্রবেশ করেছিলাম। নব্বই বছর বয়সে এসে নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের সম্প্রতি কারামুক্ত নেতা বেনজির আহমেদ বাচ্চু ও স্থানীয় সন্ত্রাসী চক্রের ইন্দোনে আমার মৃত সন্তানের দু’ সাবেক স্ত্রী দুশ্চরিত্রা নারী কর্তৃক বসতবাড়ী থেকে বিতাড়িত করে জবরদখলের চেষ্টা করছে। এঘটনায় থানায় একাধিকবার লিখিত অভিযোগ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওই স্বার্থন্বেষী সন্ত্রাসীরা আমাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাও মোটা অংকের অর্থে বিক্রি হয়ে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে দুশ্চরিত্রা নারীর পক্ষ নিয়েছে। এতে একদিকে আশ্রয়হীন অন্যদিকে বৃদ্ধ বয়সে জীবনের চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই নিরুপায় হয়ে প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও কেএমপি কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। যাতে ষড়যন্ত্রকারীদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করে আমার বসতবাড়ী উদ্ধার ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়- সেই দাবিই জানাচ্ছি। আমার ছেলে পারভেজ আহমেদ পান্না একবছর আগে ইন্তেকাল করেছে। আমার ছেলে মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রী রুমানা খাতুন (৩৫) ও তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী ঈশিতা আকতার তুলি (৪০) ৪৫নং মুসলমানপাড়াস্থ বসতবাড়ি দখল করতে বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করছে। আমি বাঁধা দেয়ায় তারা আমাকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করতে থাকে। জমি জমা নিয়ে বিরোধ থাকায় ইতিপুর্বে এ বিষয়ে আমার ছেলে শেখ তফসির আহমেদ মিলন আদালতে মামলা দায়ের করে (যার নং ১১৬/২০০৩ দেওয়ানী)। যা বর্তমানে বিচারাধীন। আদালত আমার উক্ত বাড়িতে স্থিতি অবস্থা বজায় রাখতে আদেশ প্রদান করে। আদালতের আদেশ বজায় থাকা অবস্থায় গত ১০ জুন রাত ৮টার দিকে ওই দুশ্চরিত্রা নারীসহ তাদের অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১৫ জন সন্ত্রাসী সহযোগী নিয়ে আমার বাড়িতে আক্রমণ করে। এসময়ে ঘরের তালা ভেঙে বাড়ি দখল করে। আমি বাঁধা দিতে গেলে ওইসব সন্ত্রাসীরা আমার ও আমার পক্ষে আসা প্রতিবেশীদের প্রতি মারমুখী আচরণ করে। একপর্যায়ে আমাকে ধাক্কা নিয়ে ফেলে দেয়। তারা বলতে থাকে- ‘এই বুড়ি মারতে খুনির দায় নেয়া যাবে না। বুড়িকে এমনভাবে মারতে হবে যেনো মনে হয় স্বাভাবিকভাবেই মারা গেছে।’ এঘটনার পরদিন ১১ জুন খুলনা সদর থানায় ও এরআগে ২৯ এপ্রিলও সাধারণ ডায়েরি করেছিলাম। খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি- এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তারা অতিগোপনে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের পাইকগাছা উপজেলার হরিঢালী ইউনিয়নের বেনজির আহমেদ বাচ্চুর ইন্দোনে সন্ত্রাসীদের সহায়তার দুশ্চরিত্রা নারীদের পক্ষাবলম্বন করছে। এখন যে কোনো সময়ে আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের জান ও মালের অপুরণীয় ক্ষতির আশঙ্কায় ভুগছি আমি। উক্ত বাড়ীর বিপরীতে বাটোয়ারা মামলা চলমান; আইন-আদালতের মাধ্যমে যার যা ন্যায্য অধিকার সে সেটাই পাবে, এটাই আমিও চাই। কিন্তু জীবনের শেষপ্রান্তে এসে আমাকে স্বামীর বাড়ী ছাড়া করবে সন্ত্রাসীরা? দেশে কি আইন-আদালত, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নেই? আমার ছেলে মরহুম পারভেজ আহমেদ পান্নার দ্বিতীয় স্ত্রী রুমানা খাতুনের প্রথমপক্ষের একটি ছেলে ও দ্বিতীয়পক্ষের একটি কণ্যা সন্তান আছে। আবার, তালাকপ্রাপ্ত ঈশিতা আকতার তুলির পূর্বের ঘরে দু’ ছেলে-মেয়ে আছে। আমার ছেলের মৃত্যুর পর এরা দু’জনেই পূর্বের স্বামীর কাছে ফিরে গেছে। এ অবস্থায় তাদেরকে বাড়ীর অংশ দিলে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নেতা বেনজির আহমেদ বাচ্চু ও স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের কাছে বিক্রি করবে-এতে বঞ্চিত হবে আমার না বালক নাতী-নাতনীরা। তাই তারা প্রাপ্ত বয়স্ক হলে আদালত কর্তৃক তাদের ন্যায্য অধিকার বুঝিয়ে দিবে, সেজন্যই আদালতের কাজে বাটোয়ারা মামলা করেছি।” তবে এএসআই সৈয়দ আলী ও এএসআই বিবেক বলেন, তারা ৯৯৯ কল পেয়ে ঘটনাস্থলে যান। তারপর মহিলা অভিযোগ দেন। কিন্তু এ ব্যাপারে আদালতে মামলা থাকায় পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে বেশীদুর এগুতে পারিনি। বিবাদীর কাছ থেকে অনৈতিক লেনদেন সম্পূর্ন মিথ্যা বানোয়াট বলে তারা দু’জন দাবি করেন।