জাতীয় সংবাদ

সিন্ডিকেট: চাঁদপুরে ইলিশের দাম নির্ধারণ করতে মন্ত্রণালয়ে চিঠি

প্রবাহ রিপোর্ট : অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে চাঁদপুরের ইলিশের দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে। এ অবস্থায় জাতীয় এ মাছের দাম নির্ধারণের জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। গত মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর এ চিঠি পাঠানো হয় বলে জেলা প্রশাসক নিজেই নিশ্চিত করেছেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীর ইলিশ অত্যন্ত সুস্বাদু এবং মানের দিক থেকেও অতুলনীয়। এরই প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে বাংলাদেশের প্রথম জেলা ব্র্যান্ডিং হিসেবে চাঁদপুর জেলাকে ‘ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর’ হিসেবে সরকার স্বীকৃতি দেয়। এ সুযোগে চাঁদপুর ও আশপাশের জেলার কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী ও আড়তদার নিজের ইচ্ছেমতো দাম হাঁকাচ্ছেন; যা একেবারেই ক্রেতার নাগালের বাইরে। এমনকি চাঁদপুরের স্থায়ী বাসিন্দাদেরও অভিযোগ, চড়া মূল্যের কারণে ইলিশ তাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। জেলা প্রশাসক চিঠিতে উল্লেখ করেন, ইলিশ চাঁদপুরসহ অন্য জেলাতেও ধরা পড়ে। এতে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন থেকে ইলিশের দাম নির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও ফলপ্রসু প্রভাব পড়বে না। চাঁদপুরের পাশাপাশি বরিশাল, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, লক্ষ্মীপুর, ভোলা, নোয়াখালী, বড়গুনা ও ঝালকাঠিসহ আরও অনেক সাগর তীরবর্তী জেলায় ইলিশ ধরা পড়ে। নদী কিংবা সাগরে উৎপাদিত ইলিশে জেলেদের কোন উৎপাদন খরচ লাগে না। এরপরেও ইলিশের দাম অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত থাকে। যেহেতু ইলিশ প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদন হয়, সেহেতু ইলিশ আহরণ ও অন্যান্য আনুসাঙ্গিক ব্যয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে ইলিশের মূল্য নির্ধারণ প্রয়োজন। যদিও সিন্ডিকেট করে ইলিশের দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই বলে দাবি করেছেন চাঁদপুর মৎস্য ও বণিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক হাজী সবেবরাত সরকার। তিনি বলেন, “চাঁদপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে যে পরিমাণ ইলিশের চাহিদা ওইরকম আমদানি হয় না। অল্প কিছু ইলিশ আসে যে কারণে দাম বেড়ে যায়। সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই। স্থানীয় পদ্মা-মেঘনায় আগের মত ইলিশ নাই। “দিনে ৫ থেকে ১০ কেজি ইলিশ আসে আড়তে। যে কেউ দাম নিয়ে মন্তব্য করতে হলে বাস্তবে এসে দেখতে হবে।” বাজারে ইলিশের দাম কত জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমানে এক কেজি ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকায়। আর ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায়। আর এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার টাকায়। চাঁদপুরের বড় স্টেশন মাছঘাট এলাকায় কথা হয় ক্রেতা মো. আবুল কালাম ও মো. হাবিবুর রহমানের সঙ্গে। তারা বলেন, এখন ইলিশের দাম বেশি। কয়েক বছর আগেও সহনশীন ছিল। এক কেজির ইলিশ ১৪’শ থেকে ১৫’শ টাকায় কেনা যেত। এখন সেই এক কেজির ইলিশ আড়াই কিনতে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা গুনতে হয়। ফলে সাধারণ ক্রেতারা ইলিশ কেনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, “জাতীয় মাছ ইলিশের মূল্য নির্ধারণের জন্য বাস্তব চিত্র তুলে ধরে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।”

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button