ইসরায়েলের ‘হৃদপিণ্ডে’ আঘাত হেনেছে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র

# বলেছেন ইসরায়েলি বিশ্লেষক #
প্রবাহ রিপোর্ট ঃ ইরানে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী অভিযান শুরুর পর সাধারণ ইসরায়েলিদের ধারণা ছিল যে সার্বিক পরিস্থিতি ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে আছে। কিন্তু সংঘাতের ষষ্ঠ দিনে ইরান থেকে নিক্ষিপ্ত একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলিদের সেই ধারণাকে নড়বড়ে করে দিয়েছে। ইসরায়েলের প্রথম সারির রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ধারাভাষ্যকার ওরি গোল্ডবার্গ আল জাজিরাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ভোর থেকে ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। এতে ভূখ-টির সামরিক বাহিনীর কমান্ড সেন্টার, গোয়েন্দা বিভাগের সদর দপ্তর এবং সামরিক গোয়োন্দা শাখার শিবির- এই তিন স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে। তিনটিরই অবস্থান ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বিয়ের শেভায়। সামরিক গোয়েন্দা শাখার ক্যাম্প পাশে সোরোকা নামের একটি হাসপাতাল ছিল। ইরানের বোমার আঘাত লেগেছে সেই হাসপাতালেও। এতে কয়েকজন আহতও হয়েছেন।
ওরি গোল্ডবার্গ বলেন, “হাসপাতালে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা ইসরায়েলের সাধারণ বাসিন্দাদের হতবাক করে দিয়েছে। কারণ এতদিন পর্যন্ত তাদের ধারণা ছিল যে সার্বিক পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে। আজ তারা বুঝতে পেরেছে যে এই ধারণা পুরোপুরি সঠিক ছিল না।” “অবশ্য এক্ষেত্রে দায় ইসরায়েলেরও আছে। কারণ ইসরায়েলের বেসামরিক এবং সামরিক স্থাপনাগুলো খুবই কাছাকাছি। ফলে সামরিক স্থাপনাকে টার্গেট করা হলে বেসামরিক স্থাপনায় আঘাত আসার সমূহ আশঙ্কা থাকে।” ইসরায়েলের কমান্ড সেন্টার-গোয়েন্দা দপ্তরে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর কমান্ড সেন্টার, গোয়েন্দা বিভাগের সদর দপ্তর এবং সামরিক বাহিনীর গোয়েন্দা শাখার একটি শিবিরে আঘাত হেনেছে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম ইরনা।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর কমান্ড সেন্টার, গোয়েন্দা বিভাগের সদর দপ্তর এবং সামরিক গোয়োন্দা শাখার শিবির এই তিন স্থাপনার অবস্থান ভূখ-ের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বিয়ের শেভায়। ইরনা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছে ইরানের সামরিক বাহিনী।
“এটা ছিল নিখুঁত এবং সরাসরি আঘাত। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রে এই তিন সামরিক স্থাপনার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।” “গোয়েন্দা বিভাগের সদরদপ্তরের কাছে সোরোকা নামের একটি হাসপাতাল আছে। সেখানে কোনো আঘাত করা হয়নি, তবে ক্ষেপণাস্ত্রের শব্দের শকওয়েভে হাসপাতালটির কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে”, বলা হয়েছে ইরনার প্রতিবেদনে।
ইরান পরমাণু বোমা তৈরি করছে অভিযোগ তুলে গত ১৩ জুন শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টা থেকে ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী (আইএএফ)। এ অভিযানকে ‘অপারেশন দ্য রাইজিং লায়ন’ নাম দিয়েছে ইসরায়েল। এখনও চলছে ‘অপারেশন দ্য রাইজিং লায়ন’। ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি বাহিনীর বোমাবর্ষণে এ পর্যন্ত দেশটিতে নিহত হয়েছে ৬ শতাধিক এবং আহত হয়েছেন ১ হাজার ৩০০ জনের বেশি। এদিকে ইসরায়েলের বিমান বাহিনীর অভিযান শুরুর কয়েক ঘণ্টা পর ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি’ নামের পাল্টা সেনা অভিযান শুরু করে ইরান। গত ৫ দিনে সে অভিযানে আহত ও নিহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন, কিন্তু তাদের হালনাগাদ সংখ্যা প্রকাশ করছে না ইসরায়েল।