জনদাবিতে পরিণত হওয়া জামায়াতের সাত দফা দাবি আদায়ে সকলকে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান

# খালিশপুর থানা ইউনিট প্রতিনিধি সমাবেশ #
স্টাফ রিপোর্টার ঃ
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেছেন, আল্লাহর আইন ও সৎ শাসকের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ছাড়া এই দেশ দারিদ্র্যমুক্ত ও আত্মনির্ভর হতে পারবে না। জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে জামায়াতের পতাকাতলে আসতে হবে। প্রতিটি পাড়ায় মহল্লায়, ঘরে ঘরে ইসলামের সুমহান দাওয়াত পৌঁছাতে হবে। জনতার নেতা, জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমানের ঘোষিত ৭ দফা দাবি জনমানুষের দাবীতে পরিণত করতে হবে। তিনি প্রবাসীদের ভোটাধিকার, অবাধ নির্বাচনের সুযোগ ও সংবিধানের মৌলিক সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে। জামায়াতের সাত দফা বাস্তবায়নই আজ জনদাবিতে পরিণত হয়েছে। সাত দফা দাবি আদায়ে সকলকে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান। তিনি আরও বলেন, দেশে বেকাত্ব ও দারিদ্র বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। তাই দেশকে আত্মনির্ভরশীল ও দারিদ্রমুক্ত করতে আল্লাহর আইন ও সৎলোকের শাসন প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই। তিনি ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে জামায়াতের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। তিনি বলেন, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে যে গণজাগরণ হয়েছে, তা ছিল একটি ঐতিহাসিক বিপ্লব। আমরা কখনো ভাবিনি, স্বৈরাচারী শাসনের অবসান এতটা কাছাকাছি এসে যাবে। কিন্তু সেই সম্ভাবনাকে বাস্তবতায় রূপ দিতে হলে আমাদের আরও ঐক্যবদ্ধ, সচেতন ও সক্রিয় হতে হবে। শনিবার (৫ জুলাই) সকালে খুলনা মহানগরীর খালিশপুর থানা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে স্থানীয় কার্যালয়ে ইউনিট প্রতিনিধি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
খালিশপুর থানা আমীর মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মু. আব্দুল আউয়ালের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম, খালিশপুর থানা সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুর রহিম ও মাওলানা আব্দুল জলিল, থানা ওলামা সেক্রেটারি মাওলানা শাহজাহান আলম। অন্যান্যের মধ্যে থানা কর্মপরিষদ সদস্য কাজী বায়েজিদ, মনতাজুর রহমান, মোল্লা আবুল কাশেম, হাফেজ শহীদুল ইসলাম, মাঞ্জারুল ইসলামসহ খালিশপুর থানাধীন ৯ টি ওয়ার্ডের ইউনিট সভাপতি, সেক্রেটারিসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা মহানগরী আমীর কুরআনের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষার উদাহরণ টেনে বলেন, হজরত মুসা (আ.) যখন সাগর পার হলেন, তখন ফিলিস্তিন দখলের আহ্বানে অনেকেই ভয় বা অবজ্ঞা দেখিয়েছিলেন। এর ফলস্বরূপ তারা ৪০ বছর ধরে গোলামির শৃঙ্খলে বন্দি ছিলেন। আমাদের মাঝেও যদি অলসতা বা বিভাজন কাজ করে, তবে আমরাও আবার নতুন করে নিপীড়নের মধ্যে পড়তে পারি। তিনি আরও বলেন, সুরা বাকারাহতে বলা হয়েছে, তাগুতি শক্তির বিশাল বাহিনী থাকলেও, আল্লাহ অল্পসংখ্যক সত্যবাদী ও ঈমানদার মানুষের মাধ্যমেই বিজয় দিয়ে থাকেন। ইতিহাসে রাসূল (সা.)-এর মক্কা বিজয়ের ঘটনা আমাদের অনুপ্রেরণা। তিনিও নির্যাতিত অবস্থায় মদিনায় হিজরত করেছিলেন, পরে পুনরায় মক্কা জয় করেন। আমরাও গত ১৭ বছর ধরে নির্যাতনের শিকার হয়েছি। এখন সময় এসেছে দ্বীনের জন্য একসাথে কাজ করার। একটি শক্তি অস্ত্র ও অর্থ ব্যবহার করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের চেষ্টা করছে। এটি প্রতিহত করতে আমাদের জীবনের সর্বশক্তি নিয়োগ করতে হবে। আল্লাহর ওপর নির্ভর করে বিজয়ের আশাবাদ নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। নিজেদেরকে আল্লাহর পথে সম্পূর্ণরূপে সঁপে দিতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ইসলামী আন্দোলনের জনশক্তিরা সমাজ পরিগঠনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন। আগামীতে বাংলাদেশকে একটি ইসলামি কল্যানমূলক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে আপনাদের বলিষ্ঠ সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। তিনি বলেন, আর কেউ জনগণের হক্ব নষ্ট করতে আসলে সমুচিত জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি রাখতে হবে এবং আল্লাহর রাস্তায় জান-মাল কুরবানি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।