মুখ দিয়ে লিখে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত অদম্য আত্ববিশ্বাসী লিতুনজিরার বাড়িতে ইউএনও

মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধিঃ অদম্য মেধাবী লিতুনজিরার পাশে থাকবে প্রশাসন। এসএসসিতে জিপিএ-৫.০০পাওয়ার খবর শুনে যশোরের মণিরামপুরের ইউএনও নিশাত তামান্না তার বাড়িতে গিয়ে শুভেচ্ছা জানান ও মিষ্টিমুখ করান। সকল প্রতিবন্ধকতা হার মেনেছে লিতুনজিরার কাছে। জন্ম থেকেই হাত-পা না থাকায় ভেঙ্গে না পড়ে আত্মশক্তি ও প্রবল ইচ্ছা শক্তির মাধ্যমে দিয়ে মুখ দিয়ে লিখে সব শ্রেণিতেই প্রথম,কখনও স্কুল ফার্স্টের গৌরব ধরে রেখেছে সে।সেই ধারাবাহিকতায় পিইসিতে জিপিএ ৫.০০ পাওয়ার পর এবার এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫.০০ পেয়ে চমক দেখিয়েছে লিতুনজিরা। স্থানীয় গোপালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী লিতুনজিরা উপজেলার নেহালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল । উপজেলার শেখপাড়া খানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান ও জাহানারা বেগমের মেয়ে লিতুনজিরা। লিতুনজিরা বলেন,‘আমি সমাজের বোঝা হতে চাই না। লেখাপড়া শিখে আমি মানুষের মতো মানুষ হয়ে আত্মনির্ভরশীলতা অর্জন করে সমাজের সেবা করতে চাই।’আজ এসএসসির ফলাফলে আমি অত্যন্ত খুশি, আনন্দিত। এর জন্য আমার পিতা মাতা,সকল শিক্ষক শিক্ষিকা, সহপাঠী,বন্ধুবান্ধব, গণমাধ্যমকর্মী, বিশেষ করে বসুন্ধরা গ্রুপের কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ। তারা সবসময় আমার পাশে ছিল। লিতুনের বাবা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘লিতুন আমার কাছে বোঝা নয়, বরং তাকে নিয়ে আমি অহংকার করি। আজ এসএসসির জিপিএ পাস পাওয়ার খবরে আমি আনন্দিত আমি সকলের কাছে কৃতজ্ঞ। ওর ভবিষ্যতের জন্য সকলের কাছে দোয়া চাই। লিতুন জিরার মা জাহানারা খাতুন বলেন, লিতুন জিরার আজকের এই ভালো ফলাফলের জন্য আমি আমি অত্যন্ত খুশি হয়েছি, ওর জন্য সকলেই সব সময় দোয়া করেছেন। আমি সকলের কাছে ঋণী। সব সময় আপনারা তার পাশে থাকবেন এই দোয়া চাই। লিতুনের সহপাঠী সজীব হোসেন জানায়,লিতুজিরা আমার খুব কাছের বন্ধু। সে অত্যন্ত মেধাবী।সে জিপিএ ৫ পাড়াতে আমরা খুব খুশি। আমরা সকলেই সর্বদায় তার মঙ্গল কামনা করি। লিতুনজিরার গোপালপুর স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ রেজাউল করিম বলেন, লিতুন অসম্ভব মেধাবী। সে তার শ্রেণিতে শুধু প্রথম নয়, স্কুলের মধ্যেও সে অন্যতম ও অনন্য। শুধু লেখাপড়ায় না, সাংস্কৃতিক কর্মকা-েও অন্যদের চেয়ে ভালো সে। লিতুনজিরা এবার এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অংশ নিয়ে জিপিএ ৫.০০ পেয়েছে। তারে ফলাফলে আমরা সকলেই খুশি। তার ভবিষ্যতে উচ্চ শিক্ষার জন্য দোয়া ও সাফল্য কামনা করি।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না বলেন, কঠোর অধ্যবসায় ও অদম্য ইচ্ছাশক্তি দিয়ে যে সবকিছু অর্জন করা যায় তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত পিতুনজিরা।আমি নেহালপুর স্কুল এন্ড কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে নিয়মিত লিতুনজিরার খোঁজখবর নিয়েছি।তার জিপিএ ৫.০০ পাওয়ার কথা শুনে অত্যন্ত খুশি হয়েছি এবং তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য দোয়া ও সাফল্য কামনা করি। সাথে সাথে জেলা প্রশাসক স্যার তার ফলাফলে খুশি হয়েছেন।তাকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংবর্ধিত করা হবে।লিতুনজিরার পাশে প্রশাসন থাকবে।