একদিনে ডলারের দাম বাড়লো ১ টাকা ৪০ পয়সা

প্রবাহ রিপোর্ট : টানা চারদিন কমার পর আবারও বাড়লো ডলারের দাম। গতকাল মঙ্গলবার দেশের আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের গড় বিনিময় হার এক লাফে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২১ টাকা ১১ পয়সা, যা আগের দিনের তুলনায় ১ টাকা ৪০ পয়সা বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এদিন সর্বনি¤œ ও সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ১২০ টাকা ৮০ পয়সা ও ১২১ টাকা ৫০ পয়সা। গত সোমবার এসব হার ছিল যথাক্রমে ১১৯ টাকা ৫০ পয়সা ও ১২০ টাকা ১০ পয়সা। গত কয়েক দিন রেমিট্যান্স ও রফতানি আয়ের ইতিবাচক প্রবাহে ডলারের দাম পড়তির দিকে ছিল। এতে আমদানিতে স্বস্তি ফিরলেও আশঙ্কা তৈরি হচ্ছিল রফতানি আয় ও প্রবাসী আয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার। এই প্রেক্ষাপটে মুদ্রাবাজারে ভারসাম্য ফেরাতে নতুন কৌশল নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। রোববার প্রথমবারের মতো নিলামের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ১৭ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর ফলে বাজারে চাহিদা সৃষ্টি হয় এবং মূল্যহ্রাসের ধারা থামে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ উদ্যোগই মঙ্গলবারের দরবৃদ্ধির অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে খোলাবাজারে ডলারের দামে এখনও বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না। টাকার বিপরীতে ডলারের দর কমায় আমদানি ব্যয় কমে এলেও দীর্ঘ মেয়াদে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বৈদেশিক আয় খাতে। তাই ভারসাম্যপূর্ণ দর বজায় রাখতে নীতিগত হস্তক্ষেপ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকাররা বলছেন, বর্তমানে আমদানি কার্যক্রমে ধীরগতি, এলসি খোলার হার কমে যাওয়া এবং প্রবাসী আয় ও রফতানি আয়ের ধারা ইতিবাচক হওয়ায় বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। ফলে অনেক ব্যাংক এখন অতিরিক্ত ডলার ধরে না রেখে বিক্রি করতে আগ্রহী। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে, অপ্রত্যাশিত দরপতন রোধ না করলে দীর্ঘ মেয়াদে তা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। অথচ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণই অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। এই বাস্তবতায় বাজার থেকে ডলার কিনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরবরাহের ভারসাম্য রক্ষায় কাজ করছে। বিশ্লেষকদের মতে, নীতি সহায়তার মাধ্যমে একটি নিয়ন্ত্রিত ও স্থিতিশীল বিনিময় হার বজায় রাখা সম্ভব হলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বৈদেশিক খাতে আস্থাও ফিরবে। তবে এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে সাবধানতার সঙ্গে এগোতে হবে, যাতে বাজারে অতিরিক্ত ঝাঁকুনি না পড়ে।