ফুটপাত দখলমুক্ত করতে কঠোর হতে হবে

রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকাগুলোর অনেক জায়গায় সড়কের দুই পাশের ফুটপাত দখল করে বসানো হয়েছে দোকানপাট। কোথাও কোথাও ফুটপাত ছাড়িয়ে মূল সড়কের ওপর বসে গেছে পণ্যের পসরা। বেদখল সড়ক-ফুটপাতে পথ চলতে পথচারীর যন্ত্রণাময়-নাভিশ^াস যেন নিত্যসঙ্গী। যে যার ইচ্ছামতো ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে ব্যবহার করছে, কেউ আবার অনেক এলাকায় নির্মাণসামগ্রী মাসের পর মাস ফেলে রেখে সমস্যার সৃষ্টি করছে। ইট ভাঙার মেশিন, রড, ট্রাক, বাস, প্রাইভেট গাড়িসহ বিভিন্ন যানবাহনও এই সড়ক-মহাসড়কের একটা অংশ বন্ধ করে ফেলে রাখা হয়। শহরে যানজটের একটা বড় কারণ, এই যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং আর ফুটপাত দখল করে স্থায়ী-অস্থায়ী দোকান নির্মাণ। বছরের পর বছর এ রকম চললেও এগুলো দেখার যেন কেউ থাকে না। অবৈধভাবে ফুটপাত দখলে থাকায় চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন পথচারীরা। অনেক ক্ষেত্রে পথচারীদের বাধ্য হয়ে হাঁটতে হয় মূল সড়ক দিয়ে। যার ফলে অনেক সময় ঘটে যায় অনেক অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনা। রাজধানীর ফুটপাত নিয়ে রীতিমতো ইঁদুর-বিড়াল খেলা চলছে। উচ্ছেদের ২৪ ঘণ্টা না পেরুতেই দখল হয়ে যাচ্ছে ফুটপাত। রাজধানীতে ১৬৩ কিলোমিটার ফুটপাত রয়েছে। এর মধ্যে ১০৮ কিলোমিটার দখল করে রেখেছে প্রায় দুই লাখ হকার। নাগরিকদের স্বচ্ছন্দে হাঁটাচলার সুবিধার জন্য ফুটপাত তৈরি করছে সরকার। ঢাকা মহানগরীর প্রায় সব ফুটপাত দিয়ে এখন আর পথচারীদের হাঁটার জো নেই। বেদখলে চলে গেছে বেশির ভাগ ফুটপাত। রাজধানীর নিউ মার্কেট ও বায়তুল মোকাররম এলাকার ফুটপাতে চলাচল কেবলই ক্রেতা আর বিক্রেতার। কারণ এই দুই এলাকার ফুটপাতে সাধারণ পথচারীদের হাঁটাচলা করার সুযোগ নেই। সবই বেদখল দোকানে। প্রায় সাত হাজারের মতো দোকান রয়েছে। এর মধ্যে বায়তুল মোকাররম এলাকার ফুটপাতে রয়েছে আড়াই হাজারের মতো। জনবহুল রাজধানীর প্রধান সমস্যাগুলোর অন্যতম যানজট। অধিকাংশ স্থানে সড়কের পাশে দোকান বসানোয় গাড়ি চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। আবার যানজটের কারণে পথচারীরা ফুটপাতে হেঁটে যাবেন সে সুযোগও নেই। পথচারীদের ভোগান্তিতে রেখে ফুটপাতে ব্যবসা করা কোনোভাবেই বৈধ হতে পারে না। ফুটপাতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের রুটি-রুজিতে আঘাত আসাও সমর্থনযোগ্য নয়। এসব ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করেছি, অবৈধ আর্থিক সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে ফুটপাতে হকারদের সমস্যাটিকে জিইয়ে রাখা হচ্ছে দিনের পর দিন। উপরন্তু দখলের পরিধি দিনের পর দিন বিস্তৃত হচ্ছে। আমরা আশা করি, ফুটপাত নিয়ে জনকল্যাণে তা দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেবে সরকার।