খুলনায় বিষাক্ত মদপানে ৪ জনের মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার : খুলনা মহানগরীর বয়রা পুজাখোলা মোড়ে বিষাক্ত মদ (বাংলা মদ) পান করে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আরও একজন গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন।
নিহতরা হলেন সোনাডাঙ্গা থানার বয়রা সেরের মোড় এলাকার আব্দুর রবের পুত্র বাবু (৫০), বয়রা মধ্য পাড়ার আব্দুস সামাদের পুত্র সাবু (৬০), খালিশপুর জংশন রোডের কালিপদ র পুত্র গৌতম কুমার বিশ্বাস (৪৭) ও বয়রা পাবলিক কলেজ এলাকার তোতা (৬০)। লাইফ সাপোর্টে থাকা ব্যক্তি হলেন, খালিশপুর দাসপাড়ার সনু (৫৮)। তিনি আবু নাসের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর সবাই একসাথে স্থানীয়ভাবে তৈরি বাংলা মদ পান করেছিলেন। এরপরই তারা অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। এদের মধ্যে শুক্রবার তোতা মারা যায়। শনিবার সকালে গৌতম মারা যায়। সাবু এবং বাবু বিকালে মারা যায় । ধারণা করা হচ্ছে, বিষাক্ত মদ পানের কারণেই তাদের মৃত্যু হয়েছে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বিকাল ৪ টা ১৫ মিনিটে ২ জনকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাদের মৃত্যু ঘটে। বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে ডাক্তাররা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন। মৃতদের স্বজনরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই জোর করে হাসপাতাল থেকে মরদেহ নিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
সোনাডাঙ্গা থানার এসআই আব্দুল হাই বলেন, দুপুরে বয়রা এলাকায় তোতা মিয়ার হোটেলে তারা মদ পান করে। পরে তারা গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাদের কয়েকজনকে চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। ওখানে ৪জন মারা যায়। মারা গেলে পরিবারের সদস্যরা তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। সনু নামের এক ব্যক্তির অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে খুলনা বিশেষায়িত হাসাপাতালে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। ঘটনার পরপর পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পুলিশের অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, হাতে বানানো মদ খেয়ে ওই ব্যক্তিদের মৃত্যু হয়েছে। ওই মদের উপাদান ছিল ভারত থেকে আমদানি নিষিদ্ধ এলকোলি নামে একটি মেডিসিন। এর সাথে যুক্ত করা হতো চুনের পানি এবং ঘুমের ট্যাবলেট। যা খেয়ে সহ্য করতে না পেরে মৃত্যু বরণ করেন। ওই পাচজনের ক্ষেত্রে একই অবস্থা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কেএমপির সহকারী পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড সিপি) খোন্দকার হোসেন আহমদ বলেন, বিষাক্ত মত পান করেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এদিকে, আজিবর নামক ব্যক্তির মদ পান করে মৃত্যু হয়েছে কিনা তা নিয়ে কিছুটা সংশয় দেখা দিয়েছে। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ৫ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করলেও আজিবর অসুস্থতাজনিত মৃত্যু বলে দাবি করেছে।
কেএমপির এডিসি (দক্ষিণ) হুমায়ুন কবির জানান, আমরা খোঁজ নিয়েছি আজিবর দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন।
এদিকে সোনাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মো: মিজানুর রহমান ৪ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মৃত বাবু, সাবু, তোতা এবং গৌতম। রাতে সাবু এবং বাবুর লাশ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপতালের মর্গে এনেছে পুলিশ। প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।