কমিশন ছাড়াই এই বরাদ্ধ জেলায় কয়েকশ’ প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন উন্নয়ণ মূলক কাজ হবে

# যশোর জেলা পরিষদের আওতাধীন এডিপি’র ৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকার প্রকল্প বরাদ্দ #
মোঃ মোকাদ্দেছুর রহমান রকি যশোর থেকে ঃ বিগত ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে যশোর জেলা পরিষদের আওতাধীন ৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা বার্ষিক উন্নয়ন বরাদ্ধ (এডিপি) দেয়া হয়েছে। যে বরাদ্ধের অর্থ যশোর জেলা পরিষদের মাধ্যমে জেলার ৮ উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়ন ও মেরামতের কাজে ব্যয় হবে। এই প্রথম যশোর জেলা পরিষদের আওতাধীন এডিপি’র বরাদ্ধ কোন কমিশন ছাড়াই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদ্বয় পেলো। বিষয়টি জেলা পরিষদ সৃষ্টির পর এই প্রথম এক দৃষ্টান্ত।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানাগেছে,বিগত ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে এডিবি’র ৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নে যশোর জেলা পরিষদে দায়িত্বরত প্রশাসক মোঃ আজাহারুল ইসলাম, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আছাদুজ্জামান ও নির্বাহী কর্মকর্তা এস.এম.শাহীন স্বাক্ষরিত উন্নয়ন প্রকল্পের একটি প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে গত এপ্রিল মাসে প্রেরণ করা হয়। উক্ত প্রস্তাব মন্ত্রণালয় কর্তৃক বরাদ্ধ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তা প্রেরণ করেন। প্রস্তাব অনুমোদনসহ অর্থ বরাদ্ধ দেওয়ায় যশোর জেলার ৮ উপজেলা ও পৌরসভার এলাকায় স্থাপিত বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়,মাদ্রাসা, রাস্তাঘাট, ড্রেন নির্মাণ,মসজিদ,মন্দির,গীর্জা,কবরস্থান উন্নয়ন ও সংস্কারের কার্যক্রম শুরু হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে বরাদ্ধ অর্থ দরপত্র,কোটেশন ও সিপিপিসি’র মাধ্যমে বাস্তবায়নের পদ্ধতিতে হবে।
জেলা পরিষদের বিভিন্ন সূত্রগুলো জানিয়েছেন,এই প্রথম যশোর জেলা পরিষদ সৃষ্টির পর বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে কমিশন ছাড়াই বরাদ্ধ পেলো। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের চিত্র ছিল অন্যরকম। তখন জেলা পরিষদের যারা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন তাদের আমলে অধিকাংশ এডিবি’র প্রকল্প পেতে অগ্রীম ২০ থেকে ৩০% কমিশনের অর্থ পকেটে নিয়ে তার পর বরাদ্ধ মিলতো। কমিশনের অর্থ পকেটস্থ করতেন এ পরিষদে কর্মরত কতিপয় কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তারা কমিশনের অর্থ অগ্রীম পাওয়ার পর প্রকল্পের প্রস্তাব লিপিবদ্ধ করতেন।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে,বিগত ২০২৩-২৪ অর্থ বছর ও তার পূর্বের অর্থ বছর গুলোতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠার গুলির বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্প মিলেছে কমিশনের টাকা অগ্রীম দিয়ে। যে খবর যশোরসহ দেশের বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়েছে ঢালাও ভাবে।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আছাদুজ্জামান জানান, বিগত ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে যশোর জেলা পরিষদের আওতাধীন ৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহন করেছেন। প্রকল্প বাস্তবায়নে দরপত্র,কোটেশন ও সিপিপিসি পদ্ধতিতে কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। যশোর জেলার সদর উপজেলার পৌরসভাসহ ১৫টি ইউনিয়ন,শার্শা,চৌগাছা,ঝিকরগাছা,বাঘারপাড়া,অভয়নগর,মণিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গড়ে ওঠা,রাস্তাঘাট,মসজিদ,ঈদগাহ,মন্দির,গীর্জা,স্কুল,মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড বাস্তবায়নে কয়েকশ’ প্রকল্প চিহ্নিত করে মন্ত্রাণালয়ে প্রেরণ করা হয়। মন্ত্রণালয় প্রস্তাব গ্রহন করে বরাদ্ধ অনুমোদনসহ দিয়ে প্রেরণ করেন। চলতি মাসের শুরু থেকে প্রকল্প বাস্তবায়নে জেলা পরিষদ কাজ করছেন। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরো জানান, এই এডিপি’র প্রকল্প বাস্তবায়নে পরিষদের সাথে সম্পৃক্ত কোন কর্মকর্তা কিংবা কোন কর্মচারী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বরত কর্মকর্তার কাছ থেকে কমিশন নিয়েছেন কিনা তিনি তা দেখার জন্য সাংবাদিকদের কাছে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন। তিনি যশোর জেলা পরিষদের মাধ্যমে জেলার বিভিন্ন উন্নয়ন বাস্তবায়নে কাজ করার কথা জানান। তিনি যশোর শহরের এম এম আলী রোডে জেলা পরিষদের নামে জমিতে ব্যয় বহুল বিশাল দৃষ্টি নান্দনিক মার্কেট স্থাপনের কথা জানিয়েছেন। আগামীতে যে মার্কেট নির্মাণে যে উদ্যোগ তিনি গ্রহন করবেন যে উদ্যোগে যশোরের চেহারা পাল্টেযাবে বলে তিনি জানান। এছাড়া,জেলায় এ পরিষদের নামে জমিতে মার্কেট নির্মাণ ও ইতিমধ্যে মার্কেট নির্মাণ করে তা বরাদ্ধ দিয়েছেন। যশোর জেলা পরিষদের জমিতে ডাক বাংলো নির্মাণ করেছেন। আগামীতে আরো কয়েকটি ডাক বাংলো নির্মাণ করা হবে যা দৃষ্টি নান্দনিক হবে। তিনি আরো জানান,জেলা পরিষদের নিজস্ব অর্থ রাজস্ব দিয়ে যশোরে আরো প্রকল্প বাস্তবায়নের একটি রুপ রেখা করছেন। আগামীতে তা বাস্তবায়নে তিনি উদ্যোগ করবেন বলে এ প্রতিবেদককে জানান।