দুইশ টাকার ভিজিটের ফাদেঁ পড়ছে রোগীরা সরকারী হাসপাতাল ঘিরে দালাল চক্র দৌরাত্ম থামছেনা

শেখ ফেরদৌস রহমান : খুমেক হাসপাতালে আমেনা বেগম এসেছিলেন তার মাথা ব্যাথা নিয়ে। তবে হাসপাতালটির টিকিট কাউন্টারের সামনে টিকিট সংগ্রহ করার সময়ে কথা একা নারীর সাথে। তিনি বলেন, এখানে রোগীর অনেক লাইন দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে। এই হাসপাতালে চাকুরী করতেন সাবেক আরএমও ডাঃ মাহাবুবুর রহমান ফারাজী স্যার আছেন। খুব ভালো চিকিৎসক। তার ঁিফ মাত্র দুইশ টাকা এভাবে তাকে বুঝিয়ে নেয়া হাসপাতালটির সামনে উদয়ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। সেখানে চিকিৎসক তার কথা শুনে প্রায় দশ হাজার টাকার বিভিন্ন শারীরিক পরিক্ষা করতে নির্দেশনা দেন। মাথার সিটিস্ক্যানসহ এমন কোন পরীক্ষা নেই যে তিনি নির্দেশনা করেনি। আমার মায়ের কাছে বেশি টাকা না থাকায় তারা বাকিতে করে দিতে আগ্রহ প্রকাশ করে। আর বলে রিপোর্ট নেয়ার সময় বাকি টাকা দিয়েন এখন যা আছে আপনি দিয়ে পরীক্ষা করে যান। এর ডাঃ রিপোর্ট দেখে ওষুধ দিবে। এভাবে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ সরকারী খুলনা বিশেষায়িত হাসপাতালেও চলছে এমন কাজ। আর এ্ই দুইশত টাকার চিকিৎসকের ফি আর এই কম টাকায় বড় ডিগ্রীধারী চিকিৎসকের ভিজিটের কথা শুনে দালালদের খপ্পরে পরে নিঃস্ব হচ্ছে সহজ সরল গ্রামের রোগীরা। এমনকি এই চক্রের পিছনে মদদ দিচ্ছে প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকেরা। কোনভাবে এদের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছেনা। এসব প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারগুলোর বিরুদ্ধে । এক প্রকার নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে চলছে এদের দৌরাত্ম কার্যক্রম । নগরীর অলিগলিতে কোন রকম বাসা বাড়ী ভাড়া নিয়ে বাহারী নামে চালিয়ে যাচ্ছে এই চিকিৎসা সেবার নামে গলাকাটা বাণিজ্য। পাশাপাশি নগরী ও জেলা শতকরা ৫০ শতাংশ এসব ব্যাক্তিগত সেবা কেন্দ্র গুলোর নেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন । আর কিছু স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন থাকলেও মানা হচ্ছেনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নীতিমালা। এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে আরও ভয়াবহ অবস্থা রোগীরা হচ্ছে প্রতারিত। একই কথা বলেন, খুলনা বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজন মো: মেহেদী তিনি বলেন, আমি খুলনা বিশেষায়িত হাসপাতালে আমার নানিকে নিয়ে এসছিলাম চিকিৎসা নিতে। এসময় ্েক নারী এসে বলে ভাই এখানে আপনার অনেক বিলম্ব হবে ডাঃ দেখাতে আপনি আমার সাথে আসেন দুইশ টাকা দিবেন উপরে ডাঃ আরিফ স্যার আছেন স্যার দেখে দিবে। আমি ভাবলাম মাত্র দুইশ টাকা তাহলে লাইনে দাড়িয়ে সময় নষ্ট না করে রাজি হই। এর পর ডাঃ আরিফ আমার নানির সমস্যার কথা শুনে। প্রায় তিন হাজার টাকার বিভিন্ন পরীক্ষা দেন। আর সাথে থাকা নারী বলেন, আসেন বাহিরে আমাদের ভালো আমাদের শেখ ডায়াগনস্টিক সেন্টার আছে এখনই রিপোর্ট করে দেখিয়ে ওষুধ দিয়ে দেবে স্যার। এভাবে চলছে খুলনা সরকারী হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম। এছাড়া এসব মানহীন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে দেয়া হচ্ছে মনগড়া পরীক্ষার রিপোর্ট বলে অভিযোগ আছে। এ বিষয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মুহসিন আলী ফারাজি বলেন, আমরা আনসার দিয়ে ও প্রশাসন দিয়ে অভিযান চালিয়েছি। তবে আবারও এই দালালদের কাজ শুরু করে। আমি বিষয়টি দেখছি। এ বিষয়ে খুলনা বিশেষায়িত হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ শেখ আবু শাহীন বলেন, আমরা দালাল নিয়ন্ত্রেনে মাইকিং করছি। এছাড়া তারা বেশ কয়েকবার পুলিশের হাতে ধরা খেয়ে আবারও জামিনে বের হয়ে এসব কাজ করে। আমি দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছি যেন কোন দালাল যে হাসপাতালে প্রবেশ না করে।