দুই দিনের ব্যবধানে ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের দুই শীর্ষ মন্ত্রী

প্রবাহ রিপোর্ট : দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনরুজ্জীবনের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে, যখন পাকিস্তানের দুই শীর্ষ মন্ত্রী মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে ঢাকায় আসবেন। পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান ২১ আগস্ট চার দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছাবেন। দুই দিনের সফরে ঢাকা আসছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, যিনি ২৩ আগস্ট ঢাকায় আসবেন। ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রগুলো গতকাল বৃহস্পতিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ইসহাক দারের সফরের সময়সূচি আগে থেকেই নির্ধারিত থাকলেও, গত বুধবার পাকিস্তানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয় যে জাম কামাল খানও ২১ থেকে ২৪ আগস্ট ঢাকায় সফর করবেন। এই সফরগুলো ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর দুই দেশের নানা পর্যায়ের আলোচনাকে ত্বরান্বিত করার অংশ হিসেবে এসেছে। দুই দেশের দেড় দশকের শীতল সম্পর্ক পুনরুজ্জীবনের লক্ষ্যে গত এপ্রিলে ঢাকায় এসেছিলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ। ইসহাক দারের এই সফর রাজনৈতিক স্তরের ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারের দিকে নজর রাখবে বলে কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে ইসহাক দারের আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে ২৪ আগস্ট। এটি দীর্ঘ সময় পর দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে। বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক বিনিময়সহ একাধিক সমঝোতা স্মারকে সইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দুই দেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমির মধ্যে সহযোগিতা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের চুক্তি। জাম কামাল খানের চার দিনের সফর মূলত ব্যবসা ও বাণিজ্য সম্প্রসারণে কেন্দ্রিত থাকবে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যবিষয়ক জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের সমঝোতা স্মারক সইয়ের জন্য চূড়ান্ত হয়েছে। সমঝোতা স্মারকের অধীনে এই ওয়ার্কিং গ্রুপের নেতৃত্ব দেবেন দুই দেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবরা। কূটনৈতিক সূত্রের খবর অনুযায়ী, জাম কামাল খান ও ইসহাক দারের সফরের পর পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মুহাম্মদ আওরঙ্গজেবও ঢাকায় আসতে পারেন। সেপ্টেম্বর বা অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিতব্য দুই দেশের যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) বৈঠকে তিনি অংশ নেবেন। সর্বশেষ জেইসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০০৫ সালে। গত মাসে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন রাজা নাকভির ঢাকার সফরের পর দুই দেশের কূটনৈতিক ও সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি চুক্তি চূড়ান্ত করার বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে। রাজনৈতিক অনুমোদন মিলে ইসহাক দারের সফরের সময়ই এই চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক পথেই এগোচ্ছি। ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানুষের চলাচল সহজ করার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। অতীতে অকারণে যে বৈরী পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, তা থেকে আমরা সরে এসেছি। তবে অমীমাংসিত তিনটি বিষয় আলোচনার টেবিলে থাকবে।’