ইলিশের প্রজনন মৌসুম শুরু, বাজারে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য!

মনিরুজ্জামান বটিয়াঘাটা (খুলনা থেকে) ঃ ইলিশের প্রজনন রক্ষায় আজ ৪টা অক্টোবর শনিবার থেকে পদ্মা-মেঘনা সহ দেশের নদ-নদীতে সব ধরনের মাছ ধরায় সরকারিভাবে নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বটিয়াঘাটা উপজেলার সকল নদ নদীতেএই নিষেধাজ্ঞা চলবে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। (সাধারণত ২২ দিন)। এই সময়কালে জেলেদের জন্য সরকারিভাবে সহায়তা ও বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও রাখা হয়। তবে ঠিক এই নিষেধাজ্ঞার আগমুহূর্তে দেশের বিভিন্ন বাজারে ইলিশ মাছের দাম হঠাৎ আকাশচুম্বী হয়ে উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। ফলে সাধারণ ক্রেতারা চড়া দামে ইলিশ কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। আর এই সুযোগে ইলিশ সিন্ডিকেট চক্রের দৌড়ত্ব শুরু হয়েছে। বাজারগুলোতে মাছ সিন্ডিকেট করতে শুরু করেছে তারা। ইলিশের প্রজনন রক্ষায় আজ শনিবার ৪টা অক্টোবর দেশের সকল নদ নদী থেকে সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শুরু হবে। ঠিক তারই আগমুহূর্তে দেশের বিভিন্ন বাজারে গুলোতে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ মাছ। বড় সাইজ (১কেজির) উপর ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫ শ থেকে ৩ হাজার টাকা দরে। গতকাল
উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ও মাছের আড়টে (কাটায়) গিয়ে দেখা যায়, চড়া দামে মাছ বিক্রির হিড়িক। দেখা যায়, ইলিশ মাছ কিনতে আসা ক্রেতাদের বাজারে উপচে পড়া ভিড়। ক্রেতাআশিকুল ইসলাম বলেন, কাল থেকে ইলিশ মাছ ধরার উপরে নিষেধাজ্ঞা আসছে, তাই বাজারে আসছিলাম মাছ কিনতে কিন্তু দেখি আকাশচুম্বি মাছের বাজার মা,ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা আসবে। যে কারণে দামদরে পোশালে কিছু মাছ কিনে রাখবো বেশি করে। তবে মাছের চাইতে ক্রেতার সংখ্যাই বেশি। যে কারণে ইলিশ মাছের দাম কমার কোন সুযোগ নেই। মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান দুলু বলেন ছোট ও মাঝারি সাইজের ইলিশের দাম একটু কম। মৎস্যজীবী ও জেলেরা ইলিশ ধরে বিক্রির জন্য সরাসরি বিভিন্ন হাটবাজার ও মাছের আড়টে নিয়ে আসে। এখানে বরফ ছাড়া তাজা ইলিশ পাওয়া যায়। যে কারণে এখানে আসি। তবে বাজেটের সাথে মিল না হওয়ায় কেনা সম্ভব হয়নি। নদীতে নিয়মিত মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ কারী মহিলা জেলে রিনা মন্ডল বলেন, গত কয়েকদিন ইলিশ কম পাওয়া যাচ্ছে। যে কারণে ছোট সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮শত থেকে শুরু করে হাজার ১৩শত টাকা। ৭শত থেকে ৯শত গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮শ থেকে শুরু করে ২৪শত টাকা পর্যন্ত । আর এক কেজির উপর পর্যন্ত ওজনের প্রতিকেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২২ থেকে ৩ হাজার টাকা দরে। এক মৎস্য আড়ৎদার জাকির শেখ, বলেন, এবার মৌসুমে কম-বেশি ইলিশ পাওয়া গেছে। তবে তাজা ইলিশের চাহিদা বেশি থাকায় দাম কমেনি। বড় সাইজের ইলিশের চাহিদা দেশজুড়ে। যারা অনলাইনে ইলিশ বিক্রি করেন তারাও অনেকে এখান থেকে এসে নিয়ে যায়। বটিয়াঘাটা মৎস্য কর্মকর্তা মো :সেলিম সুলতান বলেন, সচেতনতার জন্য মাইকিং, লিপ্লেট বিতরণ করা হচ্ছে। ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয় ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য। যা দীর্ঘমেয়াদে আমাদের সবার জন্যই লাভজনক। আমাদের মোবাইল কোট অব্যাহত থাকবে। নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, এই নিষেধাজ্ঞার সুযোগ নিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট গড়ে তোলে এবং বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ইলিশের দাম বাড়িয়ে দেয়। এটি এক ধরনের ভোক্তা ঠকানো ও অসাধু ব্যবসাচার। এদের বিরুদ্ধে মৎস্য অফিসের পক্ষ থেকে অভিযান অব্যাহত থাকবেন।