স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠাসহ ৫ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে খুলনায় সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার ঃ স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা, সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকের এন্ট্রিপদ নবম গ্রেডে উন্নীত করে চার স্তরীয় পদসোপান ও অনতিবিলম্বে আঞ্চলিক উপ-পরিচালকের প্রশাসনিক এবং আর্থিক ক্ষমতা সংরক্ষণসহ মাধ্যমিকের সকল কার্যালয়ের স্বাতন্ত্র ও মর্যাদা রক্ষা, বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখার সকল শুন্যপদে নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন এবং বকেয়া সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেলের মঞ্জুরি আদেশ প্রদানসহ ৫ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও এন্ট্রিপদ নবম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ খুলনা অঞ্চল। রোববার খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ূন কবীর বালু মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও এন্ট্রি পদ নবম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ খুলনা অঞ্চল কমিটির সদস্য সচিব ও সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো: ওমর ফারুক। সংবাদ সম্মেলনে আগামী ১৯ অক্টোবরের মধ্যে আমাদের দাবি বাস্তবায়নে কার্যকর গ্রহণ করা না হলে দাবি আদায়ে মানববন্ধন, বিভাগীয় শিক্ষক সমাবেশ এবং ঢাকায় মহাসমাবেশ আয়োজনসহ আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বিগত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রীদের কলেজ প্রীতির কারণে জাতীয় শিক্ষা কমিশন ২০০৩ সালে (অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মিয়া) কমিশনের সুপারিশ ও শিক্ষানীতি ২০১০-এ সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকা মাধ্যমিকের উন্নয়নে আলাদা মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বাস্তবায়নের কোন উদ্যোগই গ্রহণ করেনি। এ সময়ে মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠনগুলো একাধিকবার সংবাদ সম্মেলন এবং মানববন্ধনের মাধ্যমে আলাদা অধিদপ্তরের দাবি জানালেও সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়োজিত মন্ত্রিবর্গ শিক্ষকদের এ ন্যায্য দাবিকে আমলে নেননি! গত বছর জুলাই বিপ্লবের পর ৪ সেপ্টেম্বর সচিব কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে সংস্কার পরিকল্পনা প্রণয়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়। সেই আলোকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ ২০২৪ সালের ২৪ নভেম্বর সংস্কার পরিকল্পনা দাখিল করে। যেখানে মাউশিকে দুটি অধিদপ্তরে রুপান্তরের প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত ছিল।
উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, ইতোপূর্বে ২০১০ সালের শিক্ষানীতির আলোকে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত ও কর্মমুখী করতে ২০১৫ সালে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর নামে আলাদা একটি অধিদপ্তর করা হয়। একই সাথে কারিগরি শিক্ষার জন্য আলাদা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বর্তমান অন্তর্র্বতী সরকারের সাবেক শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডঃ ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ এবং তৎকালীন শিক্ষা সচিব ডঃ শেখ আব্দুর রশিদ (বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিব)’র সঙ্গে দেখা করে বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে আলাদা অধিদপ্তরের যৌক্তিকতা এবং গ্রাউন্ড তুলে ধরে অন্তবর্তী সরকারের এই সময়ে মাধ্যমিকের জন্য স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার জোর দাবি জানানো হয়। শিক্ষা উপদেষ্টা এবং শিক্ষা সচিব শিক্ষক নেতৃবৃন্দকে তাদের যৌক্তিক দাবি এবং জাতীয় শিক্ষা কমিশন ২০০৩ ও ২০১০ এর শিক্ষানীতির ফান্ডামেন্টাল দিক বিবেচনা করে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হবে মর্মে আশ্বস্ত করেন। তারই অংশ হিসেবে ৩ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করা হয়। এছাড়া অন্যান্য কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় ৩ আগস্ট শিক্ষা উপদেষ্টা এবং বিদায়ী সচিব এর স্বাক্ষরে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর অধিদপ্তর আলাদা করার সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করা হয়েছে। যা অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। কিন্তু বিভিন্ন সূত্রে প্রকাশ হচ্ছে যে, এটি যাতে না হয় একটি মহল সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যা খুবই দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত। এ অবস্থায় প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদিত এবং সকল শিক্ষা কমিশন কর্তৃক সুপারিশকৃত মাধ্যমিকের জন্য আলাদা অধিদপ্তরের গেজেট চলতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে প্রকাশের জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে খুলনা অঞ্চল কমিটির আহবায়ক ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার আঞ্চলিক উপ-পরিচালক মো: কামরুজ্জামান, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো: সাইদুর রহমান, খুলনা জেলা কমিটির আহবায়ক ও খুলনা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো: ফারুকুল ইসলাম, বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির খুলনা অঞ্চলের সাবেক সভাপতি ও স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটির আহবায়ক মমতাজ খাতুন, খুলনা জেলা বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব মো: সাইফুজ্জামান, অঞ্চল কমিটির সদস্য (দপ্তর) মলয় কান্তি গাইন, সদস্য (অর্থ) মাসুম বিল্লাহ, সহকারী শিক্ষক তাজাম্মুল হক, খুলনা মহানগরীর সরকারি স্কুলসমূহের প্রধান শিক্ষকগণ এবং অন্যন্য শিক্ষক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের খুলনা অঞ্চল কমিটির আহবায়ক মো. কামরুজ্জামান, খুলনা জেলা কমিটির আহবায়ক আহবায়ক মো. ফারুকুল ইসলাম, মমতাজ খাতুন, মো. সাইফুজ্জামান, মলয় কান্তি গাইন, মাসুম বিল্লাহ, তাজাম্মুল হক প্রমুখ।