জাতীয় সংবাদ

তামাকজনিত রোগে দেশে প্রতিবছর ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু

মৃত্যুর মিছিল থামাতে আইন সংশোধনের দাবি
পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে ধূমপানের স্থান বাতিলসহ ৬ প্রস্তাবনা
আইন সংশোধনে তামাক কোম্পানির সম্পৃক্ততা বন্ধের আহ্বান

প্রবাহ রিপোর্ট : অধূমপায়ী ও তরুণ প্রজন্মকে তামাকের ক্ষতি থেকে রক্ষায় বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাসের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএইচআরএফ)। একইসঙ্গে আইন সংশোধন প্রক্রিয়ায় তামাক কোম্পানিগুলোর সম্পৃক্ততা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে আয়োজিত ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন: এফসিটিসি অনুচ্ছেদ ৫.৩ বাস্তবায়নে রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানায় বিএইচআরএফ। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সহযোগিতায় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিএইচআরএফ সভাপতি মো. রাশেদ রাব্বি। তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ তামাক ব্যবহার করেন, যা মোট জনসংখ্যার ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ। একইসঙ্গে প্রতি ১০ জনে ৪ জন পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন। তিনি জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু উপদেষ্টা কমিটি সম্প্রতি তামাক কোম্পানির সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা এফসিটিসি অনুচ্ছেদ ৫.৩-এর সরাসরি লঙ্ঘন।
রাশেদ রাব্বি বলেন, এই অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনো দেশের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বা নীতি প্রণয়নে তামাক কোম্পানি বা তাদের সহযোগীদের মতামত গ্রহণযোগ্য নয়। বাংলাদেশ এ চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তাই সরকারের উচিত এ নীতির পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, তামাকজনিত রোগ যেমন- হৃদরোগ, স্ট্রোক ও শ্বাসতন্ত্রের অসুখের কারণে দেশে প্রতিবছর ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ অকালে মারা যান। এই মৃত্যুমিছিল থামাতে হলে আইনটি দ্রুততম সময়ে সংশোধন করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে এফসিটিসির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ছয়টি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো- অধূমপায়ীদের সুরক্ষায় সব পাবলিক স্থান ও গণপরিবহনে ধূমপানের নির্ধারিত স্থান বাতিল; বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকপণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ; তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম নিষিদ্ধ; ই-সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শিশু-কিশোরদের সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ; তামাকপণ্যের খুচরা ও খোলা বিক্রয় বন্ধ এবং সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হাসান সোহেল। এ সময় ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির উপদেষ্টা মো. নাইমুল আজম খান, প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর ডা. অরুনা সরকার, সিনিয়র কমিউনিকেশন অফিসার আবু জাফর, বিএইচআরএফ সদস্যরা এবং তামাকবিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button