স্থানীয় সংবাদ

মোল্লাহাটে মা-ইলিশ সংরক্ষণ ও অবৈধ পুশিং অভিযানে ১শ কেজি মাছ জব্দ

মোল্লাহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি : বাগেরহাটের মোল্লাহাটে মা ইলিশ সংরক্ষণ ও অবৈধ জেলি পুশ বিরোধী অভিযানে চার কেজি মা ইলিশ ও ছিয়ানব্বই কেজি চিংড়ি সহ মোট ১’শ কেজি মাছ জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত (পুশিং) চিংড়ি জনসম্মুখে পুড়িয়ে বিনষ্ট এবং পুশ ছাড়া মাছ নিলামে বিক্রি করে সমুদয় অর্থ সরকারের রাজস্ব খাতে জমা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) বিকাল ৪ টায় মোল্লাহাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মা ইলিশের প্রজনন মৌসুমকে পুঁজি করে অবৈধভাবে ইলিশ বিক্রি ও চিংড়িতে অবৈধ জেলি পুশের অভিযোগে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার(ভূমি) সুস্মিতা সাহা।
এ বিষয়ে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রাজিব রায় জানান, মা ইলিশ সংরক্ষণের লক্ষ্যে একটি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। মোল্লাহাট বাজারে মা ইলিশ বিক্রি করার সময় একজন বিক্রেতাকে আটক করা হয়। আটককৃত মাছ বিক্রেতার নাম মনিরুজ্জামান (৩৫) তিনি উপজেলার গিরিশ নগরের বাসিন্দা। অভিযানের পরে তাকে ৩ হাজার টাকার জরিমানা করা হয় এবং তাঁর কাছ থেকে ৪ কেজি মা ইলিশ জব্দ করা হয়। অপর এক অভিযানে উপজেলার গাওলা ইউনিয়নের নাশুখালী বাজারে অভিযান পরিচালনা করে ৯৬ কেজি বিষাক্ত জেলি পুশকৃত চিংড়ি জব্দ করা হয়। জব্দকৃত (পুশিং) চিংড়ি জনসম্মুখে পুড়িয়ে বিনষ্ট এবং পুশ ছাড়া মাছ নিলামে বিক্রি করে সমুদয় অর্থ সরকারের রাজস্ব খাতে জমা করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, চিংড়িতে যে অপদ্রব্য পুশ করা হয়, যে পাউডার ব্যবহার করা হয় তা আমাদের মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর যা মানবদেহে ক্যান্সার সহ নানা রোগ সৃষ্টি করে। আমরা এই অভিযানের মাধ্যমে জনসচেতনতা বাড়াতে চাই এবং অসাধু ব্যক্তিদের এই খারাপ পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে চাই, আমাদের এই অভিযান চলমান থাকবে এবং অসাধু চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এখন থেকে আমরা নিয়মিতভাবে এরকম অভিযান চালিয়ে যাব।

স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে এই অভিযানে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। কিছু লোক এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়ে বলেন মা ইলিশ আমাদের অঞ্চলের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, তাই এর সুরক্ষা অপরিহার্য। তবে, কিছু বিক্রেতা অভিযোগ করেছেন যে, প্রশাসন শুধুমাত্র ছোট ব্যবসায়ীদের টার্গেট করছে এবং বড় ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না।
নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার(ভূমি) সুস্মিতা সাহা জানান, মা ইলিশের সংরক্ষণ অভিযানে সরকারের কঠোর অবস্থানের ফলে স্থানীয় জনগণের মধ্যে একটি সচেতনতা তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, এই উদ্যোগ ইলিশের প্রজনন ও সুরক্ষাকে সঠিক পথে পরিচালিত করবে এবং চিংড়ি মোল্লাহাটের একটি ব্র্যান্ড। বিশ্ববাজারে এর বিশাল চাহিদা রয়েছে। এই সুযোগে কিছু অসাধু ব্যক্তি সামান্য লাভের আশায় জেলি পুশকরে এই ব্র্যান্ডকে কলুষিত করছে। এই পুশকৃত চিংড়ি যেমন স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ তেমনি রপ্তানি বাজারেও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। দেশ ও জাতির সার্থে উপজেলা প্রশাসন এবিষয়ে জিরো টলারেন্স। ভবিষ্যতে যদি কেউ এসকল অপকর্ম চালিয়ে যেতে চেষ্টা করে তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button