জাতীয় সংবাদ

ভারতীয় আধিপত্যবাদ কোনো ফরম্যাটে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে না: হাসনাত

প্রবাহ রিপোর্ট : বাংলাদেশে ভারতীয় আধিপত্য কোনো ফরম্যাটে, কোনো ব্যক্তি, কোনো ইনস্টিটিউশন, টক-শোজীবী বা পেশাজীবীর মাধ্যমে কোনোভাবেই আর কখনো প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যে নামেই থাকুক না কেন, ফ্যাসিস্টদের কোনো জায়গা বাংলাদেশে হবে না। এখন জাতীয় পার্টি নামে কুলাঙ্গাররা আবার ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। ওসমান হাদির রক্তের শপথ, ওদের বাংলাদেশে এক ইঞ্চিও জায়গা দেওয়া হবে না। গতকাল শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত এক নাগরিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলির প্রতিবাদে ‘বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাবেশ ও গণ প্রতিরোধ’ শীর্ষক এই সমাবেশের আয়োজন করে সংগঠনটি। সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, ডাকসুর সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক এবি জুবায়ের প্রমুখ। হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমরা এখন আওয়ামী লীগের সঙ্গে পরোক্ষভাবে সবাই পরকীয়া করছি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় এসে আওয়ামী লীগ এখন মিছিল করে, মিটিং করে। গত ১৭ বছর তারা আওয়ামী লীগ নামে দেশ চালিয়েছে, এখন তারা হয়ে গেছে আওয়ামী লীগের শিক্ষক, টকশোর বুদ্ধিজীবী, সাংস্কৃতিক কর্মী, নাট্যকর্মী। প্রতিবাদ সমাবেশে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, বাংলাদেশ ৫ আগস্টের অতীতে ফিরে যাবে না, আওয়ামী লীগ ফিরে আসতে পারবে না। বাংলাদেশের ওপর দিল্লির দাসত্ব কায়েম হবে না। বাংলাদেশের কোনো ‘সুশীল সাংবাদিক’ এ দেশের আজাদির লড়াই দিল্লির কাছে বেচে দিতে পারবে না। তিনি আরও বলেন, যারা বাংলাদেশের আনাচে-কাঁনাচে, প্রান্তে, অলিতে-গলিতে, টং দোকানে ঘুরে বেড়ায়নি। তারা বাংলাদেশের আজাদির আকাঙ্ক্ষা বোঝে না। যারা হাদি নামটাও ঠিকভাবে উচ্চারণ করতে পারে না, যারা ইনকিলাব মঞ্চের নামই শোনেনি, তারা বাংলাদেশে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাবে। এটাই আগামী দিনের রাজনীতির মূল তত্ত্বকথা। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেন, জুলাইয়ের অংশীজনদের মধ্যে বিভাজন নতুন করে পরাজিত শক্তিকে বাংলাদেশে পুনর্বাসনের একটি পথ তৈরি করছে। আমরা চিৎকার করেছি, অনেক বলেছি; কিন্তু মনে হচ্ছে জুলাই বিপ্লবের অংশীজনদের এই কথাটি বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছি। তিনি বলেন, শরিফ ওসমান হাদির রক্ত, তার মাথায় বিদ্ধ এই বুলেট অন্তত এখন যদি জুলাই বিপ্লবের সব অংশীজন, বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে যারা মজলুম হয়েছেন এই সব পক্ষ নিজেদের আবার একটু খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করেন, জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে হৃদয়ের গহিন থেকে আরেকবার জাগ্রত করেন, তাহলে আগামীর বাংলাদেশ বেঁচে যাবে। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল শাহবাগ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলকে আমরা ঢালাওভাবে সন্দেহের চোখে দেখছি না, আবার কাউকেই সন্দেহের বাইরে রাখছিও না। আমরা কাউকে নির্বিচারে দোষারোপ করার পক্ষপাতী নই। আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে বিশ্বের যেকোনো দেশে চিকিৎসার জন্য পাঠাতে তারা প্রস্তুত রয়েছেন। তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছি। গোয়েন্দা সংস্থা আমাদের কাছে অপরাধী শনাক্তের জন্য ফুটেজ চায় তাহলে গোয়েন্দাদের কাজ কী? ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে তারা সক্ষম হয়নি। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ নির্বাচন আয়োজনের কথা বলছে; অথচ ঢাকা-৮ আসনের একজন প্রার্থীকে প্রকাশ্যে গুলি করা হয়। আগামী ১৫ তারিখ আমরা সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছি। সেখানে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির নেতাকর্মীরা সংহতি প্রকাশ করবেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button