জাতীয় সংবাদ

আমার ভাইয়ের ‘বদলা’ নিতে এসেছি: ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব

প্রবাহ রিপোর্ট : ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির দাফনের পর সহযোদ্ধাদের শাহবাগে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্লাটফর্মটির সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল জাবের। গতকাল শনিবার দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় হাদির জানাজা পূর্ব বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমরা এখানে কি কান্নার জন্য এসেছি? আমরা এখানে কিসের জন্য এসেছি?“আমার ভাইয়ের বদলা নেওয়ার জন্য আজকে আমরা এখানে এসে উপস্থিত হয়েছি।”হাদির হত্যার বিচারের দাবিতে কোনো ধরনের সহিংসতার আহ্বানে সাড়া না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে জাবের বলেন, ইনকিলাব মঞ্চ থেকে সব ধরনের সিদ্ধান্ত জানানো হবে। হাদির জানাজা ও দাফন শেষে সবাইকে শাহবাগে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। আক্রমণের এক সপ্তাহ পেরোলেও হাদির হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়নি উল্লেখ করে জাবের বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরীকে এক সপ্তাহর নেওয়া পদক্ষেপ জনগণকে জানাতে হবে। এর আগে বক্তব্য দেন ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন। তিনি হাদির জন্য সবার কাছে দোয়া চান। জাবেরের পর বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, “প্রিয় ওসমান হাদি, তোমাকে আমরা বিদায় দিতে আসি নাই এখানে। তুমি আমাদের বুকের ভেতরে আছো। এবং চিরদিন, বাংলাদেশ যতদিন আছে, তুমি সকল বাংলাদেশির বুকের মধ্যে থাকবে। এটা কেউ সরাতে পারবে না।”এরপর বক্তব্য দেন হাদির বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক, যিনি হাদির জানাজার নামাজে ইমামতিও করেন। ওসমান হাদির রেখে যাওয়া আট মাসের শিশু সন্তানের কথা তুলে ধরে আবু বকর সিদ্দিক বলেন, “এই আট মাসের সন্তানকে তিনি রেখে গেছেন। সন্তানের নামকরণের আগে ওসমান হাদি আমাকে যা বলেছিলেন, সেই স্মৃতি আজ বারবার মনে পড়ছে।”হাদির বড় ভাই বলেন, “তুমি (হাদি) স্বাধীনতা রক্ষার জন্য এই বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটি মেসেজ দিয়েছিলে-কীভাবে একটি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হয়।”গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর সোয়া ২টার দিকে রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে রিকশায় করে যাওয়ার সময় ওসমান হাদির উপর আক্রমণ হয়। ওই সময় মোটরসাইকেলে করে এসে দুজন তাকে খুব কাছ থেকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। একপর্যায়ে পরিবারের ইচ্ছায় তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এরপর সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তার চিকিৎসা চলে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত সোমবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে হাদিকে সিঙ্গাপুর নিয়ে যাওয়া হয়েছিল; সেখানেই গত বৃহস্পতিবার তার মৃত্যু হয়। ওসমান হাদির কফিন সিঙ্গাপুর থেকে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকায় পৌঁছার পর রাখা হয়েছে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘরে। গতকাল শনিবার দুপুর ২টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ওসমান হাদিকে জানাজার জন্য আনা হয়। জানাজায় অংশ নিতে দেশের রাজনীক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তি ও জনসাধারণের ঢল নামে মানিকমিয়া অ্যাভেনিউয়ে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button