স্থানীয় সংবাদ

লবণচরায় ওহাব জুট মিলের বিরুদ্ধে হয়রাণী ও জোর পূর্বক জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ

ভুক্তভোগীর সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার : নগরীর লবণচরায় ওহাব জুট মিলের বিরুদ্ধে হয়রানী ও জোর পূর্বক জমি দখলের চেষ্টা ও হয়রানির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২ টায় খুলনা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী বকুল বেগম।
লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, ভুক্তভোগী বকুল বেগম ২০০৩ সালে আসমত আরা খানম এর নিকট থেকে ২০৮ নং দাগ ও ১০৫১৮ নং দাগে ০.০৬৬০ একর জমি ক্রয় করে ২০১৬ সাল পর্যন্ত খাজনা পরিশোধ করে ভোগ দখল করে আসছে। কিন্তু দুই বছর পর ২০০৫ সালে তার পাশে ওহাব জুট মিল নামে একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি হয়। এরপর থেকে জমি তারা বিভিন্ন কৌশলে জোর পূর্বক দখল নেওয়ার চেষ্টা করছে। বিগত সরকারের সময়ে ওহাব জুট মিলের মালিক পক্ষ তৎকালীন খুলনা-২ এর এমপি মিজানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসীদের দিয়ে ভুক্তভোগীদের উপর চাপ প্রয়োগ করে। এমনকি বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে জমি তাদের দিয়ে দিতে বলে। তখন তারা বিভিন্ন সময়ে প্রশাসনের দারস্থ হয় এবং তাদের কাছে যাবতীয় কাগজপত্র পেশ করে। এরই সুযোগে ওহাব জুট মিল কর্তৃপক্ষ প্রভাব খাটিয়ে ভূমি অফিসের ভুমি কর্মকর্তার মাধ্যমে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই না করে অবৈধভাবে ওহাব জুট মিলের নামে উক্ত ভুক্তভোগীর ক্রয়ক্রত সম্পত্তি নামপত্তন করে নেয়। নামপত্তন করার পরবর্তীতে ওহাব জুট মিল কর্তৃপক্ষ প্রভাব খাটিয়ে বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন করে দেয়। ভুক্তভোগীরা বিগত ৬ বছর বিদ্যুৎ ছাড়া দুর্বিসহ জীবন যাপন করছেন। বিষয়টি নিয়ে খুলনা জেলা প্রশাসক এর নিকট অভিযোগ করার পরেও তার নিকট থেকে কোনো সাহায্য না পেয়ে ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর
বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আবেদন করেন। বিভাগীয় কমিশনার সিনিয়র সহকারী কমিশনার ভূপালী সরকার এর কাছে পাঠান। তিনি কাগজপত্র দেখে বিভাগীয় কমিশনার শুনানি ধার্য্য করে ২০১৯ সালের ৩ মার্চ ১৫০ ধারায় মিউটেশন দেওয়ার আদেশ দেয়। কিন্তু ভূমি কর্মকর্তা (এসিল্যান্ড) আরিফুল ইসলাম ২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর মামলা নং ১৩৩/১৯ (১৫০ ধারা) এ একটি মিউটেশন দেয়। কানুনগো জাকির স্টাফ দিয়ে বকুল বেগমকে আম ৪ হাজার ৯৩ টাকা পরিশোধ করায়। কিন্তু পরবর্তীতে জানা যায় ভূমি অফিস থেকে দেওয়া মিউটেশনটি প্রকৃত পক্ষে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে সৃষ্টি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে র‌্যাব-৬, কেএমপি’র লবচরা থানা, দুনীতি দমন কমিশনে একাধিক অভিযোগ করা হলেও আজও পর্যন্ত কোন সমাধান হয়নি।
এছাড়া কেএমপি’র ডিসি দক্ষিণ এর নিকট অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুই পক্ষকে ২০২৪ সালের ১৩ জানুয়ারি ১১৮/দক্ষিণ নং স্বারকে এবং লবনচরা থানায় ২০২৩ সালের ৩ সেপ্টেম্বর কেএমপি ডিবি/২৫৬৭নং, র‌্যাব-৬, ২০১৬ সালের ১৯ জানুয়ারি ২১০২ নং, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় থেকে খুলনা জেলা প্রশাসক বরাবর ১৩ নভেম্বরসহ বিভিন্ন মেয়াদে সরকারি দপ্তর গুলোতে নোটিশ প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, উক্ত বিষয়ে সাবেক খুলনা জেলা প্রশাসক হেলাল উদ্দিন এবং মনির তালুকদার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইকবাল হোসেন, সাবেক বিভাগীয় কমিশনার ফিরোজ শাহ, ডিসি রেভিনিউ, আর ডিসি আলামিন কোন প্রকার তাকে সহযোগীতা না করে তাদের ক্ষমতার অপব্যাবহার করে মিউট্রেশনটি যাতে না হয় সে ব্যবস্থা করে। ফলে বিভিন্ন দপ্তরে ভুক্তভোগী বকুল বেগমের সমস্য নিয়ে তাদের কাছে গেলে তাকে বের করে দেয় এবং দুর্ব্যবহার করে। খুলনা ওজোপাডিকো লিঃ এর উপ-সহকারী প্রকৗেশলী চিন্ময় সাহা, সহকারী প্রকৌশলী মোঃ খালিকুল্লাহ খান, নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাহমুদুল হক বিদ্যুতের সংযোগ নিয়েও বিভিন্ন সমস্যা করছে প্রতিনিয়ত। বর্তমানে ভুক্তভোগী অসহায় বকুল বেগম তার পরিবার নিয়ে চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার দিনযাপন করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, দীর্ঘদিন যাবৎ ওহাব জুট মিল কর্তৃপক্ষ হয়রানী করছে। আমরা নিস্তার পাওয়ার জন্য প্রশাসনের এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে গেলে জীবন নাশের হুমকি দিচ্ছে এবং তাদের ছবি তুলে রাখছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করার পরেও কোন প্রতিকার পাইনি। ওহাব জুটমিল ও ভূমি অফিসের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাসহ প্রতিকারের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button