জাতীয় সংবাদ

নোয়াখালীতে সংঘর্ষ: সামছু বাহিনীর প্রধানের লাশ উদ্ধার, মামলা

প্রবাহ রিপোর্ট : নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় চর দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় নিখোঁজ ‘সামছু বাহিনী’র প্রধান মো. সামছুদ্দিনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে ওই সংঘর্ষের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয়জনে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুর্গম জাগলার চর থেকে সামছুদ্দিনের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত সামছুদ্দিন জাহাজমারা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। একই ঘটনায় তার ছোট ছেলে মোবারক হোসেন শিহাবও নিহত হয়েছেন। বাকি নিহতরা হলেন- হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের নিহত সামছুদ্দিনের ছেলে মো. মোবারক হোসেন শিহাব, সুখচর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চর আমান উল্যাহ গ্রামের মহিউদ্দিনের ছেলে আলাউদ্দিন, হাতিয়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম লক্ষ্মীদিয়া মৃত শাহী আলমের ছেলে হক সাব ও মো. কামাল উদ্দিন, সুবর্ণচর উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নের দক্ষিণ চর মজিদ এলাকার জয়নাল আবেদীনের ছেলে আবুল কাশেম। এ ঘটনায় সামছুদ্দিনের ভাই আবুল বাশার বাদি হয়ে ৩০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয়ে আরও ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে হাতিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। বাদী আবুল বাশার বলেন, ভাতিজার ময়নাতদন্ত ও দাফনকাজ সম্পন্ন করতে মামলা করতে কিছুটা দেরি হয়েছে। আমার ভাইয়ের লাশ পাওয়া গেছে। ছেলের কবরের পাশেই তাকে দাফন করা হবে। এ ঘটনায় জড়িত মূল হোতাদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই। সামছুদ্দিনের স্ত্রী মাহফুজা বেগম বলেন, আমার স্বামীকে চরে জমি দেওয়ার কথা বলে মনির মেম্বারসহ কয়েকজন ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে। সেখানেই আমার ছেলেসহ ছয়জনকে যারা হত্যা করেছে আমি তাদের ফাঁসি চাই। সামছুদ্দিনের ছেলে মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, আমাদের ধারণা ওই বাগানে আরও লাশ থাকতে পারে। জমি নিয়ে সেখানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। সেখানে পুলিশ ক্যাম্প করা প্রয়োজন। এই চর নিয়ে রক্ত ঝরলেও আসামিরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। আমরা তাদের বিচার চাই। এর আগে, মঙ্গলবার দুপুরে হাতিয়া উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ড সংলগ্ন জাগলার চরের দখল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এ সময় গোলাগুলিতে ছয়জন নিহত হন এবং অন্তত ১০ জন আহত হন। স্থানীয়রা জানান, জাগলার চরের জমি এখনো সরকারিভাবে কাউকে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়নি। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে গত ৫ আগস্টের পর জাহাজমারা ইউনিয়নের কোপা সামছু বাহিনী প্রতি দাগ ২০ হাজার ৫০০ টাকায় জমি বিক্রি শুরু করে। পরে সুখচর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন বাহিনী ওই জমির দখল নিতে মরিয়া হয়ে আরও বেশি দামে জমি বিক্রি শুরু করলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছে। এর জেরেই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। হাতিয়া থানা পুলিশের ওসি সাইফুল আলম সামছুদ্দিনসহ ছয়জনের লাশ উদ্ধার ও মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, নিখোঁজ সামছুদ্দিনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ছয়জনের লাশ পাওয়া গেছে। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। নতুন জেগে ওঠা চরগুলো নিয়ে সবার নজরদারি প্রয়োজন। হাতিয়া অনেক বড় উপজেলা হলেও এখানে মাত্র একটি থানা রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button