সম্পাদকীয়

সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া জরুরি

স্যালাইনের কৃত্রিম সংকট

শিশুদের প্রাণরক্ষাকারী স্যালাইন ঘিরে রাজশাহীতে সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। অভিভাবকদের জিম্মি করে স্যালাইনের দাম প্রায় ২০ গুণ বাড়িয়েছে কতিপয় ওষুধ ব্যবসায়ী। ঋতু পরিবর্তন হচ্ছে সেই সাথে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন শতাধিক নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগ বালাই নিয়ে ভর্তি হওয়া শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় স্যালাইন মিলছে না। আর এ সুযোগে ওষুধ ব্যবসায়ীরা জনসাধারণের কাছ থেকে স্যালাইনের গলাকাটা দাম নিচ্ছেন। মাত্র ৭২ টাকার স্যালাইন বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়। পরিস্থিতি এমন তৈরি করা হয়েছে যে, কোথাও কোথাও হাজার টাকা দিলেও স্যালাইন মিলছে না। একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে রাজশাহীর লক্ষ্মীপুরে বাজারে শিশুদের জন্য পেডিসল, এপিএন, এনএস, ডিএ, এইচএস, নিউট্রিডেক্স এবং নরমাল স্যালাইনের কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়েছে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের পক্ষ থেকে। ওষুধ ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর কথা স্বীকার করে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দোষ চাপিয়েছেন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর। বলছেন তারা চাহিদা মতো স্যালাইন পাঁচ্ছেন না। যারা বেশি দামে স্যালাইন বিক্রি করছেন তারা অনেক কষ্ট করে পাশের জেলাগুলো থেকে স্যালাইন আনছেন। ডায়াগনস্টিক পট্টির ফার্মেসিগুলো স্যালাইনের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে কয়েকগুণ দাম আদায় করছে। এপিএন স্যালাইনের ৫০০ এমএল ব্যাগের গায়ে লেখা দাম মাত্র ৬৫ দশমিক ২৫ টাকা। আর ১ হাজার এমএলের দাম লেখা ৮৬ দশমিক ৩২ টাকা। ডিএনএস-১০ স্যালাইনের দাম ৮০ টাকার মধ্যে। কিন্তু এসব স্যালাইন ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এমন অস্বাভাবিক দামে স্যালাইন বিক্রি কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। একটি সূত্র বলছে, বাস্তবতা হলো স্যালাইন কয়েক হাত ঘুরে আসছে না। আসছে কোম্পানি থেকে সরাসরি। কিন্তু সংকট তৈরি হচ্ছে দোকান থেকেই। অসাধু ব্যবসায়ীরাই এটি তৈরি করছেন বেশি মুনাফার আশায়। ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলো এখন পর্যন্ত স্যালাইনের দাম বাড়ায়নি। কোনো ওষুধ বা স্যালাইনের দাম বাড়ালে সেটা গায়ে লেখা থাকত। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর পাশাপাশি ব্যবসায়ী নেতাদেরও ওই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া উচিত। তা না হলে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে পুরো ব্যবসায়ী সমাজের সুনাম ক্ষুণœ হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে প্রশাসনকেও এ বিষয়টিকে আমলে নিতে হবে। প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা করতে হবে। যারা এভাবে মানুষকে জিম্মি করে কয়েকগুণ দামে স্যালাইন ক্রেতাদের কিনতে বাধ্য করছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button