হাসপাতালগুলোতে অস্বাস্থ্যকর শৌচাগার, পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি

হাসপাতালের শৌচাগারগুলোর অত্যন্ত অস্বাস্থকর পরিবেশের কারণে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে রোগী ও রোগীর সাথে হাসপাতালে আসা ব্যক্তিদের। রাজধানী ঢাকার কয়েকটি সরকারি হাসপাতালে দেখা যায় এমন চিত্র। এছাড়াও বিভিন্ন যায়গায় অনেক হাসপাতালেও ঠিক একই চিত্র। এতে হাসপাতালের টয়লেট বা শৌচাগারে যেতে অস্বস্তিবোধ করে মানুষ। হাসপাতালে এমন পরিবেশ কারোই কাম্য নয়। নিতান্ত বাধ্য হয়েই মানুষকে হাসপাতালে যেতে হয়, কখনো নিজে অসুস্থ হয়ে, কখনো অসুস্থ স্বজনকে নিয়ে। কিন্তু সেসব হাসপাতালে, বিশেষ করে সরকারি হাসপাতালে যেন দুর্ভোগের অন্ত নেই। গাদাগাদি ভিড়, মেঝেতেও রোগী, দালালদের টানাটানি এবং এ জাতীয় অনেক কিছু ছাপিয়ে যে বিষয়টি অসহনীয় হয়ে ওঠে, তা হলো হাসপাতালের টয়লেট বা শৌচাগার। এক সুত্রে জানা গেছে, ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে প্রতিদিন গড়ে দেড় হাজারের বেশি রোগী আসে। তাদের জন্য কোনো টয়লেটের ব্যবস্থা নেই। জরুরি প্রয়োজনে রোগী ও স্বজনদের যেতে হয় বিভিন্ন ওয়ার্ডের টয়লেটে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিত্রও প্রায় একই রকম। দুটি টয়লেটের একটি সংরক্ষিত থাকে হাসপাতালের কর্মীদের জন্য; অন্যটি এত নোংরা যে দুর্গন্ধে কাছে যাওয়া যায় না। তার পরও বিপদে পড়া মানুষ তাতেই যেতে বাধ্য হয়। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে, এতে শুধু দুর্ভোগ নয়, এসব টয়লেট ব্যবহারকারীদের একটি বড় অংশই ক্ষতিকর নানা ধরনের জীবাণুর সংস্পর্শে আসে। পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ-মিটফোর্ড হাসপাতালের শৌচাগারগুলোতে স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই নেই। শৌচাগারের সর্বত্র বিরাজ করছে নোংরা আর অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ। ফলে প্রতিদিন দুর্ভোগে পড়ছেন এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা কয়েক হাজার রোগী ও তাদের স্বজনরা। হাত-মুখ ধোয়ার বেসিন নোংরা, পানির কল নষ্ট, পরিত্যক্ত হয়ে আছে ইউরিনাল, প্রত্যেকটা টয়লেটের ভেতরের পরিবেশ নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর। ময়লা-আবর্জনা ফেলার পাত্রের অবস্থা আরও শোচনীয়। ফলে এক রোগ সারাতে এসে সঙ্গে নিয়ে যায় আরো অনেক রোগ। সূত্র থেকে আরও জানা যায়, বেশি মানুষের চাপ থাকায় শৌচাগার তাড়াতাড়ি নোংরা হয়ে যায়। কে কখন টয়লেট পরিষ্কার করবে, এমন একটি বিলবোর্ড টানানো থাকলেও সেখানে কারও নাম লেখা নেই। হাসপাতালের শৌচাগারগুলো দিনে অন্তত একবার পরিষ্কার করার কথা থাকলেও পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে দুয়েক দিন পর পর পরিষ্কার করা হয়। এমন পরিবেশ থাকলে মানুষের ভোগান্তী কখনোই কমবে না। তাই প্রত্যেকটি হাসপাতালে নারী ও পুরুষের জন্য পর্যাপ্তসংখ্যক ও ব্যবহার উপযোগী শৌচাগার থাকা অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি এগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে এবং স্বাস্থ্যসম্মত রাখতে হবে।