সম্পাদকীয়

প্রকল্পের নামে আর্থিক খাতে চলছে বিশৃঙ্খলা

সরকার জনগণের জীবনমান ও দেশের সার্বিক পরিস্থিতির উন্নয়নে বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প হাতে নেয়। কিন্তু সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন নিয়ে প্রায়ই বিভিন্ন প্রশ্ন উত্থাপিত হয়। প্রকল্পের নামে দেশের আর্থিক খাতে চলছে বিশৃঙ্খলা। আর এ বিশৃঙ্খলার কারণে ঘটছে অপচয়। সরকারি প্রকল্পগুলো নিয়ে প্রায়ই গণমাধ্যমে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠে আসে। দেখা গেছে, প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজে দীর্ঘসূত্রতা ও ব্যয় বৃদ্ধির নামে লুটপাট করা হচ্ছে। প্রতিটি প্রকল্পই নির্ধারিত বাজেট ও সময়ের মধ্যে শেষ হচ্ছে না। বরং যেকোনো প্রকল্পে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত সরঞ্জাম কেনাকাটা করে বা অতিরিক্ত টাকা তুলে নেওয়াসহ নানা রকমের দুর্নীতি কথা জানা যায়।
প্রকল্প বাস্তবায়নে দফায় দফায় সময় ও ব্যয় বৃদ্ধির ফলে জনগণ শুধু সেবা থেকেই বঞ্চিত হচ্ছে না, তার কষ্টার্জিত করের টাকারও অপচয় হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রতিনিয়ত সংবাদমাধ্যমে বিশদ তথ্য-উপাত্তসহ প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও কোনো প্রতিকার হয় না। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যর্থতার দায়ে সংশ্লিষ্টদের শান্তি হওয়া তোহ দূরে থাক, জবাবদিহির মুখোমুখি ও আনা হয় না। তবে এভাবে চলতে পারেনা। আমরা চাই এর একটি সুষ্ঠ বিহিত হোক। ফলে প্রকল্পের ধীরগতিচর্চা থেকে বের হয়ে আসতে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রকল্পের নামে দুর্নীতি ও অর্থ লুটপাট বন্ধ করা হোক এবং এই প্রকল্পে যারা অর্থ লুটপাটের সঙ্গে জড়িত, তাদের কঠিন শাস্তি দিতে হবে। সরকারের নীতিনির্ধারক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ব্যবস্থপনার দুর্বলতা এবং দক্ষতার অভাবেই এসব সমস্যার উদ্ভব হয়েছে। সেবা নিশ্চিত করতে এসব প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়ন খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। কিন্তু তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না।
বস্তুত উন্নয়ন বরাদ্দ ব্যয় বাস্তবায়নের নামে দেশে দুর্নীতি ও লুটপাট বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন কিছু প্রকল্প রয়েছে- যাতে শতভাগ অর্থ ব্যয় করা হলেও কাজ সম্পূর্ণ করা হয়নি। একশ্রেণির সুবিধাভোগী কর্মকর্তা প্রকল্প বাস্তবায়নের আড়ালে নিজেদের ‘সুবিধা’ ঠিকই হাসিল করে নিচ্ছেন। এ ধরনের কর্মকা- শক্ত হাতে দমন করা প্রয়োজন। আবার কৃচ্ছ্রসাধনের নামে ব্যয় কমাতে গিয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ কর্মকা- যাতে ব্যাহত না হয়, সেদিকেও সরকারকে খেয়াল রাখতে হবে। এভাবে উন্নয়নের নামে রাষ্ট্রের সম্পদ বা জনগণের অর্থ অপচয়ের কারণে যেমন ব্যয় বাড়ছে, তেমনি প্রকল্পের প্রায়োগিক যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। এ অবস্থার অবসান হওয়া জরুরি। তাই প্রকল্প বাস্তবায়নে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা ও সক্ষমতা অর্জনের ওপর জোর দিতে হবে। তবেই সুফল পাওয়া যাবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button