সম্পাদকীয়

সাধ্যমতো শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানো দরকার

প্রকৃতির পালাবদলে এসেছে শীতের মৌসুম। ডিসেম্বরের শুরু থেকে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হচ্ছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা আরও কমে শীত বাড়বে। শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে শীতের পোশাক কিনতে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। কিন্তু কাপড়ের বাজারে বিরাজ করছে দামের ‘গরম’। ক্রেতাদের অভিযোগ- এবার শীত পোশাকের দাম আগের তুলনায় বেশি। অপরদিকে বিক্রেতাদের মন্ত্রব্য, পাইকারি বাজারে তাদেরকে বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয়েছে। ফলে এবছর আগের বছরগুলোর তুলনায় দামটাও একটু বেশি। তারপরেও সব মানুষের ভিড় যেন এসে মিশেছে শীতের কাপড়ের দোকানে। বিত্তবানেরা অভিজাত শপিংমল বা বিপণিবিতানে ছুটলেও নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ ছুটছেন ফুটপাতের দোকানগুলোয়। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধদের পোশাক। জীবনযাত্রা কষ্টকর হয়ে পড়েছে দিনমজুর, ভ্যানচালক, ইজিবাইক চালক, পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিকসহ সাধারণ কর্মজীবী এবং ছিন্নমূল মানুষের। ধীরে ধীরে শীত বাড়ায় কাজে যোগ দিতে বিপাকে পড়ছেন খেটে খাওয়া মানুষ। কাজে যেতে না পারায় পরিবার-পরিজন নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় তাদের। শুধু রাজধানী নয়, প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে বিভিন্ন জেলার চরের হতদরিদ্রদের কষ্ট হচ্ছে আরও বেশি। এই শীত নিবারণের জন্য প্রয়োজন হয় উষ্ণতার পোশাক। কিন্তু, গরিবের ভাগ্যে জোটে না সেই পোশাক। অথচ বিত্তবানদের গেল বছরের শীতের পোশাক থাকা সত্ত্বেও এই বছর হাজারখানেক টাকা দিয়ে শীতবস্ত্র কেনা হয়ে গেছে। সমাজের অসহায় খেটে খাওয়া মানুষগুলোর প্রতি কারো কোনো খেয়াল নেই। অথচ তারা তাকিয়ে থাকেন ধনীদের সহায়তার দিকে, মানবতার দিকে।
সমাজের বিত্তবান ও মানবিকবোধসম্পন্ন ব্যক্তিরা যদি দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের পাশে না দাঁড়ান, তা হলে মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়বে। এ ক্ষেত্রে সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্ববোধ থেকে এগিয়ে আসতে হবে। শীতার্ত মানুষের প্রতি সমাজের সামর্থ্যবান ও বিত্তশালীদের সাহায্য ও সহানুভূতির হাত সম্প্রসারিত করা প্রয়োজন। পর্যাপ্ত পরিমাণে শীতবস্ত্র সরবরাহ করে সাধ্যমতো শীতার্তদের পাশে এসে দাঁড়ানো দরকার। সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের প্রতি একটু মানবতার হাত বাড়ানো হলে তাদের অশান্তি একটু হলেও দূর হবে, পাশাপাশি তাদের মুখে হাসি ফোটবে। তাই আমাদের সবার উচিত সরকারের পাশাপাশি হতদরিদ্র মানুষগুলোর শীতবস্ত্র ও খাবার সংকট দূর করা। নিঃস্বার্থভাবে বিপদগ্রস্ত মানুষের সাহায্য ও সেবা করা আমাদের মানবধর্ম।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button