সম্পাদকীয়

সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধান করুন

চামড়া শিল্প

চামড়া শিল্প বাংলাদেশে বহুতল গ্রাম্য এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে একটি প্রমুখ উদ্যোগ হিসেবে পরিচিত। এটি প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার করে কারখানাগুলোতে চামড়া ও চামড়া সাহিত্যিক পণ্য তৈরি করে। চামড়া শিল্পের মাধ্যমে নির্মিত পণ্যগুলো অভ্যন্তরীণ ও বিদেশে রপ্তানি হয়ে থাকে, যা দেশের মুদ্রায় প্রবাহিত করে এবং বাণিজ্যিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের চামড়া রপ্তানির বাজার প্রতিবছর শতকরা ১০ থেকে ১৫ ভাগ হারে বাড়ছে এবং টাকার অঙ্কে যেটা বছরে গড়ে ৩০ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ও প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় তৎকালীন চামড়া শিল্পের গতি কিছুটা মন্থর হলেও বর্তমানে সেটা কেটে গেছে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরেও ঊর্ধ্বমুখী ধারায় চামড়া ও চামড়াজাত দ্রব্য রপ্তানি। সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে বার্ষিক রপ্তানি আয় ১ বিলিয়ন থেকে বাড়িয়ে ১০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার চেষ্টা করছে। ঈদুল আজহা হচ্ছে দেশের চামড়া ব্যবসায়ীদের কাঁচা চামড়া সংগ্রহের প্রধান মৌসুম। ঈদুল আজহায় এত বেশি পশু কোরবানি হয়, যার থেকে প্রাপ্ত চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণে হিমশিম খায় ট্যানারি শিল্পগুলো। ট্যানারি শিল্পগুলোর দাবি, ঈদুল আজহায় খুব অল্প সময়ের মধ্যে প্রাপ্ত অধিক চামড়ার সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ বা প্রক্রিয়াজাতকরণে তাদের উপর অনেক বেশি চাপ পড়ে যায়। ট্যানারিগুলোর ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বহুগুণ বেশি চামড়া আসায় সেগুলো সংরক্ষণে যথোপযুক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করা দুরহ হয়ে পড়ে। যদি এই পরিমাণ চামড়া পুরো বছর ক্রমান্বয়ে পাওয়া যেত তাহলে সেগুলোর সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের পর্যাপ্ত সুযোগ পাওয়া যেত ও চামড়া শিল্পকে আরও বেশি মজবুত করা যেত। অল্প সময়ের ব্যবধানে প্রাপ্ত অধিক চামড়া সকল সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনাকে একটু হলেও নড়বড়ে করে দেয়, যার প্রভাব গিয়ে পড়ে মাঠপর্যায়ের চামড়া ব্যবসায়ীদের উপর। তারা কোনো ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই খালি পায়ে এবং খালি হাতে এই প্রক্রিয়াজাতের কাজ করে। ফলে চর্মরোগ, ফুসফুসজনিত নানা ধরনের জটিলতা, ক্যানসারসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হয় এসব শ্রমিক, যা পরবর্তীতে তাদেরকে অকালমৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। চামড়া শিল্পের উন্নয়নের পাশাপাশি ট্যানারি থেকে উৎপন্ন বর্জ্যরে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার প্রতি অধিক গুরুত্ব আরোপ করা প্রয়োজন এবং চামড়া শিল্পের জন্য দক্ষ জনশক্তি প্রয়োজন, কেননা আমাদের দেশে এ ধরনের দক্ষ জনশক্তির বেশ অভাব রয়েছে। তবে পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখার উদ্দেশ্যে লোকালয় থেকে দূরে চামড়া শিল্পের জন্য পৃথক শিল্পনগরী স্থাপন করা দরকার এবং এসব চামড়া শিল্পনগরীর নির্গত বর্জ্য থেকে পরিবেশ দূষণরোধ করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে পাশাপাশি কাঁচা চামড়া গুদামজাতকরণের জন্য যে পরিমাণ আড়ত দরকার তার ব্যবস্থা করতে হবে। বিদ্যমান এসকল নানাবিধ সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button