সরকার ও প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে

বেড়েই চলেছে মাদকের ভয়াবহতা
উন্নত বিশ্বের বর্তমান সমাজব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা এবং আতঙ্কের নাম হচ্ছে মাদক। আমাদের দেশে নিষিদ্ধ মাদকদ্রব্যের বিস্তার উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। শহর থেকে গ্রামাঞ্চল- সর্বত্রই এখন হাতের নাগালে পাওয়া যায় এসব। মাদক সেবনের ফলে একটি প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। সীমান্ত-সংলগ্ন জেলা দিয়ে পাশের দেশগুলো থেকে ঢুকছে ভয়ংকর সব মাদক। কোনোভাবেই রোধ করা যাচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঝে মাঝে বিশেষ অভিযান চালিয়ে মাদকের কিছু ছোট কারবারি বা বহনকারি গ্রেপ্তার করলেও মূল হোতাদের ছুঁতে পারছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই ব্যর্থতার কারণে মাদকের বিস্তার থামানো যাচ্ছে না। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে। অনেক সম্ভাবনাময় তরুণ-তরুণী হচ্ছে বিপথগামী। মাদক থেকে পরিত্রাণের আশায় ১৯৯০ সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণীত হয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও মাদকাসক্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনকল্পে ওই আইন ১৯৯০ সালের ১ ফেব্র¤œয়ারি প্রণয়ন করা হয়। এরপরেও অবস্থার উন্নতি হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্যও মাদক কারবারে জড়িত। নেপথ্যে রাজনৈতিক শক্তিও জড়িত বলে অভিযোগ আছে। ফলে যে করেই হোক মাদক নির্মূলে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পাশাপাশি অভিভাবকের নজরদারি ও জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। সরকার ও প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে। গড়ে তুলতে হবে সামাজিক প্রতিরোধ। মাদক মামলার বিচার দ্রুত সম্পন্ন করে অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সরকারকে এ ব্যাপারে তৎপর হতে হবে, যাতে কোনোভাবেই দেশে মাদক ঢুকতে না পারে। মাদকের সরবরাহ বন্ধ করতে সীমান্তে কঠোর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কায়েম করা, মাদক কারবারিদের শাস্তি নিশ্চিত করা এবং মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়াতে গণমাধ্যমের বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে। মাদকাসক্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য সব প্রতিষ্ঠানকে একযোগে কাজ করতে হবে। কার্যকর পদক্ষেপে সুফল পাওয়ার পর তা যেন বন্ধ না হয় সে ব্যবস্থাও করতে হবে। তবেই মাদক মুক্ত দেশ গড়া সম্ভব হবে। নিরবচ্ছিন্নভাবে এই ধ্বংসলীলা চলতে দিলে সবুজ সুন্দর ও বৈচিত্র্যময় পরিবেশ এবং সৃষ্টির সেরা মানুষের এ সুন্দর পৃথিবী একদিন নষ্ট-বিলীন হয়ে যাবে। তাই মাদক নিয়ন্ত্রণে সময় থাকতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করাই সঠিক সিদ্ধান্ত হবে।