সম্পাদকীয়

বাল্কহেড চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে হবে

নৌপথেও বাড়ছে দুর্ঘটনা

দেশে সড়কপথে দুর্ঘটনা নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন সড়কে ঝরছে তাজা প্রাণ। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে নৌপথের দুর্ঘটনাও। কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নদীপথে বালুবাহী অবৈধ বাল্কহেডের অবাধ চলাচল করছে। সম্প্রতি মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়িতে বাল্কহেডের ধাক্কায় খেয়া পারাপারে ব্যবহৃত যাত্রীবাহী ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে। রাতে এ ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধের নির্দেশনা থাকলেও তা মানতে দেখা যাচ্ছে না। অভিযোগ আছে, কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে এসব জলযান নদীপথ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। জানা যায়, অধিকাংশ বাল্কহেডে সিগন্যাল বাতি থাকে না; আবার বালি বহনের কারণে বেশিরভাগই ডুবে থাকে পানিতে। অন্য নৌযানের চালক দেখতে না পাওয়ায় ঘটে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনা। সাধারণত নদী থেকে রাতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের পর তা পরিবহনে বাল্কহেডগুলো ব্যবহার করা হয়ে থাকে। গোপনে ও দ্রুত পরিবহণের স্বার্থে চালকরা থাকে বেপরোয়া। রাতে এসব বাল্কহেড চলাচল বন্ধে মাঝেমাঝে লোকদেখানো অভিযান চালানো ছাড়া প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করে। এ কারণে একের পর এক ঘটছে দুর্ঘটনা। আইন না মানা এবং দুর্ঘটনার পর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার ব্যাপারে উদাসীনতাও বাল্কহেড কর্তৃক নৌদুর্ঘটনা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। আবার দুর্ঘটনার পর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অপরাধীদের উপযুক্ত বিচার হয় না। উল্লেখ্য, এর আগে বাল্কহেডের কারণে অসংখ্য দুর্ঘটনা ঘটলেও কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। ফলে বাল্কহেড চালকরা বেপরোয়া চালনায় নিরুৎসাহিত হয় না। বাল্কহেডের অবাধ চলাচলে রাশ টানতে তাই কর্তৃপক্ষের উদ্যোগী হওয়ার বিকল্প নেই। এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ ও নৌ-পুলিশকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি অবৈধ বাল্কহেড শনাক্ত করে এগুলোকে আইনের আওতায় আনতে হবে। দুর্ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি প্রয়োগের মাধ্যমে অন্যদের কাছে সতর্কবার্তা পৌঁছে দিতে হবে। যাত্রীবাহী নৌযান চলাচলের রুটে রাতে বাল্কহেড-কার্গোসহ ঝুঁকিপূর্ণ নৌযান চলাচল করছে কিনা, তা সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখতে হবে। তা না হলে নৌপথে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যাবে। মনে রাখতে হবে, নৌপথ নিরাপদ না হলে একদিকে যেমন দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হবে না, তেমনি একের পর এক দুর্ঘটনা নদীপথ ব্যবহারে যাত্রীদের ক্রমেই নিরুৎসাহিত করবে। অবৈধ বাল্কহেডের চলাচল এবং সন্ধ্যায় বৈধগুলোর চলাচল পুরোপুরি বন্ধের নির্দেশনা বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। নৌপথকে নিরাপদ রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাই।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button