সম্পাদকীয়

প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

দেশে যে হারে শিক্ষিত বাড়ছে, সে হারে কর্মক্ষেত্র বাড়ছে না। ফলে অনেকেই বেকার থেকে যাচ্ছে। চাকরি যেন ‘সোনার হরিণ’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে পড়ালেখা শেষ হলেও জুটছে না কাঙ্খিত চাকরি। শিক্ষিত বেকাররা নিজ জেলায় ব্যর্থ হয়ে চাকরির সন্ধানে ভিড় করছেন রাজধানীতে। এ সুযোগে এক শ্রেণীর প্রতারক চাকরি নামে প্রতারণার ফাঁদ পেতে বসে আছে। এই ফাঁদে পড়ে অনেকেই প্রতারিত হচ্ছেন। এতে অনেকে চাকরি পাওয়ার আসায় সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। কিন্তু মিলছে না কাঙ্খিত সোনার হরিণটি। আবার এমন অনেককে পাওয়া যাবে, যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতায় ঘাটতি আছে, কিন্তু তাদেরও চাকরি প্রয়োজন। এই সুযোগটিই কাজে লাগায় সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্র। সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্র দেশজুড়ে প্রতারণার জাল বিস্তার করেছে। বেকার তরুণ জনগোষ্ঠীকে টার্গেট করে গড়ে উঠছে প্রতারণার অনেক প্রতিষ্ঠান। অল্প বিনিয়োগে ব্যবসা, চাকরি লাভ থেকে শুরু করে নানাভাবে প্রতারণা করা হচ্ছে। চাকরি দেওয়ার নামে জামানত নিয়ে সটকে পড়ছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার হিসেবে পরিচয় দেওয়া প্রতারকরা। গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিতে চাকরি দেওয়ার নামে বিদেশে নারী পাচার, নারীদের পতিতালয়ে বিক্রি করে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। দীর্ঘদিন থেকেই সংঘবদ্ধ একাধিক প্রতারকচক্র রাজধানীসহ সারা দেশে সক্রিয়। তারা পত্রিকায় চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে বেকার তরুণদের আকৃষ্ট করে। অফিস এমনভাবে সাজানো হয়, যাতে নতুন কেউ সেখানে ঢুকে প্রতারণার কলাকৌশল কিছুুই বুঝতে না পারে। এরপর লোভনীয় বেতনে চাকরির অফার দেওয়া হয়। শর্ত হিসেবে নেওয়া হয় জামানত। জামানতের টাকা দেওয়ার কিছুদিন পর সংশ্লিষ্ট অফিস ও কর্মকর্তাদের কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না। পত্রপত্রিকায় বিজ্ঞাপনের বাইরে বিভিন্ন পরিবহনে, রাস্তার দেয়ালে ও বিদ্যুতের খুঁটিতে লোভনীয় বেতনের চাকরির বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। এসব বিজ্ঞাপন দেখে সহজেই আকৃষ্ট হয় বেকার শিক্ষিত তরুণ-তরুনীরা। তথ্যপ্রমাণের অভাবে প্রতারক চক্রকে চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছে না। এই সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এই চক্রের সঙ্গে জড়িতদেরও খুঁজে বের করে আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে। এর সঙ্গে প্রয়োজন আমাদের সচেতনতা। চাকরীর বিজ্ঞাপন দেখে লোভ করা যাবে না। তাদের বিষয়ে ভালো করে খোজ খবর নিতে হবে। এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারলে ভবিষ্যতে প্রতারিতের সংখ্যা বাড়বে। আমি মনে করি, এখানে সমাজসেবা অধিদপ্তরের করণীয় আছে। সরকারি সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় এ প্রতারক চক্রকে শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button