সম্পাদকীয়

পানিশূন্য তিস্তা, নদী বাঁচাতে ব্যবস্থা নিন

শুকিয়ে এসেছে তিস্তা নদী। শুষ্ক মৌসুম শুরুর আগেই এ সময়ের প্রমত্ত তিস্তা নদী পানিশূন্য হয়ে পড়ছে। বিশাল নদীর বুকজুড়ে বালু চরে এখন সবুজের হাতছানি। চারদিকে চলছে মৌসুমি সবজির চাষ। এক মাস আগেও তিস্তায় ছিল প্রচুর পানি। বর্তমানে পাল্টে গেছে তিস্তার পুরো চিত্র, নদী যেন মরে গেছে। যদিও তিস্তা নদীর এ দশার কথা নতুন নয়। নদীতে বড় বড় বালুর স্তূপ পড়ে মূল নদী গতিপথ হারাতে বসেছে। অন্তিম দশায় পতিত হয়ে নালা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তার পানি। বিশাল তিস্তার বুকে হাঁটু পানি পাওয়াও দুষ্কর। পানি কম থাকায় ব্যারাজের সব গেট বন্ধ রাখা হয়েছে। এ কারণে উজানে পানিশূন্যতা দেখা দিয়েছে। তিস্তার বুকে কৃষক চাষ করছেন আলু, ভুট্টা, রসুন, গম, মিষ্টি কুমড়া, গাঁজর, পিঁয়াজসহ ১০ ধরনের ফসল। বানের পানিতে সম্বল হারানো মানুষগুলো এখন ঘুরে দাঁড়াতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ফসল উৎপাদনে। অন্যদিকে তিস্তায় এ সময় যে পরিমাণ পানি থাকার কথা তা না থাকায় নদীটি একেবারে মরতে বসেছে। যেখানে এই নদী রক্ষা হলেই বাঁচবে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল। কেননা তিস্তা অববাহিকার কোটি মানুষের জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রে এ নদীর অন্য অবদান রয়েছে। কিন্তু উজানে একতরফা পানি প্রত্যাহারে তিস্তা নদী অস্তিত্ব হারাতে চলেছে। এ নদীর সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য নদী ও জলাশয়ের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়ছে। এ নদীর সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য নদী ও জলাশয়ের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়ছে। নেই নৌকা বা ট্রলার, মাঝি-মাল্লাদের হাঁকডাক। নেই জেলেদের মাছ ধরার ব্যস্ততা। সব মিলিয়ে তিস্তা পাড়ের জীবন-জীবিকা থমকে দাঁড়িয়েছে নিরাশার বালুচরে। সরকারের নদী শাসনের পরিকল্পিত পরিকল্পনার অভাবে নদীর মাঝখান উঁচু হয়ে পানি দুই পাড়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তাই সরকারকে আহ্বান করবো, তিস্তা নদীকে বাঁচাতে দ্রুত পদক্ষেপ নিন। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে তিস্তা খনন করা অতি জরুরি হয়ে পড়েছে। কেননা, তিস্তা খনন না হলে বাংলাদেশ অংশের ১৬৫ কিলোমিটার জুড়ে নদীর দুই পারে বাস করা কোটি মানুষের দুর্ভোগের শেষ থাকবে না। সাধারণ মানুষদের দুর্ভোগ থেকে মুক্ত করতে হলেও তিস্তা নদীকে বাঁচিয়ে তুলতে হবে। মাত্র দুই যুগ আগেও তিস্তা নদী ছিল দেশের অন্যতম প্রাণবন্ত নদী।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button