সচেতনতার বিকল্প নেই

নিপাহ ভাইরাসে মৃত্যু
নিপাহ একটি ভাইরাসজনিত মারাত্মক প্রাণঘাতী রোগ। সাধারণত শীতকালে নিপাহ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। বর্তমানে নিপাহ ভাইরাসের বিস্তার উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌছে গেছে। বাদুড়ের লালা বা মলমূত্র দ্বারা দূষিত হওয়া খেজুর বা তালের রস ও তাড়ি থেকে নিপাহ ভাইরাস মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়ে থাকে। এ ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের মৃত্যুর হার বেশি। বর্তমান সময়ে বড়দের পাশাপাশি শিশু-কিশোরেরাও নিপাহ ভাইরাসে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এ বছর নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত ১৪, ১০ জনই মারা গেছেন। চলতি এ বছর মৃত্যু আট বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ২০০১ সালে দেশে প্রথম নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণের প্রমাণ মেলে। এখন পর্যন্ত মোট ৩৩৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এ পর্যন্ত ২৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশের ৩৪টি জেলায় এই ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছে। ২২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ রোগী শনাক্ত ও মৃত্যু হয় ২০০৪ সালে। সে বছর ৬৭ রোগী শনাক্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ৫০ জন। শতকরা হিসাবে যা মোট রোগীর ৭১ শতাংশ। এখন এ ভাইরাস ছড়ানোর শুরুর সময়। তাই প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মুক্ত থাকতে আমাদের সবাইকে সাবধান থাকতে হবে। একমাত্র প্রতিরোধই হচ্ছে এই রোগ থেকে বাঁচার উপায়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ অনলাইনে ব্যাপক হারে খেজুরের কাঁচা রস বিক্রি বেড়ে যাওয়া। মৃত্যুর আশঙ্কা থাকার পরও নিপাহ ভাইরাস নিয়ে জনসচেতনতা প্রায় নেই বললেই চলে। বর্তমানে, নিপাহ শারীরিক তরলের সংস্পর্শে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু ভাইরাসটির চরিত্র সঠিকভাবে এখনো বোঝা যায় না এবং এর কোনো অনুমোদিত ভ্যাকসিন বা চিকিৎসা নেই। এজন্য একযোগে প্রচার-প্রচারণা বাড়াতে হবে। স্কুল পর্যায়ে এই ভাইরাসের বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করা জরুরি। মারাত্মক প্রাণঘাতী নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকায় মানুষকে খেজুরের কাঁচা রস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে, সেই সঙ্গে বিক্রেতাদেরও খেজুরের কাঁচা রস বিক্রি বন্ধ করা জরুরি। এবং সংক্রমণমুক্ত থাকতে সবাইকে সতর্ক হতে হবে। আমরা করোনার মতো ভয়াবহ ভাইরাস প্রতিরোধে অনেকটাই সফল হয়েছি। তাই নিপাহ ভাইরাস প্রতিরোধেও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, একযোগে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে।