সম্পাদকীয়

শক্ত হাতে দমন করতে হবে

বেপরোয়া চাঁদাবাজি

চাঁদবাজির অভিযোগ নতুন নয়। গনমাধ্যমে প্রায়ই উঠে আসে চাঁদাবাজির অভিযোগ। রাজধানীসহ সারা দেশে সড়ক থেকে শুরু করে বাজার ব্যবস্থা, ফুটপাতের হকার মার্কেট ও সর্বত্র ক্ষেত্রেই চাঁদাবাজি, অনিয়ম-দুর্নীতি ও বিশৃঙ্খলা তীব্র আকার ধারণ করেছে। চাঁদাবাজি বন্ধে অতীতে কখনো কখনো প্রশাসনকে তৎপর হতে দেখা গেলেও পরোপুরি চাঁদাবাজি বন্ধ করা যায়নি। দেশের প্রায় সর্বত্রই চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটছে। বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে মেতে উঠছে চক্রগুলো। দেশে চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও টেন্ডারবাজির জন্য দায়ী মূলত রাজনীতির বর্তমান ধারা। লেজুড়বৃত্তির রাজনীতির কারণে কোনো দল ক্ষমতাসীন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের সমর্থিত বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের দৌরাত্ম্য মারাত্মকভাবে বেড়ে যায়। বলা বাহুল্য, এ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা হয় অস্ত্র ও পেশিশক্তি দ্বারা। এর ফলে আইনের শাসন হয় প্রশ্নবিদ্ধ। চাঁদাবাজির মাশুল শেষ পর্যন্ত দিতে হয় ছোট-বড় ব্যবসায়ী ও জনসাধারণকেই। তাদেরকে গুণতে হয় বাড়তি টাকা। পণ্যদ্রব্যের দামও এ কারণে বেড়ে যায়। এই চাঁদাবাজি নিয়ে অসংখ্যবার গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। চাঁদাবাজি বন্ধ করার কার্যকর কোন উদ্যোগ চোখে পড়ে না। বরং চাঁদাবাজির মাত্রা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। চাঁদাবাজরা এতই বেপরোয়া যে, বর্তমানে চলমান দুর্নীতিবিরোধী শুদ্ধি অভিযানের মাঝেও থেমে নেই তাদের চাঁদাবাজি। চাঁদাবাজিকেন্দ্রিক প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময় খুনোখুনির ঘটনাও ঘটে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে খোদ প্রশাসনের একশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধেই চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া যায়। যেমন সরষের ভেতরেই লুকিয়ে আছে ভূত। চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে যাদের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা, তাদের যোগসাজশেই বছরের পর বছর নির্বিঘেœ প্রকাশ্যেই চলছে এই অপকর্ম। চাঁদাবাজির এই দুষ্টচক্র ভাঙা জরুরি। দেশকে উন্নত ও দেশের শৃঙ্খলা ফেরাতে হলে চাঁদাবাজি অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। দ্রুত সরকার ও প্রশাসনকে চাঁদাবাজির অভিযোগ আমলে নিতে হবে। যারা চাঁদা আদায় করছে তাদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ছাড়া এই চাঁদাবাজি বন্ধ হবে না। প্রধানমন্ত্রী যদি বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেন, তাহলে পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে পারে। চাঁদাবাজি, অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ এবং শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য সরকার দ্রুত প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ নেবে বলে আমরা আশাবাদী।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button