জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে
এইডস রোগীর সংখ্যা বাড়ছে
এইডস বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যবিষয়ক সংকটগুলোর একটি। অথচ গত কয়েক বছরে স্বাস্থ্যঝুঁকিবিষয়ক আলোচনায় করোনা বেশি গুরুত্ব পাওয়ায় এইডসসহ অনেক জটিল রোগ তেমন গুরুত্ব পায়নি। অথচ দেশে এ বছর রেকর্ড এইডস রোগীর মৃত্যু ও শনাক্ত হয়েছে। দেশে প্রথম এইচআইভি পজিটিভ ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া যায় ১৯৮৯ সালে। তার পর থেকে প্রতিবছর শনাক্তের সংখ্যা বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, দেশে এ পর্যন্ত এইচআইভি পজিটিভ বা ভাইরাস সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা ১৫ হাজার ১৪৩। আর এইডস রোগীর সংখ্যা ১০ হাজার ৯৮৪। তাদের মধ্যে মারা গেছে দুই হাজার ৮৬ জন। গত এক বছরে যারা এইচআইভি পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে, তাদের মধ্যে ১৫৮ জন রোহিঙ্গা এবং এক হাজার ১১৮ জন দেশের নাগরিক। শনাক্তদের মধ্যে ৮৫০ জন পুরুষ, ২৮৭ জন নারী এবং ৯ জন তৃতীয় লিঙ্গের। ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত দেশে এক বছরে এইচআইভি শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এক হাজার ২৭৬। দেশে এইচআইভি/এইডসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর এই সংখ্যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এতে করে বুঝা যায়, এইচআইভি নামক ভাইরাসটির সংক্রমণ এভাবে বাড়লেও এটি নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে গৃহীত ব্যবস্থা ও সচেতনতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। তাই দেশে এইচআইভি/এইডস ব্যবস্থাপনায় সুযোগ-সুবিধা আরো বাড়ানো দরকার এবং এইচআইভি/এইডসে সংক্রমিতদের শনাক্ত করার জন্য দেশব্যাপী উদ্যোগ আরো বাড়াতে হবে। এইডস সম্পর্কে মানুষের অনেক ভুল ধারণাও রয়েছে। অনেকেই মনে করে, এইডস খুব ছোঁয়াচে। ফলে এইডসে আক্রান্ত ব্যাক্তিকে মানুষ এড়িয়ে চলে।এর ফলে কেউ এই ভাইরাসে সংক্রমিত হলে ভয় পেয়ে যায় এবং সংক্রমণ গোপন করার চেষ্টা করে। এতেও সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি থেকে যায়। দেশের সব জেলায় এইচআইভি/এইডস পরীক্ষার সুযোগও নেই। অনেকে সংক্রমিত হয়েও চিকিৎসা নিচ্ছেন না। এতে এইচআইভি/এইডসের ঝুঁকি বাড়ছে। এইচআইভি সংক্রমণ ঠেকাতে শনাক্তকরণ প্রচেষ্টা বাড়ানোর পাশাপাশি আক্রান্তদের চিকিৎসায় আরো বেশি উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। ‘বাংলাদেশ অনেক রোগ নির্মূল বা নিয়ন্ত্রণে সফল হলেও এইডস নিয়ন্ত্রণে থমকে আছে। এইডস নির্মূলে রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসায় আরো বেশি জোর দিতে হবে। পাশাপাশি রোগটি যেন না ছড়ায় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’ এইডস নির্মূলে রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসায় আরও বেশি জোর দিত হবে।