সম্পাদকীয়

প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন

ঊর্ধ্বমুখী আলুর বাজার

এবার আলুর বাজারও ‘অনিয়ন্ত্রিত’ হওয়ার শঙ্কা দেখা দিচ্ছে। ইতোমধ্যে আলুর দাম রেকর্ড ছাড়িয়েছে। অন্যান্য বছর এ সময়ে সবজির বাজারে আলুর দাম কম থাকলেও এবছর তা নাগালের বাইরে। খুচরা বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে। ১৫ ডিসেম্বর থেকে ভারতীয় আলু আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ও হিমাগারগুলোয় থাকা পুরনো আলুর মজুদ ফুরিয়ে যাওয়ায় এ মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বাজারে দেশীয় নতুন আলু ওঠার পরেও দাম বাড়তি থাকায় ক্ষোভ দেখা যায় ক্রেতাদের মাঝে। যদিও সব দোকানেই উঠেছে দেশীয় সাদা ও লাল বর্ণের নতুন আলু। এ দুই জাতের আলু দুদিন আগেও পাইকারি পর্যায়ে বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৫০ টাকা দরে। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০/৮০ টাকায়। এবছর হিমাগারে পর্যাপ্ত আলু থাকার পরও ঠিক কি কারণে দাম বাড়ছে, তার কারণ খুজতে গেলে যানা যায় আলুর বাড়তি চাহিদার কথা বা সিন্ডিকেটের থাবা। এতে করে এদিকে ঊর্ধ্বমুখী এ বাজারে আলুর বাড়তি দাম নিম্নআয়ের পরিবারগুলোতে বাড়তি চাপ তৈরি করেছে। বিশেষ করে প্রয়োজনীয় এ পণ্যের চড়া দাম প্রভাব ফেলেছে মধ্যবিত্তদের দৈনন্দিন খরচে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২২-২৩ অর্থবছর দেশে ১ কোটি ১১ লাখ টন আলু উৎপাদন হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে বেশি। ওই বছর দেশে আলু উৎপাদন হয়েছিল ১ কোটি ১০ লাখ টন। এ উৎপাদন দেশে আলুর চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি। দেশে বার্ষিক আলুর চাহিদা ৮৫ থেকে সর্বোচ্চ ৯০ লাখ টন। ফলে আলুর দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। গত বছরের এই সময়ে আলুর দাম ছিল প্রতি কেজি ১৬ থেকে ২২ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে আলুর দাম ২২ টাকা থেকে ৮০ টাকায় ওঠার কী কারণ রয়েছে, তা যুক্তি সম্মত না হওয়াতে এসব থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে সিন্ডিকেট কেবল কয়েকটি আমদানি করা খাদ্যপণ্যে নয়, দেশে উৎপাদিত খাদ্যপণ্যেও এর দৌরাত্ম্য লক্ষ করছি সমানভাবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বার বার হোঁছট খেলেও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেনা সরকার। তাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। আশা করি, বিলম্ব হলেও কৃষক ও ভোক্তাদের উদ্বেগটি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে এবং বাজারে মনিটরিং বাড়াবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button